Sharing is caring!
বিশেষ প্রতিনিধি, শেখ আসাদুজ্জামান আহমেদ টিটু:- যে ‘পরিনীতা’ একদা ‘সানাই’ বাজিয়ে ‘আংটি বদল’ করে ‘রাজবাড়ী’র ‘চন্দ্রাবতী’খ্যাত ‘ফুলেশ্বরী’ সেজে সাবলীল অভিনয় আর নৃত্যের ছন্দে ‘রজনীগন্ধা’র সুবাস ছড়িয়ে গোটা চলচ্চিত্র জগতকে মৌ মৌ করে রেখেছিলেন; ‘হুঙ্কার’ এর সাথে শাসন করেছিলেন এদেশের সিনে জগতকে, বিধাতার ‘বিধিলিপি’ মেনে নিয়ে ‘দেশবিদেশ’ ঘুরে ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘মোহনা’ অতিক্রম করে অসংখ্য দূর্গম পথ আর ‘সেতু’ পার হয়ে ‘সুখের সংসার’ এর সেই ‘হিম্মতওয়ালী’ ‘বৌরানী’ অবশেষে জীবনের ‘অভিযান’ শেষে পাড়ি দিলেন অনন্ত যাত্রায়।
বলছি দেশীয় চলচ্চিত্রের রূপালি পর্দার চিরসবুজ অভিনেত্রি অঞ্জনার কথা – আজ ৪ জানুয়ারি/২০২৫ এর রাত একটার কিছু পর সবকিছুকে মিথ্যে প্রতিপন্ন করে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
চির সবুজ অঞ্জনা। বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি মিষ্টি চলচ্চিত্র অভিনেত্রি, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নৃত্যশিল্পী।
জন্ম ২৭ জুন ১৯৫৪ সালে
তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরীর ‘সেতু’। সাথে সহঅভিনেতা ছিলেন রাজ্জাক ও বুলবুল আহমেদ।
ওই একই বছর নায়ক, প্রযোজক, পরিচালক সোহেল রানার সাথে ‘দস্যু বনহুর’ এ অভিনয় করেছেন। পরিচালক ছিলেন শামসুদ্দিন টগর।
বাংলা চলচ্চিত্রে নৃত্য শৈলীর প্রথম অপরূপ নিদর্শন নিয়ে অঞ্জনা তৈরী করে নেন নিজের মজবুত একটি যায়গা। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
একের পর এক সুপারহিট চলচ্চিত্র উপহার দেন তিনি। পূর্নাঙ্গ নায়িকা হিসেবে অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা।
নায়ক হিসেবে নায়করাজ রাজ্জাক এর সাথে বেশকিছু চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন তিনি।
তাছাড়া সোহেলরানা, আলমগীর, ওয়াসিম, জসিম, ফারুক, জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চন, রুবেল, মান্না সবার সাথে দাপটের সাথে অভিনয় করেন তিনি।
উপমহাদেশীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় সমগ্র উপমহাদেশে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি নৃত্যে তিন বার।
গাংচিল, ও পরিনীতা চলচ্চিত্রের জন্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি প্রযোজক হিসেবে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ৭টি চলচ্চিত্র নির্মান করেন।
বর্তমানে নিজের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান এবং আওয়ামী রাজনীতির সাথে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।
অঞ্জনা অভিনীত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র সমুহ – দস্যুবনহুর, সেতুু, অশিক্ষিত, মাটির মায়া, প্রিয়বান্ধবী, সুখে থাকো, সুখের সংসার, সানাই, বৌরানী, প্রেমিক, পরিনীতা, হিম্মতওয়ালী, রাম রহিম জন, পথে হলো দেখা, রাজার রাজা, অভিযান, ডাকু ও দরবেশ, আংটিবদল, কলংকিনী, টার্গেট, নেপালী মেয়ে, দেশবিদেশ, হুংকার, বাপের বেটা, বিধাতা, মহান, রাজবাড়ী, চন্দ্রাবতী, ফুলেশ্বরী, রজনীগন্ধা, আকাশপরী, বিধিলিপি, মাসুম, ঈদ মোবারক, দিদার, মোহনা প্রভৃতি।
তাঁর অকাল প্রয়াণে যে বাংলা চলচ্চিত্রের অপূরনীয় ক্ষতি হলো তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। শ্রদ্ধাঞ্জলি।