![](https://abhijug.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
হুশিয়ার,সাবধান।
মোঃ আবদুল গনি ভূঁইয়া।
নিকষ কালো অন্ধকার,
সঙ্গিন হাতে পাহারাদার।
হেলিকপ্টারের ছাউনিটার,
সম্মুখে দাড়িয়ে একা।
নির্জন জনমানবহীন নিঃসঙ্গ,
নিঝুম অন্ধকার রাত।
বাতাসে শাঁই শাঁই শব্দ,
বাবলা গাছের শুকনো পাতার
ঝরে পড়া মর্মর শব্দ।
মাঝে মাঝে ইঁদুর আর কুনোব্যাঙের
দৌড়ঝাঁপে,এক বিদকুটে আওয়াজে
প্রহরী কিছুটা ভীত।
আকাশে চাঁদটাও মেঘডাকা,
বৃষ্টি পড়ার শীতল বাতাস বইছে;
তারার মিটমিট আলোর ঝলকানিতে
চারিপাশ ভালোই দেখাচ্ছে।
হঠাৎ,আকাশে একটুকরো আগুনের ফুল্কি
আচমকা উড়ে চলতে দেখে,
প্রহরীর নাড়ীতে টান লাগে।
তবে,সে জানে ওগুলো আকাশ থেকে খসে পড়া উল্কাপিণ্ডের ছাঁইভষ্ম।
প্রহরীরা ওসব দেখে অনেকটা অভ্যস্ত।
নিঝুম নিশি,ঝিঁঝিঁ পোকার কর্কশ শব্দ।
দুর জলাশয়ে ব্যাঙের ঘ্যাঙ ঘ্যাঙর,
একটানা ডাকাডাকি কতোটা যে বিরক্তিকর;
প্রহরী ছাড়া কেউ জানে না।
প্রহরী হাঁকাচ্ছে,
“বস্তিঅলা জাগো হুশিয়ার সাবধান”।
হঠাৎ,একটা শিয়াল কুকুরের পিছনে দৌড়াচ্ছে। কুকুরটা প্রাণপণে বাঁচার জন্য,
প্রচন্ড গতিতে ছুটে চলছে।
কুকুর মানুষের পোষমানা প্রাণী তাই,
প্রহরীকে দেখেই পাশে এসে থেমে গেলো।
মনে হলো কুকুরটা এখন বাহাদুর সেজে গেছে। শিয়ালকে ভয় দেখাতে,
জোরেশোরে চিৎকার করছে।
কুকুর শিয়ালের এমন ক্ষমতার লড়াই দেখে,
প্রহরীর মনেও দারুণ সাহস জাগিয়েছে।
কুকুরটা যেনো এই নির্জনতা ভেঙে দিয়ে
বন্ধুর মতো প্রহরীর মনে,
কিছুটা আনন্দের শিহরণ তুলেছে।
প্রহরীও কুকুরের প্রতি দরদী হয়ে উঠলো,
তেড়ে আসা শিয়ালকে তাড়াতে ;
সঙ্গিন উঁচিয়ে লাফিয়ে উঠলো।
প্রহরীর এমনিই জীবনাচার,
প্রতিনিয়ত নিঝুম রাতে;
নিশাচর প্রাণীর সাথে সময় কাটায়।
প্রহরী কাছ থেকে ওদেরকে দেখে,
আর ভাবে ওদের জীবনটাও কতোটা কর্মব্যস্ত।
ওরা ও তো বেঁচে থাকার জন্য,
একটুকরো খাবারের সন্ধানে,
সারারাত হন্যে হয়ে ঘুরে।
প্রহরী ভাবেন,
হায়রে নিশাচর প্রাণী একটু ভেবে দেখ;
তোর আর আমার মধ্যে দুরত্বটা কোথায়?
তোরা যেমন ক্ষুধার জ্বালায় জীবনের প্রয়োজনে খাদ্যের সন্ধানে নিশিযাপন করছিস,
আমিও তো পেটের দায়ে জীবনের তাগিদে;
রাতভর কর্কশ স্বরে ডেকে উঠছি।
” বস্তি ওয়ালা জাগরে- হুশিয়ার সাবধান “।