Sharing is caring!
সাতকানিয়া প্রতিনিধি
১৯৬০ সালে সীমিত আকারে এবং ১৯৬৫ সাল থেকে দেশে জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা পরিকল্পনা কার্যক্রম শুরু করে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সৃষ্টি হয় ১৯৭৫ সালে।
পরিবার পরিকল্পনা সৃষ্টি থেকে আজ পর্যন্ত এরকম দুর্নীতি চোখে পরেনি।অনেকের মনে প্রশ্ন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ কোন কাজ করে না।
এ বিভাগের দুর্নীতি হয় অদৃশ্যভাবে। সাতকানিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ২০২২ সালে আগষ্ট মাসে যোগদান করেন উপজেলা সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে এম এ এইচ মঈনুল হোসেন।নিয়মিত কোন কর্মকর্তা না থাকায় তাকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
মঈনুল যোগদানের পর থেকে শুরু করেন অফিসের কর্মচারীদের নিয়ে সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটে নেতৃত্ব দেন মঈনুল।তার বুদ্ধিদাতা হিসেবে কাজ করেন অফিস সহকারী আসকর আলী,লেনদেন করেন অফিস সহকারী(হিসাব শাখা) মর্জিনা বেগম এবং ওনার স্বামী পুরানগর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আনিসুর রহমান এবং তাদের আরেক সহযোগী নৈশ প্রহরী অভি চক্রবর্তী।
মঈনুল প্রথমে কর্মীদের মাঠ কাজ পরিদর্শনে যান।মঈনুলের প্রধান কাজ সাতকানিয়া ১৭ টি ইউনিয়নের মাঠ কাজ পরিদর্শন করা।প্রত্যেক কর্মীদের রেজিস্ট্রার নিয়ে কাজ করতে হয়, ঐ রেজিস্ট্রারে দম্পতির সব তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। মঈনুলের সহকারী আনিসুর রহমান এবং অভি চক্রবর্তী কে সাথে নিয়ে যান।কর্মীকে সমস্যার কথা বলে রেজিস্ট্রার জব্দ করেন।পরে মর্জিনা এবং আনিসের মাধ্যমে সমস্যার কথা বলেন।কর্মীরা সমাধানের কথা বললে একেকজনের কাছ থেকে ১৫০০০ থেকে ২০০০০ টাকা হাতিয়ে নেন।কেউ অপারগতা স্বীকার করলে তাকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেন।যদি টাকা দিতে রাজি হন, তাহলে তাকে ঐ কারন দর্শানোর নোটিশ থেকে অব্যাহতি দেন। শুধু এখানে নয়, কেউ ব্যাংক থেকে ব্যক্তিগত লোন নিলে অফিসারের জন্য ৫০০০ এবং মর্জিনা বেগমের জন্য ২০০০ টাকা নেন।কেউ পেনশনে গেলে তার কাছ থেকে ১ থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত হাতিয়ে নেন।
অবসরপ্রাপ্ত এক পরিবার কল্যাণ সহকারী কান্নাজ্বরিত কন্ঠে বলেন,আমি ৩৫ বছর এ বিভাগকে সেবা দিয়েছি,পেনশনের সময় টাকার পরিমান দেখে মঈনুল এবং মর্জিনা বলেন, এত টাকা দিয়ে কি করবেন?যদি আমাদেরকে আমাদের পাওনা দেন তাহলে আপনার পেনশনের টাকা একমাসের মধ্যে পাবেন।আমি এত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার ফাইল এক মাস জব্দ করে রেখে দেন।পরে উপান্তর না দেখে ৯০০০০ হাজার টাকা দিয়ে পেনশনের টাকা উত্তোলন করি।
এক পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক জানান আমি কর্মকর্তা মহোদয়কে বেতন ভাতা চালুর জন্য আবেদন করেছি।মহোদয় আমাকে অফিসে দেখা করতে বললে আমাকে ৫০০০০ টাকা দেয়ার বিনিময়ে বেতন ভাতা চালু করবেন বলে জানান।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক জানান, আমি যেমন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক তেমনি আনিসুর রহমান ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক। তাহলে আনিসুর সারাক্ষন অফিসে থাকেন।কিন্তু আনিসুর রহমান এর মূল কর্মস্থল পুরানগর ইউনিয়নে।
মঈনুল এবং ওনার সিন্ডিকেট আমাকে অনেক হুমকি দমকি দিয়েছেন। কিন্তু এ বিভাগের কি সীমাহীন দুর্নীতি এগুলো তদন্ত ছাড়া এবং আপনাদের মিডিয়া ছাড়া এগুলো উদঘাটন করা অসম্ভব।
এ বিষয়ে মঈনুল কে কল করা হলে সাংবাদিক বলার সাথে সাথে লাইন কেটে দেন।অফিস সহকারী আসকর আলীকে কল করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন বলে লাইন কেটে দেন। মর্জিনা বেগম আনিসুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলে কল রিসিভ করেননি।
নাম প্রকাশ করা না শর্তে এক পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও উপ সহকারী মেডিকেল অফিসার জানান,পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ঔষধ মওজুদ এর কথা বলে মঈনুল আমাদের অনেকের কাছ থেকে ২ লাখ টাকার উপরে হাতিয়ে নিয়েছেন। এগুলোর ইন্ধনদাতা অফিস সহকারী আসকর আলী।
পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে অবসরপ্রাপ্ত একাধিক কর্মচারী জানান আমরা মঈনুল কর্মকর্তা দুর্নীতির বিষয়ে অনেকজনের কাছ থেকে শুনেছি। আমরা চায় আমাদের এ বিভাগ আগের অবস্থানে ফিরে আসুক।