সৈয়দ রুবেল,ঝালকাঠি ঃঝালকাঠিতে গর্ভধারীনি মা ও সৎ বাবা দ্বারা জোড় পূর্বক অনৈতিক কাজের শিকার হওয়া ষষ্ঠ শ্রেনী স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী অন্তসত্তা সুমাইয়া আক্তার (১৩) সন্তানের মা। সন্তানের মা হলেও সংশয় বাবার পরিচয় নিয়ে।
বুধবার সকালে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
বর্তমানে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই ছাত্রী।
এ বিষয় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাজনিন বেগম বলেন, সুমাইয়ার প্রসব বেদনা শুরু হলে বুধবার সকালে ঝালকাঠি হাসপাতালে আসে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই জরুরী বিভাগে সে স্বাভাবিকভাবে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে।
এরপর তাকে গাইনি ওয়ার্ডে আনা হয়। তবে অপরিণত বয়সে মা হওয়ায় সুমাইয়া কিছুটা অসুস্থ। নবজাতক স্বভাবিক সুস্থ রয়েছে।
ঘটনার সুত্রে জানা যায় যে, মা ও সৎ বাবা স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর কক্ষে অন্যলোক ঢুকিয়ে তার মেয়েকে দিয়ে জোড় পূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করাতো আর তারই ধারাবাহিকতার সাথে তাল মিলিয়ে পাষন্ড বাবাও তার মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মেয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করতো।
১৩ বছর বয়সি ৬ষ্ঠ শ্রেনী স্কুল ছাত্রী সুমাইয়ার গর্ভধারীনি মা সাহেরা আক্তার কাজল এবং সৎ বাবা কাজী আলম সুমাইয়াকে অনৈতিক দেহব্যবসার কাজে বাধ্য করে।
এভাবে দিনের পর দিন গর্ভধারীনি মায়ের সহযোগীতায় সৎ বাবা কতৃক মেয়েকে অনৈতিক কাজ করানোর একপর্যায়ে মেয়েটি গর্ভবতী হলে সুমাইয়ার দাবী তার সৎ বাবার কারনেই সে আজ অন্তসত্তা।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলা নিয়ে তার মা ও সৎ বাবাকে গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয় সুমাইয়া অভিযোগ করে জানায় যে, আমাকে জোর করে এ কাজে বাধ্য করা হয়েছে। আমার মা ও সৎ বাবা অন্য পুরুষ ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে পাহারা দিতো। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এ ধরনের কাজ করা হয়েছে। এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হত। আমার সৎ বাবাও প্রায়ই আমার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক করতেন। সৎ বাবার কারনেই আমি অন্তসত্তা হয়েছি।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ঝালকাঠি সদর উপজেলার মহদীপুর গ্রামের ইউনুস হাওলাদারের সঙ্গে ১৫ বছর আগে বিয়ে হয় একই এলাকার সাহেরা আক্তার কাজলের। তাদের ঘরে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান সুমাইয়া আক্তার।
তাদের সংসার জীবনে পারিবারিক কলোহের কারনে সাহেরা ও ইউনুসের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। একমাত্র কন্যা সন্তান নিয়ে সাহেরা আক্তার কাজল ঝালকাঠি শহরের কাঠপট্টি এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় চলে আসেন।
২০১৪ সালে কাজল শহরের কালীবাড়ি সড়কের টেলিভিশন মেকার কাজী আলমকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এবং কাজলের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার তাদের সঙ্গেই বাষায় থাকতো।
মেয়েটি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, তখন থেকেই তাকে জোর করে মা ও সৎ বাবা অন্য পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন। আর এই সুযোগে পাষন্ড সৎ বাবাও তাকে ভোগ করতো। সুমাইয়া ঝালকাঠি উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বলে জানা যায়।
বিকৃতমনা বাবা ও গর্ভধারীনি মা বাচার জন্য সন্তানসম্ভবা সুমাইয়ার গর্ভপাত করাতে শহরের মৌ-মিতা ক্লিনিকে গিয়ে ভর্তি করলেও সেখানে গর্ভপাত করাতে ব্যর্থ হলে ক্লিনিক কতৃপক্ষ সেখান থেকে তাদেরকে পরদিন ফিরিয়ে দেয়।
বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পারলে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে কাঠপট্টির বাসা থেকে সুমাইয়াকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
অপরদিকে একইদিন রাতে শহরের কালীবাড়ি সড়কে অভিযান চালিয়ে সুমাইয়ার মা সাহেরা আক্তার কাজল ও সৎ বাবা কাজী আলমকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।
এ বিষয় ঝালকাঠি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তাহের বলেন, সুমাইয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমারা মামলা নিয়ে তার মা ও সৎ বাবাকে গ্রেপ্তার করেছি।
সুমাইয়ার জন্ম দেওয়া সন্তানের পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য নবজাতক এবং সৎ বাবা কাজী আলমের শরীর থেকে নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকা সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ। প্রকাশ কর্তৃক : এডভানসড প্রিন্টং - ক-১৯/৬, রসুল বাগ, ঢাকা। মহাখালী ঢাকা হতে মুদ্রিত এবং ১৭৮, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা-১২১৭ হতে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ অফিসঃ ৩৮৯ ডি আই.টি রোড (৫ম তলা) পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯ ,মোবাইল: - ০১৮৮৩২২২৩৩৩,০১৭১৮৬৫৫৩৯৯ ইমেইল: abhijug@gmail.com
Copyright © 2025 Weekly Abhijug. All rights reserved.