Sharing is caring!
স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁয় জোর পূর্বক জমি দখল ও মিথ্যা মামলা দিয়ে এক ব্যাবসায়ীকে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার চকএনায়েত এলাকার ওই ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম মো: শহিদুল ইসলাম লিটন।
পৌর অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী মো: শহিদুল ইসলাম লিটন পৈতৃক সূত্রে পাওয়া শহরের চক এনায়েত মৌজার ১৪.৩৭ শতাংশ জমি দীর্ঘ দিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। সম্প্রতি তার মালিকানাধীন সম্পত্তিতে মোঃ জাহিদুল ইসলাম( উজ্জল) এক ব্যক্তি অবৈধ ভাবে গৃহ নির্মান শুরু করলে, উক্ত কাজে ভুক্তভোগী লিটন তিনি বাঁধা দেন এবং পরবর্তীতে পৌর মেয়র বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ দাখিলের পর নওগাঁ পৌর মেয়র বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে গত ১৫/১২/২০২৩ তারিখে একটি নোটিশ ইস্যু করেন মোঃ জাহিদুল ইসলাম( উজ্জল) এর বিরুদ্ধে । এ ঘটনার অভিযুক্ত মোঃ জাহিদুল ইসলাম (উজ্জল) বরাবর পাঠানো ওই নোটিশে গৃহ নির্মান কাজটি অবৈধ বলে আখ্যায়িত করে নির্মান কাজ বন্ধ এবং ৭ কর্মদিবসের মধ্যে এবিষয়ে জবাব চান পৌর কতৃপক্ষ । তবুও বন্ধ হয়না কাজ,জমির বৈধ মালিক না হয়েও চলতে থাকে উজ্জলের গৃহ নির্মান কাজ। তবে উক্ত নোটিশের একটি জবাব দেন তিনি তবে সেটা অসন্তোষজনক উল্লেখ করে গত ৮/০৫/২০২৩ তারিখে পুনরায় নোটিশ পাঠায় পৌরসভা, উক্ত নোটিশে অবৈধ নির্মান স্থাপনাটির অপসারণ এবং ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়। তবে সে নোটিশও কোন কাজে আসেনি বরং ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজী মামলা করেন অভিযুক্ত মোঃ জাহিদুল ইসলাম (উজ্জল)। পরে ১৮/০৫/২০২৩ তারিখে পুনরায় এবং চুড়ান্ত নোটিশ পাঠায় পৌরসভা। ওই নোটিশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অবৈধ স্থাপনাটি নিজ দ্বায়িত্বে সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় এবং অন্যথায় পৌর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান পৌর কতৃপক্ষ । তবে হয়নি কাজের কাজ কিছুই, সময় গড়িয়েছে নিজ গতিতে, মিথ্যা মামলায় হয়রানি পোহাতে হচ্ছে ভুক্তভোগী ওই সম্পত্তির প্রকৃত মালিক শহিদুল ইসলাম লিটনকে।
এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম লিটনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ওই সম্পত্তিটি তার বাবা জীবিত থাকাকালে তার নামে লিখে দিয়ে যান, এবং তার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও জোর পূর্বক অন্য কেউ স্থাপনা কিভাবে নির্মান করছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ওই সম্পত্তিতে যে ব্যক্তি অবৈধ স্থাপনা নির্মান করেছেন মূলত ওই ব্যক্তিকে আমার পিতা আশ্রয় দিয়েছিলেন মাত্র। তারা জমিটির মূল মালিক নয় সেটা তারাও জানে। বিগত দিনে জায়গা খালি করার তাগিদ দিলে, আজ দিব কাল দিব বলে কাল ক্ষেপন করেছে মাত্র। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এছাড়া স্থানীয় কিছু বখাটে দ্বারা নানান রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। আমি বেশ কোনঠাসা অবস্থায় পড়ে গেছি। আমার বের হওয়ার রাস্তাটাও এখন নেই। অভিযুক্ত মোঃ জাহিদুল ইসলাম এবং তোফাজ্জল হোসেনের অবৈধ স্থাপনা নির্মান যা আমার চলাফেরায় নানান প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে দিয়েছে। আমি রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনকে সম্মান করি এবং শ্রদ্ধা রেখে এই অন্যায়ের বিচার প্রার্থনা করছি।
ভুক্তভোগী পরিবারের যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ থাকায় পৌর কতৃপক্ষ হতে একাধিক নোটিশের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা অদ্যবধি কার্য্যকর হয়নি।
এ বিষয়ে তোফাজ্জল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি পৌর বিধি অমান্য করে বাড়ি নির্মান করিনি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছিল, কিন্তু পৌর কাউন্সিলর তা তদন্ত সাপেক্ষে আমার পক্ষে রায় দিয়েছেন।
অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম উজ্জলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাকে নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। উক্ত জমির মালিক হিসেবে দাবী করলেও জমির বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা সে সম্পর্কে কোন তথ্য এবং তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে কোন ধরনের বক্তব্য দিতে চান না বলে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে তার ভিডিও বক্তব্য চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার সময়মত লিখিত বক্তব্য দিবো। এখন কোন বক্তব্য দিতে পারবোনা।
এ বিষয়ে নওগাঁ পৌর মেয়র নজমুল হক সনির সাথে কথা হলে তিনি জানান, অভিযুক্ত বরাবর পরপর তিনবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে, সন্তষজনক কোন জবাব না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে পৌর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।