Sharing is caring!
মোহাম্মদ নূরে আলম : বর্তমানে এটি একটি কমন সামাজিক ব্যধি। এটি বন্ধে আমরা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় গিয়ে অভিভাবক সমাবশে করে অভিভাবকদের সচেতন করেছি। সন্তানরা কার সাথে মিশতেছে, মেয়েরা কার সাথে মিশতেছে, সন্তানরা ফোনে কি করতেছে, এসব বিষয়ে সচেতন থাকতে আমরা অভিভাবকসহ ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করে আসছি। কারণ এই ব্যধি বন্ধে অভিভাবকের ভূমিকাই কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, অপরাধীদের অপরাধের পথে পা বাড়ানোর ক্ষেত্রে মাদকের ভূমিকা কতটুকু বলে মনে করেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম, অপরাধের পথে পা বাড়ানোর ক্ষেত্রে মাদকের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কারণ- যারা মাদকাসক্ত, তাদের হিতাহীত জ্ঞান থাকে না। আবার মাদকের টাকা যোগাড় করতে গিয়ে আরো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর সহায়তায় আপনার উদ্যোগের কথা শোনা যায়। এ বিষয়ে পাঠকদের উদ্দেশ্যে সংক্ষেপে বলুন।
মোহাম্মদ নূরে আলম, আমরা জানতে পারি একজন রিক্সাচালকের মেয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে, কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছে না। আমরা একটি ফাউন্ডেশনের সাথে যোগযোগ করি। ওই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা ওই মেয়ের ভর্তির জন্য ৫০ হাজার টাকা দিই এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করি। পাশাপাশি তাকে ওয়াদাবদ্ধ করাই সে ডাক্তার হলে যেন তার মত অন্তত একজনের দায়িত্ব নেয়।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, আপনার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের কথা জানা যায়, বিশেষ করে ৩০ হাজার কম্বল বিতরণ। এসব সামাজিক কাজে আপনার অনুপ্রেরণা কি?
মোহাম্মদ নূরে আলম, জয়পুরহাট জেলায় যোগদানের পর দেখলাম এখানে যে তীব্র শীত, আমারই কষ্ট হচ্ছে। তাহলে যারা গরীব বা নিম্মবিত্ত কিংবা অসহায়, তাদের তো আরও কষ্ট বেশি হচ্ছে। তাই আমার মনে হলো- তাদের পাশে দাড়ানো দরকার। আমি আমার কিছু পরিচিত ও শুভাকাঙ্খীর মাধ্যমে ৩০ হাজার কম্বলের ব্যবস্থা করি এবং তা যথাযথভাবে বিতরণ করি।
সাপ্তাহিক অভিযোগ,এছাড়াও আপনার অন্যান্য কি কি সামাজিক সহায়তামূলক কাজ রয়েছে?
মোহাম্মদ নূরে আলম, সামাজিক সহায়তামূলক কাজ তো প্রত্যেক মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। আমার কাছে কোনো অসহায়ের খবর এলে সাথে সাথে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। যেমন, হুইল চেয়ার বিতরণ করেছি। তাছাড়া এখানে ‘বাংলা হোপ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। তারা অনাথদের লালন-পালন করে। সেখানে ১০ টি সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করেছি।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, আপনাকে ওয়ারেন্ট মাষ্টার বলা হয়। ওয়ারেন্ট তামিলে আপনার এই উদ্যোগের কারণ কি?
মোহাম্মদ নূরে আলম, জয়পুরহাট জেলা টানা ৮ মাস সারাদেশের মধ্যে ওয়ারেন্ট তামিলে শ্রেষ্ট হয়। আমি চিন্তা করে দেখলাম যে- ওয়ারেন্ট তামিল যতটা বেশি কার্যকর করা যাবে ওয়ারেন্টের আসামীও ধরা যাবে, পাশাপাশি পুলিশের টহল বৃদ্ধির কারণে অন্যান্য অপরাধীরাও অপরাধ সংঘটন করতে ভয় পাবে।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, কখনো কোনো অপরাধীর জন্য কি মায়া হয়েছে?
মোহাম্মদ নূরে আলম, মায়া বলতে সব অপরাধীর জন্যই মায়া হয়। কারণ কেউই তো অপরাধী হিসাবে জন্মায় না। তারা যদি অপরাধের সাথে জড়িত না হতো তাহলে ভালো পথে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে অনেক ভূমিকা রাখতে পারতো।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, এই চ্যালেঞ্জিং পেশায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনটি আপনাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগায়?
মোহাম্মদ নূরে আলম, যখন কোনো সেবাপ্রার্থী আমাদের থেকে তার প্রত্যাশিত সেবা পেয়ে একটা তৃপ্তির হাসি দেয়, আমাদের জন্য দোয়া করে। তাদের দোয়া এবং হাসিটিই আমার সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস ও অনুপ্রেরণা।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, অনেক মানুষ পুলিশকে খারাপ মনে করে। তাদের উদ্দেশ্যে কি বলবেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম, আপনি দেখেন, যে মানুষটা বিদেশ গিয়ে যথাযথভাবে আইন মেনে চলে, সেই মানুষটাই দেশে আসলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে চলে। তাদের শৃঙ্খলার আওয়ায় আনতে গেলেই পুলিশকে খারাপ বলবে। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো- সবাই আইন-শৃঙ্খলা মেনে চলুন এবং পুলিশকে সহায়তা করুন এবং নিরাপদ থাকুন।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, আপনার নিজের বিরুদ্ধে যদি কেউ অপপ্রচার করে, বিষয়টিকে কিভাবে দেখবেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম, কারো মিথ্যা অপপ্রচারে আমি বিচলিত হই না, তবে কষ্ট লাগে। সে হয়তো আমাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারে নাই। আমি আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে চালিয়ে যাবো। অপেক্ষায় থাকবো। হয়তো একদিন অপপ্রচারকারী তার ভুল বুঝতে পারবে এবং সেদিন ঠিকই সে আমাকে সঠিক মূল্যায়ন করবে।
সাপ্তাহিক অভিযোগ, সাপ্তাহিক অভিযোগ পাঠকদের উদ্দেশ্যে কি বার্তা দিবেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম, এই দেশটা আমার আপনার সবার। ৩০ লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধার ত্যাগ-তিতীক্ষা ও জীবনের বিনিময়ে এবং ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে এই দেশটি স্বাধীন হয়েছে। রক্তের বিনিময়ে অনেক চড়ামূল্যে ক্রয়কৃত এই স্বাধীনতাকে যদি আমরা ধরে রাখতে চাই, স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে চাই, তাহলে সবাইকে সম্মিলিতভাবে দেশ গড়ার কাজে ভূমিকা রাখতে হবে।