২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ভয়াবহ বন্যায় স্বাস্থ্যরক্ষার উপায় কী?

admin
প্রকাশিত আগস্ট ২২, ২০২৪
ভয়াবহ বন্যায় স্বাস্থ্যরক্ষার উপায় কী?

Sharing is caring!

ভয়াবহ বন্যায় স্বাস্থ্যরক্ষার উপায় কী?

অভিযোগ সাস্থ্য ডেস্ক: ভারি বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলা। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি উঠায় ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে অতি দ্রুত। আর বন্যায় স্বাস্থ্যসচেতনতার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে উত্তেজিত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কিছু বিষয় অনুসরণ করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সাথে স্বাস্থরক্ষার বিষয়টিও অনুসরণ করতে হবে। চিকিসৎকরা বলছেন, এসময় দূষিত পানির কারণে চারপাশে পানিবাহিত রোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

১. বন্যার সময় পানির উৎস দূষিত হয়ে যায়। তাই পানি ভালোমতো ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে পান করাসহ গৃহস্থালির অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করতে হবে। বন্যার পানিতে টিউবওয়েল তলিয়ে গেলে এক কলস পানিতে তিন-চার চা চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে টিউবওয়েলের ভেতর এই পানি ঢেলে আধা ঘণ্টা রেখে এরপর একটানা আধা ঘণ্টা চেপে পানি বের করে ফেলে দিলে সেই পানি খাওয়ার উপযোগী হতে পারে। ব্লিচিং পাউডার না থাকলে এক ঘণ্টা টিউবওয়েলের পানি চেপে বের করে ফেলতে হবে।

২. বন্যায় প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা ডায়রিয়া। এ জন্য খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। পায়খানা করার পর হাত একইভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা শুরু হলে পরিমাণমতো খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে।

 

৩. দুই বছরের কম শিশুকে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১০-১২ চা চামচ এবং ২ থেকে ১০ বছরের শিশুকে ২০ থেকে ৪০ চা চামচ খাওয়ার স্যালাইন দিতে হবে। খাওয়ার স্যালাইন বা ওআরএস না থাকলে বিকল্প হিসেবে লবণ-গুড়ের শরবত খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি ভাতের মাড়, চিঁড়ার পানি, ডাবের পানি, কিছু পাওয়া না গেলে শুধু নিরাপদ পানি খাওয়ানো যেতে পারে।

৪. বন্যায় পচা-বাসি খাবার খেতে বাধ্য হয় অসংখ্য মানুষ। ফলে ছড়িয়ে পড়ে ডায়রিয়াসহ অন্যান্য আন্ত্রিক রোগ। খিচুড়ি খাওয়া এ সময় স্বাস্থ্যোপযোগী। খাবার প্লেট সাবান ও নিরাপদ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। পানি বেশি খরচ হয় বলে অনেকে প্রথমে একবার স্বাভাবিক পানিতে থালাবাসন ধুয়ে তারপর ফুটানো পানিতে ধুয়ে নেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়। এতে থালাবাসনে অনেক ধরনের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে, যা পরে পরিষ্কার পানিতে ধুলেও দূর হতে চায় না। তাই খাবার গ্রহণের আগে থালাবাসন পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

৫. বন্যার সময় মলত্যাগে সতর্কতা অবলম্বন খুব জরুরি। যেখানে-সেখানে মলত্যাগ করা উচিত নয়। এতে পেটের পীড়া ও কৃমির সংক্রমণ বেড়ে যায়। সম্ভব হলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে মলত্যাগ করতে হবে এবং মলত্যাগের পরে সাবান বা ছাই দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।

৬. এসময় সাধারণত বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে যাওয়া, সাপ ও পোকামাকড়ের কামড়ের ঘটনাগুলো বেশি ঘটে। এ বছরের বন্যায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অনেক মানুষ। এ ছাড়া পানির নিচে বহু বৈদ্যুতিক টাওয়ার, খুঁটি, ট্রান্সফরমার লাইনের তার ডুবে থাকে। এসব  বৈদ্যুতিক লাইনের নিচ দিয়ে নৌকা বা ভেলা চালানোর ক্ষেত্রে বা চলাচলের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হতে হবে।