১লা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন স্পর্ট পরিদর্শন করলেন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫
আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন স্পর্ট পরিদর্শন করলেন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

Sharing is caring!

মোঃ লোকমান হোসেন, খাগড়াছড়ি:- পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দুইদিনের মাথায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

গতকাল বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বিকেলে সাজেক ভ্যালি পরিদর্শনের সময় তিনি ফায়ার সার্ভিসের একটি বিশেষ ইউনিট স্থাপনের জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধের কথা জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাজেক ভ্যালিতে ফায়ার সার্ভিসের একটি বিশেষ ইউনিট স্থাপনের জন্য আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ করব। এখানে পানির সমস্যা নিরসনের বিষয়েও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “এই এলাকায় এমন একটি ঘটনা অর্থনীতিতে বিশাল ক্ষতি ডেকে এনেছে, যার প্রভাব নিরূপণ করা কঠিন।” তিনি আরও বলেন, “আমি কটেজ মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের জন্য করপোরেট লোনের ব্যবস্থা করতে বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করব। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা গ্রহণ করব এবং ঢাকায় ফিরে তাদের জন্য চাল-ডাল পাঠিয়ে দেব।

সাজেক ভ্যালির স্থানীয় ত্রিপুরা ও লুসাই জনগোষ্ঠীর পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি এবং ক্ষতিগ্রস্ত কটেজ-রিসোর্ট পরিদর্শনকালে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন।

এসময় ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ, সাজেক অগ্নিকাণ্ড তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. মোবারক হোসেন, কমিটির সদস্য সচিব ও বাঘাইছড়ির ইউএনও শিরীন আক্তার, সাজেক কটেজ-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেব বর্মণ, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তদন্ত কমিটির সদস্যদের ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা সিগারেটের আগুন থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে।

সাজেক কটেজ-রিসোর্ট মালিক সমিতির তথ্যমতে, অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুনে ৩৫টি রিসোর্ট, ২১টি রেস্টুরেন্ট, ১৮টি দোকান এবং ৩৮টি স্থানীয়দের বসতঘর সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষ রুইলুইপাড়া স্টোন গার্ডেনে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছেন।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদ’ এবং ‘বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ’। বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে তিন সংগঠনের প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের সহায়তা প্রদান করে।

বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নবলেশ্বর ত্রিপুরা লায়ন, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাগর ত্রিপুরা এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক নক্ষত্র ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রেভিলিয়াম রোয়াজা, টিএসএফ’র বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি শাকিল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি সদর শাখার সভাপতি আকাশ ত্রিপুরাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সাজেকের এই বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আরও সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।