১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

ঘূর্ণিঝড় মোখার গতি ২১৫ কিলোমিটার আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছে লক্ষ লক্ষ মানুষ

অভিযোগ
প্রকাশিত মে ১৪, ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় মোখার গতি ২১৫ কিলোমিটার আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছে লক্ষ লক্ষ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার: ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্রে জড়ো হচ্ছে মানুষ।

কক্সবাজার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। জোয়ারের পানির উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, আজ রবিবার (১৪ মে) সকাল ৮টা পর্যন্ত উপকূলের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আরও ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানায়, আজ দুপুরের মধ্যে উপকূলের ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে তিন লাখ মানুষ আশ্রয় নেবে। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ কারণে কক্সবাজার উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে সরিয়ে আনছে স্থানীয় প্রশাসন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা থেকে রক্ষা পেতে শনিবার দুপুর থেকে এ পর্যন্ত ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোখা যেহেতু কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের পাশ ঘেঁষে যাবে সে জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের তিন হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য টেকনাফে চলে এসেছেন। এছাড়া দ্বীপের ৩৭টি হোটেল-রিসোর্টে সাড়ে চার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এই দ্বীপে ১০ হাজার মানুষের বসবাস। কক্সবাজারের ৬৬টি হোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতি।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ আবুল কাসেম বলেন, ‘কক্সবাজারে দুর্যোগপূর্ণ সময়ের কথা বিবেচনা করে আমরা ৬৬টি হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। এতে করে অন্তত অর্ধলাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোঃআব্দুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের দুই দিক থেকে যেহেতু খোলা রয়েছে এবং পানি চলাচলের সুবিধা আছে, তাই বড় ধরনের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওই অঞ্চলে পানি জমে থাকবে না। আবহাওয়া অফিস থেকে প্রতি মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় মোখার সব আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে।’
কক্সবাজার জেলায় ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবির রয়েছে। এসব ক্যাম্পে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান।
জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিসিপি) আট হাজার ৬০০ জন এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির দুই হাজার ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। সেন্টমার্টিনে থাকা সরকারি স্থাপনাগুলো সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগকালীন সহায়তার জন্য ২০ লাখ নগদ টাকা রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ৫ দশমিক ৯০ মেট্রিক টন চাল, ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩ দশমিক ৪ মেট্রিক টন শুকনা কেক, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন ও ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে। জেলায় ৬৩৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে, সেগুলোতে পাঁচ লাখ পাঁচ হাজার ৯৯০ জন মানুষ থাকতে পারবে বলে জানা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media
June 2023
T W T F S S M
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930