Sharing is caring!
স্টাফ রিপোর্টার : নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ এনে সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার উত্তরা মোড় এলাকার একটি সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন তিনি। ওই সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী বাদলও উপস্থিত ছিলেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই কাজ বন্ধ করে দেন বলে জানালেন উপজেলা পরিষদের ওই চেয়ারম্যান।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার উত্তরা মোড় থেকে আন্দি গ্রামের পুকুরপাড় পর্যন্ত দুই কিলো ৮০০ মিটার সড়কের পাকা সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের এ কাজটি পান টাঙ্গাইল শহরের মোল্লা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি কিনে বাস্তবায়ন করছেন মেসার্স হাসিব এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি শুরুর পর থেকেই কাজের মান নিয়ে এলাকাবাসী সন্তুষ্ট ছিলেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, মেসার্স হাসিব এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ বাদল মিয়া মূল ঠিকাদারকে ২০ লাখ টাকা লাভ দিয়ে কাজটি কিনে এনেছেন। এছাড়াও বাদল মিয়া স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী হওয়ায় সিডিউল মোতাবেক কাজটি করছেন না। সড়কে খুবই নিম্নমানের বিটুমিন ও পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল তালুকদার বলেন, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় বিষয়টি বারবার ঠিকাদারকে জানালেও তিনি তোয়াক্কা করেননি। পরে আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি আজ সড়ক নির্মাণের কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন।
এলজিইডির উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল জলিল বলেন, ‘ ৫০ কেজি বিটুমিন আগে ছিল ৭০০ টাকা। দাম বেড়ে এখন সেটা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা। নির্মাণ শ্রমিকের দামও বেড়েছে। তারপরেও কাজটি ক্রয় করা। তারপরেও কাজটি যাতে ভালো হয় সেজন্য আমরা সব সময় তদারক করছি।
নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসিব এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. বাদল মিয়া বলেন, আগের ঠিকাদার কাজটি করতে চায়নি। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সংসদ সদস্যের অনুরোধে কাজটি আমি করছি। আগে নির্মাণসামগ্রীর দাম কম ছিল, এখন দাম বেড়েছে। কাজটি শেষ করতে আমার অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে। মাননীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। আমি সংসদ সদস্যের অনুসারী হওয়ায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে তিনি আমার কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিদ্যুৎ কুমার দাস ছুটিতে থাকায় এ ব্যাপারে সখীপুরের ইউএনও ফারজানা আলম বলেন, আমি শুনেছি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন। কাজটি যাতে সিডিউল মোতাবেক হয় এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল লেবু বলেন, শুরু থেকেই ঠিকাদার দরপত্র অনুযায়ী সড়কটির নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে করছেন না। ঠিকাদারকে একাধিকবার জানালেও তিনি আমাকে তোয়াক্কাই করছেন না। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজটি আপাতত সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার সঠিক নিয়মে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলে আবার কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে।