Sharing is caring!
কামিল আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ফেঞ্চুগঞ্জে ধূমপায়ীদের সংখ্যা দিন দিন অনেক বেড়েই চলেছে। নতুনকরে আসক্ত এসব ধূমপায়ীদের অধিকাংশরাই হলো শিশু-কিশোর। যাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা একটু বেশি। বিশেষ করে তরুণদের মাঝে ধূমপান একটি ‘ফ্যাশন বা স্মাটনেস’ অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। উঠতি বয়সী কোমলমতি তরুণরা সিগারেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। শুধু সিগারেট নয় ইয়াবা সহ অন্যান্য মাদকদ্রব্যেও আসক্ত আছেন কেউ কেউ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাবাজির ফাঁকে বেশি ধুমপান করে। বিশেষ করে পড়ার সময় সন্ধ্যার পর, ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার, দক্ষিণ ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার (মাইজগাঁও) , ফেরিঘাট, বিআইডিসি বাজার, নয়াবাজার সহ অন্যান্য স্থানের নির্জন স্পটে গিয়ে বন্ধুরা এক সাথে হয়ে ধুমপানে মগ্ন হচ্ছে। এছাড়া অনেকে স্কুল-কলেজ চলাকালীন সময়ে দিনদুপুরে প্রকাশ্যে ধুমপান করছে নিয়মিত। ধুমপায়ী একজন তরুণের হিসেব মতে প্রতিদিন তাঁরা অন্তত ১০-১২টি সিগারেট খান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ধূমপায়ী তরুণরা জানান, স্কুলে পড়া অবস্থায় বন্ধুদের সাথে থেকে সিগারেট পানে আসক্ত হই। সব বন্ধুরা একত্রিত হলে সিগারেট বেশি খাওয়া হয়। একা থাকলে সিগারেট কম খাওয়া হয়। সিগারেট খেলে কি হয় এমন প্রশ্নে তারা বলেন, টেনশন দূর ও মাথা ফ্রেশ হয়।
দক্ষিণ ফেঞ্চুগঞ্জ মাইজগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী ময়নুল ইসলাম বলেন, ১২-২৫ বছর বয়সী তরুণরাই বেশি আমার দোকান থেকে সিগারেট কিনে। এরা ডারবী এবং বেনসন সিগারেট বেশি খায়। এরা প্রায় সবাই স্কুল-কলেজের ছাত্র।
শিশুদের কাছে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় আইনতভাবে নিষিদ্ধ হলেও সে আইন মানছেন না ব্যবসায়ীরাও। এতে খুব সহজেই হাতের নাগালে এসব তামাকপন্য পাওয়ায় ধূমপানে আসক্তি বাড়তে থাকে এসব স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিশু-কিশোরদের মধ্যে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, প্রকাশ্যে ধুমপায়ী স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের ধূমপান থেকে ঠেকাতে প্রতিষ্ঠান ও অভিভাবকদের আরো নজরদারি বাড়াতে হবে। ছাত্রজীবনে যদি তারা নেশার পথ ধরে তবে তাদের সামনের জীবন সিগারেটের ধোঁয়ার মতোই অন্ধকার হয়ে উঠবে।
ধুমপানের কুফল সম্পর্কে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল আলম বলেন, ধুমপানের কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়। সিগারেট ফুসফুসে ‘এমফাইসেমা’ সৃষ্টি করে। ‘এমফাইসেমা’ হলে ধীরে ধীরে ফুসফুস পঁচে যায়। ‘এমফাইসেমা’ রোগীর যখন তখন ব্রংকাইটিস হয়ে থাকে। যেকোনো সময় হার্ট কিংবা ফুসফুসের স্পন্দন বন্ধ করে দিতে পারে। ধুমপানের কারণে হার্ট এটাক ও স্ট্রোক হয়ে যেকোনো বয়সের মানুষ মারা যেতে পারেন।