চট্টগ্রাম ডেস্ক:
চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেছেন, টিউবারকুলোসিস (টিবি) বা যক্ষা শুধু ফুসফুসের ব্যাধি নয়। এটি বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক ব্যাধি যেটা মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আন্তরিকতার কারণে দেশের হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে যক্ষা রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসা-সেবা পাচ্ছে। সরকারী হাসপাতালগুলোতে যক্ষা রোগের পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা সামগ্রীও রয়েছে। এ ব্যাপারে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। পরিবারে যক্ষা রোগী থাকলে শিশুসহ অন্য সবাইকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বিত উদ্যোগের ফলে যক্ষা নির্মূল সম্ভব। আজ ২৩ মার্চ ২০২৩ ইংরেজি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত বিশ্ব যক্ষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘হ্যাঁ! আমরা যক্ষা নির্মূল করতে পারি!’। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর সহযোগিতায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন অফিস ও সহযোগী সংস্থা সমূহ যৌথভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সভার পূর্বে বেলুন উড়িয়ে বিশ্ব যক্ষা দিবস-২০২৩ এর শুভ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি ও সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এরপর দিবসটি উপলক্ষে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি আন্দরকিল্লা হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে পূনঃরায় সিভিল সার্জন অফিসের সামনে এসে শেষ হয়।
ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, মস্তিস্ক থেকে শুরু করে ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি ও হাড়সহ শরীরের যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে যক্ষার সংক্রমণ হতে পারে। যক্ষা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। ফুসফুসে যক্ষার জীবাণু সংক্রমিত হলে টানা কয়েক সপ্তাহ কাশি ও কফের সাথে রক্ত যায়। আমাদের এমন কোন অঙ্গ নেই যেখানে যক্ষা হয়না।সভাপতির বক্তব্যে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার একটি অংশ জন্মগতভাবে যক্ষা রোগের জীবাণু বহন করে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি। পরিবেশ দূষণ, দরিদ্রতা, মাদকের আসক্তি ও অপুষ্টি যক্ষার হার বাড়ার অন্যতম কারণ। এ রোগের লক্ষণ দেখা দিলে ভয় না করে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তাহলে নির্দিষ্ট সময়ে এ রোগ পুরোপুরি সেরে যাবে। এখন যক্ষা হলে রক্ষা মেলে।
তিনি বলেন, নিয়মিত, ক্রমাগত সঠিক মাত্রায় ও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওষুধ সেবন করলে যক্ষা ভালো হয়। কোভিডকালীন সময়ে যক্ষা কার্যক্রম সাময়িক ব্যাহত হলেও ২০২২ সালে সে অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রেখে ২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সারাদেশে সরকারী হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সাধারণ জনগণ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি যক্ষা রোগীদের জন্যও সারাদেশে নির্ধারিত কিছু হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে যক্ষা রোগীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকার বহন করছেন।জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২২ সালে চট্টগ্রাম জেলায় সর্বমোট ১৫ হাজার ৯৯১ জন যক্ষা রোগী সনাক্ত হয়। তন্মধ্যে ক্যাটাগরি-১ অনুযায়ী যক্ষা রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৩৩ জন ও পূনঃ আক্রান্ত যক্ষা রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৮ জন। এখানে ৬৬৬ জন শিশু যক্ষা রোগীও রয়েছে। সনাক্তকৃত মোট যক্ষা রোগীর মধ্যে ফুসফুস আক্রান্ত যক্ষা রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৫৪৫ জন ও ফুসফুস বর্হিভূত যক্ষা রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৪৪৬ জন। চট্টগ্রাম জেলায় চিকিৎসাপ্রাপ্ত যক্ষা রোগীদের মধ্যে সাফল্যের হার ৯৭ শতাংশ এবং সনাক্তকৃত যক্ষা রোগীদের মধ্যে ৬ হাজার ৩৯৬ জনের এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের সহকারী
পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সুমন বড়ুয়া, চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গোলাম মোস্তফা জামাল, বিভাগীয় টিবি এক্সপার্ট (এনটিপি) ডা. বিপ্লব পালিত, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মোঃ নুরুল হায়দার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফএম জাহিদ ও নাটাব’র সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মোঃ নওশাদ খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডিএসএমও ডা.আবদুল্লাহ-হির-রাফি-অঝোর। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার গাজী মোঃ নূর হোসেন, ব্র্যাক’র ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মমতা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার এস.এম আরিফ. এসএমসি’র ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর মোঃ ফাইজুর রহমান, নিস্কৃতির প্রোগ্রাম অফিসার মাহমুদুল ইসলাম অপু প্রমূখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন এনজিও সংস্থা-ব্র্যাক, মমতা, ইমেজ, নিস্কৃতি, আইসিডিডিআরবি, আশার আলো, নাটাব, আইআরডি, বাডার্স, আশার আলো সোসাইটি, এসএমসি ও লেপ্রসি মিশন।
<p>ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ।<br>সহকারী সম্পাদক-নাসরিন আক্তার রুপা।<br>বার্তা সম্পাদক-মোঃ জান্নাত মোল্লা।<br>প্রধান উপদেষ্ঠা: আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মওলা নকশে বন্দী ।<br><br>প্রকাশ কর্তৃক : এডভানসড প্রিন্টং - ক-১৯/৬, রসুল বাগ, ঢাকা। মহাখালী ঢাকা হতে মুদ্রিত এবং ১৭৮, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা-১২১৭ হতে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ অফিসঃ ৩৮৯ ডি আই.টি রোড (৫ম তলা) পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯ ,<br>মোবাইল: - ০১৮৮৩২২২৩৩৩,০১৭১৮৬৫৫৩৯৯</p><p>ইমেইল : abhijug@gmail.com ,</p>
Copyright © 2024 Weekly Abhijug. All rights reserved.