২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

নাগরপুরে হাজী মকবুল হোসেনের তৃতীয় মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।

প্রকাশিত মে ২৫, ২০২৩
নাগরপুরে হাজী মকবুল হোসেনের তৃতীয় মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।

Sharing is caring!

মোঃ শফিকুল ইসলাম সবুজ (টাঙ্গাইল): টাংগাইলের নাগরপুরে বিশিষ্ট শিল্পপতি হাজী মকবুল হোসেনের তৃতীয় মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৪ শে মে নাগরপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নাগরপুর উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মোঃ বাবর আল মামুন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেনের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, নাগরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির, নাগরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল আলীম দুলাল, ত্রান ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ উজ্জল হোসেন মোল্লা, নাগরপুর উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মেহেদী হাসান রয়েল, নাগরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ আজিম হোসেন রতন প্রমুখ। এ-সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেত্রবৃন্দ সহ বিভিন্ন সহযোগিতা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলহাজ্ব মকবুল হোসেন, সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সিটি ইউনিভার্সিটি,যার নামটি বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে একটি ব্র‍্যান্ড হিসেবে পরিগনিত হতো এবং উনার কর্মের মাধ্যমে আরো কয়েক শত বছর উনার নামটি নক্ষত্রের মত জ্বলজ্বল করে জ্বলতে থাকবে। এমন কোন পেশার মানুষ নেই যারা ‘হাজী মকবুল’ বললে চিনতো না।
পদ্মা,ধলেশ্বরী, ও শীতলক্ষ্যা নদী বিধৌত তৎকালীন বিক্রমপুর জেলার (বর্তমান মুন্সিগঞ্জ) টঙ্গিবাড়ি উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের ডুলিহাটা গ্রামে ১৯৫০ সালের ১৫ই মার্চ মোহাম্মদ আলী ও গুলবাহার বেগমের কোল আলোকিত করে পৃথিবীর বুকে আসেন আলহাজ্ব মকবুল হোসেন। আলী গুলবাহার দম্পতির ৭ সন্তানের মধ্যে জনাব মকবুল হোসেন ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ।

আলহাজ্ব মকবুল হোসেন এর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হাতে খড়ি হয় শতবর্ষের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী আড়িয়ল স্বর্ণময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং একই সাথে এই বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷
এরপর তিনি উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজে, জগন্নাথ কলেজে থাকাকালীন সময়ে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আসেন এবং পরবর্তীতে জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
এরপর ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং সেখানেও তিনি সমাজ কল্যাণ ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সভাপতির দায়ীত্ব পালন করেন৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উনার সর্বশেষ ডিগ্রী হচ্ছে এম এ এবং এল এল বি।

রাজনীতির পথচলায় পরিচয় ঘটে টাংগাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা গ্রামের জনাব ফজলুর রহমান ও হাজেরা খানমের একমাত্র কন্যা তৎকালীন ছাত্রলীগ নেত্রী গোলাম ফাতেমা তাহেরা খানম মোনার সাথে যেটা পরবর্তীতে শুভ পরিণয়ে রুপ নেয়। জনাব মকবুল হোসেনের জীবনে মোনা হোসেন এসেছিলেন অনুপ্রেরণা হয়ে,উনার সকল সফলতার পেছনে মোনা হোসেন ছিলেন উজ্জল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে।

এরপর শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ, উনার নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে ৭ই মার্চের ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে জনাব মকবুল হোসেন রণাঙ্গনের একজন যোদ্ধা হিসেবে যোগ দিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে, ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে আমরা পেলাম এক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’।

ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক এবং ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর এর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী সাংসদ এবং পরবর্তীতে আমৃত্যু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য্যনির্বাহী সংসদের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য মনোনীত হন৷

তিনি তার কর্মময় জীবনে বহু প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
তন্মধ্যে শিক্ষানুরাগী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন সিটি ইউনিভার্সিটি, এম.এইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজ,আলহাজ্ব মকবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ,এম.এইচ শমরিতা নার্সিং কলেজ,এম.এইচ শমরিতা ডেন্টাল ইউনিট কলেজ,এছাড়াও ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারের জন্য মুন্সিগঞ্জ,টাংগাইল ও ঢাকায় বেশ কয়েকটা হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন৷
সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র তেঁজগায়ে প্রতিষ্ঠা করেন এম.এইচ শমরিতা হাসপাতাল এবং মুন্সিগঞ্জে মোহাম্মদ আলী গুলবাহার হাসপাতাল।
এছাড়াও তার প্রতিষ্ঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে হাজার হাজার পরিবারের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে, তন্মধ্যে- সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড,পুরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড,পান্না টেক্সটাইল মিলস,এ্যামিকো ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড,মধুমতি ব্যাংক,সন্ধানী ক্রেডিট এন্ড সিকিউরিটিস লিমিটেড,সন্ধানী লাইফ ফাইন্যান্স লিমিটেড,মোনা গ্রুপ অফ গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্টিজ।

উনার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিনি তিলে তিলে নিজ সন্তানের মত পরম মমতায় আগলে রেখে বড় করেছেন।

অন্যন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যে টাকা দিয়ে একজন ছাত্র/ছাত্রী গ্র‍্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেন সে টাকা দিয়ে সিটি ইউনিভার্সিটি হতে দুইজন শিক্ষার্থী গ্র‍্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে পারবে,অন্যন্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কতৃপক্ষ যেখানে উনাদের প্রতিষ্টিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখেন সেখানে আলহাজ্ব মকবুল হোসেন উনার প্রতিষ্ঠিত সিটি ইউনিভার্সিটিকে একটি দাতব্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ভাবতেন।
মূলত প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বলতে শুধু উচ্চবিত্তের এবং উচ্চ মধ্যবিত্তের সন্তানেরা পড়তে পারবে এমনটাই ছিলো অথচ আলহাজ্ব মকবুল হোসেন সেই সংজ্ঞাটাই পালটে দিয়েছেন যার ফলে সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে স্বল্প খরচে মধ্যবিত্ত,নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের সন্তানেরাও গ্র‍্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে পারতেছে৷
তিনি সত্যিকার অর্থেই একজন বিদ্যানুরাগী মানুষ ছিলেন।