Sharing is caring!
লক্ষ্মীপুরের ডাকাতি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব
মোজাম্মেল হক লিটন, নোয়াখালী প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের বসুদৌহিতা গ্রামের কৃঞ্চ লাল দেবনাথের ঘরে ডাকাতি ও তার নাতনী স্কুলছাত্রী স্মৃতিরানী সীমাকে, ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামী রাশেদ (২৯) কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ সিপিসি-৩। ঘটনার পর থেকে গত প্রায় ১০ বছর সে পলাতক ছিল। র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের অধিনায়ক লেঃ মাহমুদুল হাসান জানান, র্যাবের একটি অভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামী রাশেদের অবস্থান নিশ্চিত হয়। ২৮ মে রাত ২টার দিকে শেরপুর জেলার শ্রীবদী থানায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাহমুদুল হাসান আরো জানান গ্রেফতারকৃত আসামীকে বেগমগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৮ জুলাই সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের বসুদৌহিতা গ্রামের কৃঞ্চলাল দেবনাথের ঘরে ২০-২৫ জন মুখোশধারী ডাকাত দল হানা দেয়। তারা ঘরের সবাইকে জিম্মি করে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ পাঁচ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। একই সময় লক্ষ্মণের মেয়ে স্মৃতি রানী সীমাকে ঘরের একটি কক্ষে আটকে গণধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ডাকাত দল। প্রতাবগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সীমা। এ ঘটনায় পরের দিন সীমার দাদা কৃষ্ণ লাল দেবনাথ বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৫ মার্চ ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। জেলা জজ আদালতের রায়
দীর্ঘ শুননী শেষে ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মঞ্জুরুল বাছিদ এর আদালত ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ১৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মানিক হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, সুমন, সোহেল, রাশেদুল ইসলাম, হীরণ, নুর আলম, নুর নবী, চৌকিদার হেদায়েত উল্যা ও আনোয়ার হোসেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম পাঁচজন নিম্ন আদালতের রায়ের সময় পলাতক ছিল। এছাড়া দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানার এ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলছাত্রীর পরিবারকে দেয়ার আদেশ দেয়া হয়। উচ্চ আদালতের রায়
লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্রী স্মৃতিরানী সীমাকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জনের মধ্যে আটজনের দণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন উচ্চ আদালত। হাইকোর্ট আসামি হিরণ, নুর নবী, নুর আলম, হেদায়েত উল্যা হেদু, সাদ্দাম (পলাতক), সুমন(পলাতক), রাশেদ (পলাতক) ও মানিককে (পলাতক) দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। বাকি দুজন আনোয়ার ও সোহেলের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন। ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে ২৮ জানুয়ারী ২০২০ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।