৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটের সবকটি পর্যৃটন কেন্দ্র গুলো পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত

admin
প্রকাশিত জুন ৩, ২০১৯
সিলেটের সবকটি পর্যৃটন কেন্দ্র গুলো পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত

Sharing is caring!

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি ::

সীমান্তবর্তি প্রকৃতির অপরৃপ সুন্দর্য ও প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন বলতে প্রথমেই পর্যটকদের কাছে গুরুত্ব সিলেটের স্থান। সিলেটের বেশির ভাগ পর্যটন কেন্দ্র গুলো নদী কেন্দীক । রয়েছে পাহাড়ের বুক ছিড়ে বয়ে আশা ঝর্ণা ধারা। চা বাগান আর উপজাতী জন গোষ্ঠীর কালচারার একাডেমী। সব মিলিয়ে পুরো সিলেট ঈদে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিগতহ দিনের চেয়ে অনেকটা ভাল রয়েছে। ট্যুরষ্ট গাইড ও ফটোগ্রাফারের সদস্যরা পর্যটকদের সেবা দিতে সংঘটিত হয়ে কাজ শুরু করেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে সদা প্রস্তুত। পর্যটকদের জাফলং জিরো পয়েন্টে নিরভিগ্নে উটা-নামার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের অর্থায়ণে দুষ্টিনন্দন সিড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। নিরাপদে লালাখাল ভ্রমনের জন্য পর্যপকদের জন্য প্রতিটি নৌকায় লাইফ জ্যাকেটের ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে।

স্বচ্ছ পানিতে নীল আকাশের রং, দু’পাশে পাথুরে টিলা আর সবুজ বন, অনতিদূরে ভারতের মেঘমাখা আকাশছোঁয়া পাহাড় নিয়েই লালাখাল । পাহাড় আর টিলার ঢালুতে বিস্তৃত চা গাছের মায়াবী বাগান যেন নিসর্গকে করেছে আরো বেশি ব্যঞ্জনাময়। এপার-ওপার দিয়ে বিনে সুতে মালা গাঁথছে ছোট্ট নৌকাগুলো। লোকজন আসে, প্রাণ ভরে দেখে আর তৃপ্তির ঢেকুর তুলে পুনরায় দেখার আকুতি নিয়ে চলে যায় আপন গন্তব্যে। প্রকৃতির তারিফ করা তাদের গল্প আর ছবিগুলো কেবলই ডানা মেলে, অনুপ্রাণিত করে দেশ-বিদেশের মানুষদের। প্রলুদ্ধ হয়ে আরও বেশি দর্শক আসে, এভাবে মানুষের আনাগোণা কেবলই বাড়তে থাকে রৃপের রাণী লালাখালে।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তি প্রকৃতির অপরৃপ দান লালাখাল সে চিরচেনা চিত্র কিন্তু এবার অনেকটাই ¤øান । পানির সাথে লালাখানের সৌন্দর্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু এবার পানি নেই বলে নিসর্গের সে সৌন্দর্যও অনেকখানি মলিন। অন্তত: পর্যটককে তৃপ্ত করার মতো তা পর্যাপ্ত নয়। একই অবস্থা জাফলং, বিছনাকান্দি আর রাতারগুল জলারবনের। জাফলংয়ের ডাউকি আর পিয়াইন পানিশূণ্য আর তাই প্রকৃতিকন্যার যৈবতি রৃপ এখনো ফুটে উঠেনি যথাযথভাবে। রাতারগুল আর বিছনাকান্দির সৌন্দর্যও কিন্তু পানিকেন্দ্রীক হওয়ায় সেখানেও পর্যটকরা তৃপ্তি পাবেননা যেমন পাওয়ার কথা। তাই এবার পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় গুরুত্ব পাবে সিলেটের ঐতিহাসিক স্থান-স্থাপনা আর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতার প্রতি।

প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন বলতে প্রথমেই পর্যটকরা গুরুত্ব দেন শাহজালাল ও শাহপরান রহ. মাজার । দু’টি জায়গাই নগরীর কেন্দ্রস্থলে থাকায় এবার বাড়তি সময় দেবেন এখানে। এছাড়া কিন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি, জিতু মিয়ার দৃষ্টিনন্দন বাড়িতেও থাকবে পর্যটকদের বাড়তি মনোযোগ। তাছাড়া জাফলং-বিছনাকান্দি-রাতারগুল-লালাখালের যাত্রাপথেই রয়েই প্রাচীন নারী রাজ্যের অসংখ্য নিদর্শন ও স্থাপনা। জৈন্তাপুর রাজবাড়ী, জৈন্তেশ্বরী বাড়ি, ঢুপি মঠ, রাজা বিজয় সিংহের সমাধিসৌধ প্রভৃতি পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ যোগ করবে। নিজপাটের প্রস্তর যুগের নিদর্শন মেগালিথিক পাথরস্তম্ভ এমনিতেই পর্যটকদের বিস্মিত করে।এবার তা বাড়তি মনোযোগ কাটবে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।

সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতার ক্ষেত্রে সিলেটের ক্ষ্রদ্র নৃগোষ্ঠী মণিপুরী, খাসিয়া আর চা বাগানে কর্মরত জনগোষ্ঠীর বিচিত্র সব সংস্কৃতি পর্যটকদের মুগ্ধ করবে। মাতৃপ্রধান খাসিয়াদের টং ঘর, পোশাক-পরিচ্ছেদ আর যাপিত জীবন উপলব্ধি করবে পর্যটকরা। মণিপুরীদের ঐতিহ্যবাহী তাত শিল্প আর জীবন প্রণালীও আগতদের আনন্দ দেবে। একইসাথে সিলেটের মানুষের নিজস্ব সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো পর্যটকদের কম আকৃষ্ট করবেনা।

পানি নেই বলে সিলেটের বিখ্যাত নৈসর্গিক স্থানসমূহ অনেকটা বিমর্ষ আর সেজন্য পর্যটকরা হয়তো পূর্ণ তৃপ্তি পাবেননা সেসব স্থানে। কিন্তু তাই বলে কী থেমে থাকবে পর্যটকদের অনিসন্ধিৎসু মনের অদেখা দেখার চিরায়ত আকুতি। তাই পর্যটকরা এবার ’দুধের সাধ গুলে মেটাবে’। তারা মুগ্ধ হবে সিলেটের হাজার বছরের পুরনো নিদর্শন আর বিচিত্র সব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড দেখে।

পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং নিরভিগ্নে যাতায়াতের ব্যাপারে জানতে চাইলে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বিশ্বজিৎ পাল এ প্রতিবেদককে জানান, ঈদকে সামনে রেখে পর্যটকদের সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে আমরা প্রস্তুত। জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, লালাখাল এলাকায় পর্যটন পুলিশ নিয়োজিত থাকবে এবং প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে পর্যটন এরিয়া গুলোতে গ্রাম পুলিশ আনসার মোতায়েন রাখতে, ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিলডিভিশনের কর্মীদের সার্বক্ষনিক নিয়োজিত থাকবে পর্যটন এলাকা গুলোতে, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোকে সার্বক্ষনিক চিকিৎসক উপস্থিতি রাখা হয়েছে