২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সরকারি সেবা সংস্থাগুলিতে নাগরিক ভোগান্তি, অনিয়ম ও দুর্নীতি ঠেকাতে দুদক এবং নাগরিক নজরদারি নিশ্চিতের দাবি-ক্যাব চট্টগ্রাম

Weekly Abhijug
প্রকাশিত নভেম্বর ১৪, ২০২২
সরকারি সেবা সংস্থাগুলিতে নাগরিক ভোগান্তি, অনিয়ম ও দুর্নীতি ঠেকাতে দুদক এবং নাগরিক নজরদারি নিশ্চিতের দাবি-ক্যাব চট্টগ্রাম

সরকারি সেবা সংস্থাগুলিতে নাগরিক ভোগান্তি, অনিয়ম ও

প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারন জনগনের মাঝে সরকারি সেবা সহজে পৌঁঁছানোর জন্য দিনে ২০ ঘন্টা অবিরাম পরিশ্রম করছেন। একই সাথে সরকারি সেবা সংস্থাগুলিতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত ও নাগরিকদের ভোগান্তি, অনিয়ম ও দুর্নীতি ঠেকাতে গণশুনানী, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সম্পাদন, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে উন্নয়ন সমন্বয়সভাসহ নানা কামিটি গঠন করে সমন্বয় জোরদার, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি, সরকারি উদ্যাগে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি গঠনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহন করার পরেও অবস্থার সামগ্রিক উন্নয়ন হয়নি। অধিকন্তু অনিয়ম ও দুর্নীতির নিত্যনতুন কলাকৌশলে আরও অধিক মাত্রায় চলছে। এ অবস্থায় সরকারি সেবা সংস্থা বিশেষ করে গ্যাস, পানি, বিদ্যুত, হাসপাতাল, ভূমি, পার্সপোর্ট অফিস, রেলওয়ে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক সেবা সংক্রান্ত নাগরিক ভোগান্তি ও দুর্নীতি ঠেকাতে দুর্নীতি দমন কমিশন ও স্বপ্রণোদিত নাগরিকদের নিয়ে নাগরিক পরীবিক্ষন জোরদার করার দাবি করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। ১০ নভেম্বর ২০২২ইং বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়ে “ঘুষ ছাড়া মানসনদ মেলে না” বিষয়ে দুদকের অভিযানে প্রাথমিক সত্যতার খবরে এক বিবৃতিতে উপরোক্ত দাবি জানান।

১৪ নভেম্বর ২০২২ গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, প্রমুখ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অনিয়ম ও ভোগান্তির মাত্রা এভাবে বেড়েছে যেখানে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সনদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি করপোরেশনে ৫০ টাকা নেবার কথা থাকলেও পদে পদে বিভিন্ন উপায়ে একহাজার থেকে পনের শত টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। একটি জন্মনিবন্ধন সনদের জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষো করতে হচ্ছে। আর এনআইডি ও পার্সপোটে’র নাম সংশোধনে সেই টাকার পরিমান দ্বিগুন নিচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য সেবাসংস্থাগুলিতে চলছে চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। বিষয়গুলি নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। অধিকন্তু সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তির নিত্যনতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। দুর্নীতি ও নিয়ম ঠেকাতে দুর্নীতি দমন কমিশন নিজে ও সরকারি উদ্যোগে গঠিত দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হলেও কার্যত এসমস্ত কমিটি শুধুমাত্র কমিটিতে পদ পদবী প্রাপ্তিতে প্রতিযোগিতা ছাড়া অন্য কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকারি সেবা সংস্থা বিশেষ করে গ্যাস, পানি, বিদ্যুত, হাসপাতাল, ভূমি, পার্সপোর্ট অফিস, রেলওয়ে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিক সেবা প্রাপ্তিতে সিটিজেন চার্টার, গণশুনানীর আয়োজন, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সম্পাদন, তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা, ফ্রন্ট ডেস্কসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও ভোগান্তি ও অনিয়মের মাত্রা কমেনি। অধিকন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের বেতনভাতা বৃদ্ধির পরে ঘুষের পরিমানও দ্বিগুন হয়ে গেছে। সরকার এসমস্ত অনিয়ম বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিষ্ঠা করলেও দুদকে স্বপ্রনোদিত হয়ে অভিযোগ দাখিল করা, অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমান দাখিল করা অনেক সময় সাধারন নাগরিকদের পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার ঘুষের মতো বিষয়গুলোর প্রমান রাখাও সহজসাধ্য নয়। এ সুযোগে ভোগান্তি ও দুর্নীতির মাত্রা ক্রমাগতই বাড়ছে। যদি দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে সেখানে সার্বক্ষনিক নজরদারি রাখতে সক্ষম হয় তাহলে এসমস্ত ক্ষেত্রে ভোগান্তির মাত্রা কিছুটা হলেও কমবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মানসনদসহ যে কোন সেবা পেতে ঘুষের ছড়াছড়ি ও ভোগান্তির মাত্রা নিয়ে ক্যাব থেকে বারবার বিএসটিআই প্রধান কার্যালয় ও দুদকে ঘুষ গ্রহনের ভিডিওসহ দাখিল করার পরও অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। যার কারনে ঘুষ প্রদান করে মান সনদ নিয়ে ব্যবসায়ীরা মানহীন পণ্যের ব্যবসা করলেও ঘুষসহ অন্যান্য খরচের দায়ভার ভোক্তাদের ঘাড়েই পড়ছে। এছাড়াও অনেকেই মাসিক মাসোহারায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে মানসনদ ছাড়া ব্যবসা করে যাচ্ছেন। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানহীন খাদ্য-পণ্যে ভরপুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যা সাধারন ভোক্তাদের জন্য উৎকন্ঠার অন্যতম কারণ।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের চর্চার ঘাটতির কারনে মানুষ সরকারের বিপুল বিনিয়োগে কাংখিত সেবাটি পাচ্ছে না। সরকারের তৃণমূলে কোন দপ্তরের সুশাসনে ঘাটতির চিত্র তুলে ধরাকে সরকার বিরোধী বলে অ্যাখ্যা দিয়ে একটি মহল মূল বিষয়কে পাশকাটানোর কারনে প্রকৃত সত্যটি বের হয় না। আর যে দপ্তরে অনিয়মটি ঘটছে সেখানেও হয়তো সব কর্মকর্তারাই সমান দায়ী নয়। বিষয়গুলো তুলে ধরা দেশপ্রেমের অংশও বলে মনে করেন ক্যাব নেতৃবৃন্দ।

Please Share This Post in Your Social Media
March 2024
T W T F S S M
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031