২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আপনারা আবার কোন পত্রিকার, এসব শুনে আপনাদের কি কাজ ; স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৪
আপনারা আবার কোন পত্রিকার, এসব শুনে আপনাদের কি কাজ ; স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান

Sharing is caring!

এস. হোসেন মোল্লা: রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে বহু বছর যাবত পরিকল্পিত ভাবে বিবিধ অপরাধে জড়িত প্রতিষ্ঠিত ভয়ংকর সিন্ডিকেট বাহিনী। যুগে যুগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় এদের লোক দেখানো অদলবদল ঘটলেও কোন ব্যাবস্থাতেই সেই অনিয়ম নির্মুল করা আদৌ সম্ভব হয়নি বলেই প্রতীয়মান হয়।

বিশেষ অনুসন্ধানে জানা যায়, এই স্টেশনের প্রায় প্রতিটি ব্যাক্তির মুল দায়িত্বের সাথে বাস্তবতার বিস্তর ফারাক। যা অতি রহস্যময়, প্রশ্নবিদ্ধ ও উদ্ভট! নিত্যই যেন তারা মগ্ন থাকে অবৈধ রোজগারের ধান্দায়। কোনো যাত্রীর কাছে টিকিট না পেলে তাদেরকে স্টেশনের প্লাটফর্মের আশপাশে ডেকে বিভিন্ন অংকের টাকা জরিমানার পাশাপাশি সুযোগ বুঝে উপঢৌকন নেয়ায় ব্যাস্ত থাকে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। এই বাহিনীদের মাঝে মধ্যে টিকিট বিক্রির কাজ করতেও দেখা গেছে। আর টিকিট কালোবাজারীরা অনেক ক্ষেত্রে সাজানো নাটকের মতো আটক হলেও কিছুদিন পরই তাদেরকে আবারও সেই কাজেই গোপন অনুমতির মাধ্যমে আরও দাপটের সাথেই দেখা যায়। টিকিট চেক করার জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত টিটিই থাকলেও বেশির ভাগই তাদের জায়গা মতো দেখা পাওয়া যায়নি। এই আরএনবি ও জিআরপি সদস্যরা নানান অপকর্ম ঘটান নির্দিষ্ট সিসি ক্যামেরার বাইরে।এমনকি অপকৌশলে তাদের নেমপ্লেট খুলে ডিউটি করেন নিজের দুর্নীতি লুকোনোর উদ্দেশ্যে। ট্রেন এসে পৌছলেই হরদম যেনো তারা টাকা লুটপাট প্রতিযোগিতায় লেগেই থাকে !

তাছাড়াও গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের গোপন অনুসন্ধানে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় অবৈধ দোকানপাট,মাদক ব্যাবসায়ী,মাদকাসক্ত,পকেটমার,হাইজ্যাকার,মলম পার্টি, চোর,পতিতা,হিজড়া, দালাল, হকার,ভিক্ষুকদের আস্তানা হিসেবেই দেখা গেছে । যার কারনে প্রায়ই শোনা যায় যাত্রীদের কেউ অজ্ঞান পার্টি,কারোর মোবাইল চুরি,কারোর মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের খপ্পরে পরা সহ বিভিন্ন ঘটনা। এই নিয়ে বহুবার লেখালেখির কারণে লোক দেখানো আনকোরা ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই সবকিছুই ধামাচাপা দিয়ে নব উদ্দমে আবারও চালু হয়।

এদিকে স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসানকে কখনোই তার আসনে দেখা যায়নি।তবে তাকে কম্পিউটার অপারেটর রুমে পাওয়া গেলে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যাবার ছলে বলেন, এ বিষয়ে আরএনবির সিরাজ সাহেবের সাথে কথা বলেন।তিনি আরও বলেন,” জাতীয় কোন পত্রিকাই আমি যেখানে পড়িনা, আপনারা আবার কোন পত্রিকার,এসব শুনে আপনাদের কি কাজ “! এই মাহামুদুল সম্পর্কে গোপন সুত্রে জানা যায়,স্টেশনের ভিতর-বাহিরের সকল প্রকার অনিয়ম ও সমস্ত অবৈধ আয়ের সিংহভাগ গুপ্ত লুটেরাই নাকি তিনি!মেইন রোডের ওভার ব্রিজের নিচের রুমটি অবৈধ দোকানীদের জুতা রাখার জন্য ভাড়া চলছে তারই ঈশারায়!যে কোন মুহুর্তে সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলতেও তিনি দারুণ পটু বটেই! এই স্টেশনের সিরাজের (এসআই,আরএনবি) বক্তব্য নিতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে জানা গেছে, এখানকার সমস্ত অপকর্মের বিষয়ে তিনি অবগত থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি। এই সিরাজ বিভিন্ন দোকান বসানোর কাজে সক্রিয় দায়িত্ব পালন করেন।তাছাড়াও তিনি প্রকাশ্যেই সাংবাদিকদের বলে বেড়ান যে,”আপনারা যতই লিখুন না কোনো,কোনদিন কিছু হয়নি, হবেও না!”

এই রেলস্টেশনে আরও আছে প্রভাবশালী কুখ্যাত মাদক সম্রাজ্ঞী মৌসুমী!এই রূপসী মহিলা বিভিন্ন মাদকের অভিজ্ঞ ও পুরাতন ডিলার। সে বহুবছর যাবত নিজস্ব সিন্ডিকেট সহ স্টেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দিয়ে জোরপূর্বক মাদক বিক্রি ও সাপ্লাই এমনকি পতিতার দালালী করে আসছে। কেউ কোন কাজে অনিহা প্রকাশ করলেই নানান বিপদ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় এই মৌসুমীর ঈশারায়। ইদানিং সেখানে চা-বিক্রেতার বেশে সাধু হয়ে সে উক্ত এলাকায় আনাগোনা ও অপকর্মের বৈধতা আরও পাকাপোক্ত করেছে স্টেশনের কতিপয় অসাধুচক্রের কুটিল পরামর্শ ও সহযোগিতার বদৌলতে। এই যুবতী মৌসুমীর সাথে স্টেশনের চাকুরেদের অনৈতিক সখ্যতার গুপ্ত রহস্য আজও অধরা !

আরও খবর নিয়ে জানা যায়, স্টেশনের বাহিরে পূর্ব ও পশ্চিমে কার পার্কিংয়েও বখাটেদের উৎপাত চরমে।কোনো নারী যাত্রীদের দেখলেই এরা সন্দেহজনক নোংরা সুরে বলে “হোটেল লাগবে হোটেল! কম খরচে আবাসিক হোটেল ” ইত্যাদি!তাছাড়াও তথ্য কেন্দ্রের তথ্য দাতাকে উপস্থিত দেখা যায় না বললেই চলে । প্রায় সেখানে বসে থাকতে দেখা গেছে স্টেশনের চাকুরেদের দাপুটে স্বজনদের।

আরও জানা গেছে, এই স্টেশনের পূর্ব-পশ্চিম পাশে রেলের জায়গায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ ভ্রাম্যমান দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই দোকানগুলো থেকে টাকা তোলে বেশ কয়েকজন কুখ্যাত দাপুটে লাইনম্যান । এদের মধ্যে মাতাল ফারুক ও বাইট্টা আব্দুল করিম নামের উপাধিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের চাঁদার টাকা তুলতে দেখা যায়।এই ফারুকের কাছে টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলেন, “এসব আপনাদের জানার দরকার নেই। এখানে দোকান বসালে চাঁদা দিতেই হবে।এই টাকা অবশ্যই স্টেশনের অফিসারদেরই প্রাপ্য”!গোপন খবরে জানা গেছে, এই মাতাল ফারুক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর পরম বন্ধু ও প্রানের প্রান!সে কিনা নেশাগ্রস্থ থাকে ২৪ ঘন্টাই । আর মাদক বিক্রি,পতিতার দালালি সহ দোকানের টাকা তুলে পুলিশের পকেটে দেন এবং নিজে এই টাকার ভাগ নিয়ে বেশ সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে ও আরাম-আয়েশে দুটি স্ত্রীর ভরনপোষণ চালান। এই দাপুটে মাতাল ফারুক অবৈধ আয় দিয়ে তার আপন ভাইকে বিদেশে পাঠাতেও সক্ষম হয়েছেন।

পুলিশ ফাঁড়ীর ভদ্রবেশী ইন্সপেক্টর সুনীল জানান, “এখানকার ভ্রাম্যমাণ দোকানের বিষয়ে আমি বড়ো স্যারদের জানিয়েছি,যা করার তারাই করবেন। আমার কিছুই করার নেই।আপনারা যা ইচ্ছে লিখতে পারেন এতে কিচ্ছু যায় আসে না!”গোপন সুত্রে জানা যায়, এই সুনীল নতুন এসেই নিরলস প্রচেষ্টায় সমস্ত অপকর্ম ও চাঁদাবাজী গুঁছিয়ে নিজ আয়ত্ত্বে এনেছেন। সেই সাথে কিছু কুখ্যাত হলুদ সাংবাদিকদের নিয়মিত উপরি দিয়ে কেনা গোলাম বানিয়ে নিয়েছেন।গোপন সুত্রে সেই সাংবাদিকদের সম্পর্কে জানা যায় — তারা নাকি বড়ো মাপের স্বনামধন্য সাংবাদিক হিসেবেই পরিচিত!তাদের ভয়াবহতার প্রভাবে অন্যকোন সাংবাদিকই উক্ত এলাকার অপকর্মের বিষয় নিয়ে লেখার সাহস টুকুও পাননা।যদিও তারপরও কেউ কিছু লিখার চেষ্টা বা দু:সাহস দেখান তাহলে তাকে আচানক ভয়াবহ বিপদে ফেলে এলাকা ছাড়া করতে এই কুখ্যাত সাংবাদিক নামের পোষা কুকুরই নাকি যথেষ্ট! এরা হলেন– দুর্নীতি রিপোর্ট ও দৈনিক তালাশ প্রতিদিনের ক্রিমিনাল শাহিন,মুক্ত বাংলা পত্রিকার বাটপার রনি,দৈনিক বাংলাদেশ পরিক্রমার পরিচয়ধারী ভন্ড দাড়িয়া কামাল এবং পুংটা আনিস!জানা যায়, বহু বছর ধরে উক্ত এলাকার পতিতা ও হিজড়াদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে সুযোগ বুঝে তাদের সাথে অসামাজিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে এমনকি বিভিন্ন অপকর্মে বাধ্য করতে মহাপটু এই তথাকথিত কুখ্যাত সিনিয়র সাংবাদিক পুংটা আনিস। এদের প্রায়ই উক্ত স্থানে দেখা গেলেও সেখানকার সহজে দৃশ্যমান অনিয়মের খবর প্রকাশ করতে দেখা যায় না। বরং বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত চাঁদাবাজীসহ জানা-অজানা বহু অপকর্মে সহায়তা করে অবৈধ আয় রোজগারে রহস্যপুর্ন আজব জীবিকা নির্বাহ করেন এই ক’জন তথাকথিত সাংবাদিক নামের ইতর উপাধির গুঞ্জন অর্জনকারী ভয়ঙ্কর দু’পায়া প্রাণীগুলো! বিমানবন্দর রেল স্টেশনের দুর্নীতিবাজদের সাথে মানিকজোড় সম্পর্ক এসব সাংবাদিক নামের সাংঘাতিকদের।সেখানে চলছে চরম দুর্নীতিবাজ ও হলুদ সাংবাদিক চক্রের সম্মিলিত নৈরাজ্য!

দেখা গেছে , সেখানে প্রায় ৫০/৬০ টা দোকান বসে।রোজ দোকান প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা নেয় এই মাতাল ফারুক। এদের নাকি মাস্তান বাহিনীও আছে। সেই সাথে সার্বিক সহযোগীতায় আরও আছে সরকারি নিরাপত্তা ও পুলিশ বাহিনী।প্রায়ই ক্ষেত্রে এই বাহিনীকে কঠোর নিরাপত্তায় দোকানীদের বিভিন্ন সহায়তা করতেও দেখা গেছে। এক কথায়, নির্ভয়ে ও বীরদর্পে সকল অপকর্ম চলছে প্রকাশ্যেই! এখানকার সরকারি চাকুরে,বিভিন্ন নেতা-মাস্তান ও সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ ও সাংবাদিক নামধারী কালো হাতের সম্মিলিত চক্রান্তে উল্লেখিত সকল অনিয়ম-দূর্নীতি দিনে কিংবা রাতে নিয়মিত চলছে।অপেক্ষামান যাত্রীরা ভিষণ আতংকিত।অনেকেই বলেন, এখানে আরএনবি ও জিআরপির সদস্য থাকার পরও যদি এতো অঘটন ঘটে তাহলে তাদের থাকার প্রয়োজন কি? আর স্টেশন মাস্টারের রুমে প্রায়ই তালা লাগানো থাকলে অভিযোগ কোথায় বা কার কাছে দেবো ?

গোপন অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এই নেশাখোর-মাতাল ফারুক রোজ ফুটপাথের দোকানের চাঁদা তুলে একটি অংশ দেয় এএসআই মনিরকে।মনির সেই টাকা এসআই শফিকের হাতে দেন। চাঁদার আরেক অংশ ফারুক দেয় মল্লিককে। মল্লিক দেন তারই সিনিয়র সিরাজের হাতে। চাঁদার আরও একটি অংশ ফারুক সরাসরি দেয় পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সুনীলের হাতে। এই স্টেশনের সতর্ক চাঁদাবাজের নাম বাইট্টা করিম। যার দেখা পাওয়া বড়ই সাধনার ব্যাপার। যদিও সে দিনে দু’বার ফেরি করা ব্যাবসায়ীদের থেকে জোরপূর্বক টাকা তুলে সুনীলের দরবারে দেয়। রোজ সন্ধ্যা হলেই নিষ্পাপ চেহারার সুনীল আচানক হিংস্র ও ভয়ানক ভাবমূর্তি ধারণপূর্বক নানান কায়দায় ঝটপট সমস্ত অবৈধ তথা পাপের টাকা পই পই করে বুঝে নিয়ে তবেই সেই ব্যাবসায়ীদের প্রতি সুনীল খোলা আকাশের মত মহানুভবতা প্রকাশ করেন!

জনমনে ভাবনা ও প্রশ্ন, ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনের যাত্রীরা কতটুকু নিরাপদ ? স্টেশনের সমস্ত অপরাধীসহ আরএনবি ও জিআরপির অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না কেন ?প্রশাসন কেন নিরব কেন ? তাহলে আইন কি সবার জন্য সমান নয় ? আমরা কি মগের মুল্লুকের দেশেই বাস করি ? এমন ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কেন দায়ী হচ্ছেনা ? বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা কি এসব দেখে না?

এই সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে উক্ত অনিয়ম ও সিন্ডিকেটে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তদন্তের মাধ্যমে হাতে নাতে ধরাশায়ী করে আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ সমস্ত সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করা হচ্ছে ।