Sharing is caring!
শেখ আসাদুজ্জামান আহমেদ টিটু, বিশেষ প্রতিনিধি:-‘জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে’ চিরন্তন এই অমর অমোঘ বানীকে মেনে নিয়ে চিরতরে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র।
আজ ৫ জানুয়ারি/২৫ এর রাত সাড়ে দশটার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতাসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
এক নজরে ফিরে দেখা
প্রবীর মিত্র দেশীয় চলচ্চিত্রের অনবদ্য এক অভিনেতার নাম। অনেকে তাঁকে ঢাকাই সিনেমার রঙিন নবাব বলে ডাকেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে রূপালি ভুবনে অভিষেক ঘটে তাঁর। এরপরের ছায়াছবি ছিল ‘জীবন তৃষ্ণা’।
অভিনয়ের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন অসংখ্য কালজয়ী ছবিতে৷ পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানান স্বীকৃতি ও কোটি দর্শকের ভালোবাসা।
জন্ম চাঁদপুর শহরের এক কায়স্থ পরিবারে ১৯৪০ সালের ১৮ আগস্ট। তবে বংশপরম্পরায় পুরনো ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি।
ঢাকা শহরেই বেড়ে উঠেছেন৷ প্রথম জীবনে সেন্ট গ্রেগরি থেকে পোগজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
স্কুলে পড়া অবস্থায় জীবনে প্রথমবারের মতো নাটকে অভিনয় করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে। চরিত্রটি ছিল প্রহরীর।
‘লালকুঠী’ থিয়েটার গ্রুপে পেশাদার অভিনয় জীবন শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমের অভিনয়ে দেখা গেছে তাঁকে। সবখানেই হয়েছেন সফল। তবে মঞ্চ, টিভিকে ছাপিয়ে দর্শকের কাছে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত তিনি।
প্রথম দিকে তিনি নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিতাস ‘একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’সহ বেশকিছু ছবিতে।
সর্বশেষ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’য়। পরবর্তী সময়ে চরিত্রাভিনেতা প্রবীর মিত্রকেই বেশি দেখা গেছে সিনেমায়।
বেলাল আহমেদের ‘নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রটি প্রবীর মিত্রের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবি।
সুমিতা দেবী এ ছবিতে প্রবীর মিত্রের অভিনয় দেখে বলেছিলেন, ‘তুমি যদি এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না পাও তাহলে অভিনয় ছেড়ে, এ দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যেও।’
কিন্তু জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না মিললেও প্রবীর মিত্র তাঁর দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে, ভালোবাসার জায়গা থেকে অভিনয় করে গেছেন আজীবন।
সে ছবিতে না পেলেও পরে তিনি মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি তরুণ বয়সে খেলাধুলার প্রতিও দারুণ ঝোঁক ছিল প্রবীর মিত্রের। প্রবীর মিত্র ষাটের দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন ক্যাপ্টেনও।
একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন। অন্তিম শ্রদ্ধা।