Sharing is caring!

নিজস্ব প্রতিবেদন:- ককটেল ও পেট্রোল বোমা সদৃশ্য বোতল উদ্ধারের ঘটনায় ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বিএনপির এক নেতা। অথচ মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের সম্পর্কে বাদি নিজেই কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। দলীয় সিনিয়র নেতাদের চাঁপে এই মামলা করা হয়েছে বলে মামলার বাদি দাবি করেছেন।
সূত্রমতে, বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সোনার বাংলা এলাকার একটি জঙ্গলের মধ্য থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় তিনটি ককটেল ও দুইটি পেট্রোল বোমা সদৃশ্য বোতল উদ্ধার করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ঘটনায় বামরাইল ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সবুজ হাওলাদার বাদি হয়ে ৭৫ জনকে আসামি করে উজিরপুর মডেল থানায় গতকাল শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) একটি মামলা দায়ের করেন ।
মামলায় স্থানীয় এক সাংবাদিক, দিনমজুরসহ বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো উজিরপুরে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
আজ (২৩ ফেব্রুয়ারি) রবিবার দুপুরে মুঠোফোন মামলার বাদি বিএনপি নেতা সবুজ হাওলাদার বলেন, দলের সিনিয়র নেতারা আমাকে মামলার বাদি হতে বাধ্য করেছেন। মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। আমি শুধু এজাহারে স্বাক্ষর করেছি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলায় আসামি করা হয়েছে বিগত ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ছাত্রনেতা জাফরুল নাদিমকে।
এছাড়াও আসামির তালিকায় রয়েছেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীর সদস্য প্রফেসর হাবিবুর রহমানের ছেলে বিএনপি নেতা মিলন ফকির, জয়শ্রী পান আরতের মালিক বিএনপি নেতা আনোয়ার মল্লিক, ইউপি সদস্য হানিফ হাওলাদার, দিনমজুর সেলিম খান। একই মামলায় ১৮ নম্বর আসামির তালিকায় রয়েছেন দৈনিক দেশ রুপান্তর ও আজকের পরিবর্তন পত্রিকার উজিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি শাকিল মাহমুদ বাচ্চু। কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য না হয়েও সাংবাদিককে হয়রানীর উদ্দেশ্যে মামলার আসামি করায় বরিশালের গোটা সাংবাদিক সমাজের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার আসামি স্থানীয় ইউপি সদস্য হানিফ হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, মামলার ২ নম্বর স্বাক্ষী সৈয়দ ইউসুফের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরধরে দিনমজুর সেলিম খানসহ অনেককেই আসামি করা হয়েছে। ছাত্রনেতা জাফরুল নাদিম বলেন, আমার পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। জমিজমা নিয়ে বিরোধের কারনে উজিরপুর পৌর বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার ইন্ধনে আমাদের দুইভাইকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সাংবাদিক শাকিল মাহমুদ বাচ্চু বলেন, আমি একজন পেশাদার সংবাদকর্মী। কোনদিন আমি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত ছিলাম না। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনা করে আমি জীবিকা নির্বাহ করছি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের জন্যই নাটকীয়ভাবে আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছে।ব্যাবসায়ি আনোয়ার মল্লিক বলেন, নাটকীয় মামলার আসামি হয়ে এখন পুলিশের গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
উজিপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) তৌহিদ করিম বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনটি ককটেল ও দুইটি পেট্রোল বোমা সদৃশ্য বোতল উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। ওসি আরও বলেন, বাদি যাদেরকেই আসামি করুক না কেন তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হবে, তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর বাহিরে কাউকে হয়রানী করা হবেনা।
অপরদিকে রবিবার দুপুরে পৃথক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর, বরিশাল সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একইসাথে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সাংবাদিক শাকিল মাহমুদ বাচ্চুকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি করেছেন।