২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বিতর্কে জর্জরিত এবারের এইচএসসি পরীক্ষা!

অভিযোগ
প্রকাশিত নভেম্বর ১৫, ২০২২
বিতর্কে জর্জরিত এবারের এইচএসসি পরীক্ষা!

 

শেখ তিতুমীর ঢাকা:- এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছেই না। সাম্প্রদায়িক উসকানি, খ্যাতিমান সাহিত্যিকদের অবমাননা আর নারীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের পর এবার ৪ পৃষ্ঠার প্রশ্নে ৪১টি বানান ভুল ধরা পড়েছে। বোর্ড বলছে, উদ্দেশ্যমূলক এ ভুলের মাধ্যমে একটি শ্রেণি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষকদের মন-মগজে সৃজনশীল ও অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে শুধু শাস্তি দিয়ে লাভ হবে না।

৬ নভেম্বর শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথমপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রশ্ন নানা আলোচনা- সমালোচনার জন্ম দেয়। এ ঘটনা শেষ হতে না হতেই কারিগরি বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নের এক উদ্দীপকে বলা হয়, খ্যাতিমান সাহিত্যিক আনিসুল হক সুনাম অর্জন করতে ২১ বইমেলায় তাড়াহুড়ো করে বই প্রকাশ করেন। শুধু তাই নয়, একই প্রশ্নের আরেক উদ্দীপকে টেনে আনা হয়, ফারজানা নামে এক নারী শিক্ষকের একাকিত্বে জীবনযাপন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য। বিয়ের বয়স পার হলেও ওই শিক্ষিকার বিয়ে না করার পেছনে ছাত্রজীবনের প্রেমের কাহিনী তুলে ধরা হয়।

সব ছাপিয়ে যায় চট্টগ্রাম বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্ন। ৪০ নম্বরের প্রশ্নে পাওয়া যায় ৪১টি ভুল বানান। আর ৪ পৃষ্ঠার প্রশ্নে একটি বানানকে লেখা হয় তিনভাবে, যার তিনটিই ভুল।

শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এই বাংলা দিয়েই আজকে বাংলাদেশ, আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। সেই বাংলার বানান ভুল হবে এভাবে। এটি অপরিকল্পিত ও অগ্রহণযোগ্য।

বোর্ড বলছে, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে একটি শ্রেণি ধারাবাহিকভাবে উদ্দেশ্যেমূলক এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। আর গোয়েন্দা প্রতিবেদনের আলোকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সময় সংবাদকে বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কী না বা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বা একটা সম্প্রদায়কে উসকানি দিয়ে অস্থিতিশীল করার জন্য এ ধরনের কোনো মনমানসিকতা আছে কি না, সেগুলো আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষকদের মনোজাগতিক উন্নতি না হলে কেবল শাস্তির মাধ্যমে এ সংকট উত্তরণ সম্ভব নয়।

শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, আমরা বলছি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, আসলে কী প্রশিক্ষণ দিচ্ছি তাদের? প্রশ্নপত্র করার প্রশিক্ষণ দেয়ার চেয়ে তার মনমানসিকতাকে সৃজনশীল করা, তার চিন্তা চেতনাকে সৃজনশীল করার কাজ করতে হবে। সেই প্রশিক্ষণ কী আমরা দিচ্ছি কি না সেটা দেখতে হবে। শিক্ষকদের মন-মগজে সৃজনশীল ও অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে শুধু শাস্তি দিয়ে লাভ হবে না।
এ ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষার্থী মনোজগতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30