এস. হোসেন মোল্লা: মেরিনা আক্তারের অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ঠিকমতো দুই বেলা দুটো খেতে পান না।তিনি ফুটপাথে ভ্রাম্যমান চা-বিস্কুট বিক্রি করে তিন মেয়ে ও এক ছেলের সংসারের গ্লানি টানছেন। অর্থকষ্ট, সন্তানদের নানান দুরাবস্থা, জ্বরা-ব্যাধি,সাংসারিক চাপ এবং ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে তার মর্মান্তিক বিপদগ্রস্ত জীবন কাটছে বহু বছর যাবত।
তিনি জানান,তার ছোট মেয়ে মুক্তির জন্ম থেকেই ঠান্ডা- কফ-কাঁশি ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা (নিউমোনিয়া) প্রবলভাবে পরিলক্ষিত হলে অনেক চিকিৎসকগণ ব্যক্তিগত ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন -- "এ বেশি দিন বাঁচবে না, তাই এত চিকিৎসা করে কাজ নেই "! কিন্তু, মুক্তির ফুটফুটে হাসি মাখা মিষ্টি মুখখানি দেখে পরিবার শত দুঃখ-কষ্টের মাঝেও সকলের প্রাণপণ সহযোগিতা ও দোয়ার বরকতে সেই মুক্তি বিস্ময়কর ভাবে দেখতে দেখতে আজ সুন্দরী কিশোরী ও নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী!তবে সুচিকিৎসার অভাবে দিনে দিনে বহুবিধ রোগ-ব্যাধি আক্রান্ত হয়ে নিরব মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন পদ্ধতিতেও সঠিক ভাবে রোগ নির্ণয় বা প্রতিকার সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
খবরে প্রকাশ, তারা ভূমিহীন ও গৃহহীন। ফুটপাথে কোন রকম ভ্রাম্যমান বেঁচা বিক্রি করেই শীত-গ্রীষ্ম, রোদ-বৃষ্টি ও নানান বাঁধা-বিঘ্ন উপেক্ষা করে তাদের অসহনীয়, দুর্বিসহ, আপোষহীন ও ভয়ঙ্কর জীবন যুদ্ধ চলছে। অভাবের তাড়নায় পর্যাপ্ত মালামাল কিনেও যেন বসতে পারেন না।ফুটপাথে প্রায়ই তেমন একটা কাস্টমারও জোটে না বললেই চলে। তার ওপর আছে চাঁদাবাজ,মাতাল, মাস্তান ও সন্ত্রাসীদের উপদ্রব ও ভয়াবহতা যা পিছু ছাড়তে নারাজ।
জানা গেছে , অভাবের তাড়নায় মাসের পর মাস তাদের বাড়ি ভাড়া বাকি থাকছে। তার ওপর আরো বাকি মুক্তির স্কুল ও কোচিংয়ের কয়েক মাসের বিভিন্ন বেতন। এমতাবস্থায় লেখাপড়া ও চিকিৎসার খরচ বহন পুরোপুরি অসম্ভব বিধায় বন্ধ হবার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে । তার বড় মেয়ে টুম্পা স্বামী ও শ্বশুরবাড়ি কর্তৃক নির্যাতিতা হয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ্য হয়ে পরে আছে কয়েক বছর যাবত । একমাত্র ছেলে মজনুও রোগাক্রান্ত ও চিকিৎসাহীন। এক রকম কাজ করতে অক্ষম বললেই চলে। সব মিলে যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ! তারা প্রায় ২২ বছর ধরে রাজধানীর দক্ষিণখানের তেঁতুলতলা বেকারি সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা । স্বামীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের চামাগ্রাম (৩নং ওয়ার্ড)। বাবার বাড়ি: গ্রাম- গাবতলা,সেহালা,ডাকঘর - চৌহদ্দীটোলা,চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর,চাঁপাইনবাবগঞ্জ। মেরিনার স্বামী তাসেম আলী গ্রামের বাড়িতেই বসবাস করেন।তিনিও শারীরিক নানান সমস্যা জনিত কারণে উপার্জনে তথা ভরণ-পোষনে অক্ষম ।
বিবিধ সমস্যার বিষয়ে মেরিনা সংবাদকর্মীদের খুলে না বললেও তারা নানান সমস্যা আঁচ করতে পেরে সহযোগিতার লক্ষ্যে বিস্তারিত আকারে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরতে নিজ উদ্দোগেই এগিয়ে গেছেন । সরেজমিনে তাদের বাসায় গিয়ে প্রতিনিধিরা হতভম্ব বনে যান এই দেখে যে,দিনে এক বেলাও প্রায়ই তাদের হাঁড়িতে রান্না উঠে না! আবার লজ্জা ও সংকোচ বশত: অভাব ও বিপদের কথা তারা পুরোপুরি খুলে বলতেও পারছেন না! অসহায়-দরিদ্র হিসেবে সরকারি-বেসরকারি কোন প্রকার সহায়তা বা প্রনোদনাও তারা পাচ্ছেন না ! এমনকি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার হিসেবে তাদের নাগরিক অধিকার কোথা থেকে কিভাবে পাওয়া যাবে সেটাও তাদের অজানা!
পাড়া-পড়শি ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ সকলেই একযোগে মেরিনার পরিবারকে নিরীহ, ভদ্র ও বিনয়ী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে,"মেরিনা ও তার ছেলে মেয়েরা যে কোন পরিস্থিতিতেই বছরের পর বছর সুনাম ও সম্মান অক্ষুন্ন রেখে হালাল ভাবে ও সততার সঙ্গে জীবন সংগ্রামে বদ্ধপরিকর। কাজেই, যদি কারো সহায়তায় একটি ভালো দোকান করা যেতো তাহলে মেরিনা যেভাবেই হোক জীবনের এক পর্যায়ে নিজের ও সন্তানদের একটা গতি করে দিতে পারতেন "।
বিবিধ বিশ্লেষণে পাওয়া যায়, বহু বছর যাবত অর্ধাহারে-অনাহারে শরীর শুঁকিয়ে দুর্বল, কঙ্কালসার ও প্রায় অচল অবস্থায় তাদের গোটা পরিবার । দীর্ঘদিন অপুষ্টিজনিত কারণে শারীরিক-মানসিক ভাবে রুগ্ন ও ব্যাধি গ্রস্থ। তার ওপর সামাজিক ও পারিবারিক নানান অবিচার, দুঃখ-কষ্ট, ধার-দেনা, হতাশা ও বিষণ্ণতায় পতিত। এমন বিপদাপন্ন পরিবারের সুচিকিৎসাও কোনোভাবেই সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
বাস্তবতার আলোকে দেখা যায়, কারো আকুতি শোনার ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার মত মানসিকতার বড়ই অভাব বর্তমান সময়ে।পারিবারিক সুত্রেও জানা যায়, অনেক উচ্চ মাপের মানুষের কাছে সহায়তার জন্য বহুদিন যাবত বহুবার অনুরোধ করলেও সকলেই শুধু বড়ো বড়ো কথা বলে সময় নষ্ট ও মশকরা ছাড়া কিছুই করেনি!
এমন চতুর্বিধ দুর্দশাগ্রস্থ অভাবের সংসারে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির আশাটি করাও যেন অপরাধ! তবুও মনের মাঝে জেগে ওঠে সীমাহীন প্রত্যাশা। নিঁভু নিঁভু প্রদীপ থেকে আশার বিজলী যেন নিত্য ঝিলিক দিয়েই চলে তাদের চোখের কোণে ও বুকের মাঝে। নতুন আশায় অনাগত স্বপ্নের ভবিষ্যত গড়ার বিরামহীন অন্তিম প্রয়াস লক্ষ্য করলে যেন পাষান হৃদয়ও কেঁদে ওঠে !
গণমাধ্যম কর্মীদের মানবিক উদ্যোগ ও জোর প্রচেষ্টায় মেরিনার বহুদিনের না বলা আকাংকিত চাহিদা ও মনে প্রাণে লালিত স্বপ্ন-আশাকে বাস্তবে পরিণত করতে মানসম্পন্ন দোকানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি পারিবারিক সুচিকিৎসার জন্যেও নিরলস ভাবে ধাপে ধাপে সচেষ্ট থাকতে বদ্ধপরিকর ।সাংবাদিকতার কল্যাণে ইতোমধ্যে মানসম্মত হাসপাতালে মুক্তির একটি রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে ইউরিন ইনফেকশন ও পিত্তথলীতে পাথর সনাক্ত করা হয়েছে। আরও কিছু রোগ সনাক্তের প্রচেষ্টায় চলছে নানান পদ্ধতি ও মানদণ্ডের জটিলতা। তাছাড়াও গভীর দৃষ্টিকোন থেকে পুরো পরিবারেরই ভালো মানের চিকিৎসা জরুরি বলেও ধারণা করা হচ্ছে । সকল পাড়া প্রতিবেশী ও সচেতন ব্যক্তিগণ সাংবাদিকদের এমন কল্যাণমুখী মহৎ উদ্যোগকে মনে প্রাণে সাধুবাদ ও স্বাগত জানিয়েছেন। সকলেই আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,
"সাংবাদিকতার কল্যানে এবার মেরিনা ও তার পরিবারের সমস্ত সমাধান ও উন্নয়ন অবশ্যই আমরা দেখতে চাই "।
অসহায় মেরিনা আক্তারের সার্বিক সহযোগিতার জন্য নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্ট : শোয়েব হোসেন, সঞ্চয়ী হিসাব নং- ১৫৪২৮, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, রাজলক্ষ্মী শাখা, উত্তরা, ঢাকা - ১২৩০। জরুরি ক্ষেত্রে - ০১৭৩০৮৯০০১৯, সরাসরি মেরিনা আক্তার - ০১৭৩৮২২৬৯৭৯ ।
এই সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে সমাজের সকল পর্যায়ের হৃদয়বান, বিত্তবান, বিবেকবান, দানশীল ও প্রভাবশালী মহলের জরুরী ভাবে প্রয়োজনীয় সমস্ত বিষয়ের সু-বন্দোবস্ত ও আর্থিক সহায়তার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বিভিন্ন দাতা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা কামনা করা হচ্ছে।
<p>ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ।<br>সহকারী সম্পাদক-নাসরিন আক্তার রুপা।<br>বার্তা সম্পাদক-মোঃ জান্নাত মোল্লা।<br>প্রধান উপদেষ্ঠা: আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মওলা নকশে বন্দী ।<br><br>প্রকাশ কর্তৃক : এডভানসড প্রিন্টং - ক-১৯/৬, রসুল বাগ, ঢাকা। মহাখালী ঢাকা হতে মুদ্রিত এবং ১৭৮, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা-১২১৭ হতে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ অফিসঃ ৩৮৯ ডি আই.টি রোড (৫ম তলা) পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯ ,<br>মোবাইল: - ০১৮৮৩২২২৩৩৩,০১৭১৮৬৫৫৩৯৯</p><p>ইমেইল : abhijug@gmail.com ,</p>
Copyright © 2024 Weekly Abhijug. All rights reserved.