২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

থানায় আটকে রেখে যুবককে ‘নির্যাতন’, ২ পুলিশের নামে মামলা

অভিযোগ
প্রকাশিত মার্চ ২০, ২০২৩
থানায় আটকে রেখে যুবককে ‘নির্যাতন’, ২ পুলিশের নামে মামলা

থানায় আটকে রেখে যুবককে ‘নির্যাতন’, ২ পুলিশের নামে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে আবদুল আহম্মদ রুবেল নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে থানা পুলিশ হেফাজতে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পরিদর্শক (তদন্ত) ও সহকারী উপ পরিদর্শকসহ (এএসআই) তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবদুলের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন। আবদুল আহম্মদ সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের লিল মিয়ার ছেলে। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- বাঞ্ছারামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আল আমিন মানিক ও উপজেলার মধ্যপাড়ার রবি উল্লাহ। মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার তিন নম্বর আসামি রবি উল্লাহ সঙ্গে আবদুল আহম্মদের পরিবারের লোকজনের পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছে। রবি উল্লাহর বিরুদ্ধে তারা আদালতে মামলাও করেছেন, যা চলমান রয়েছে। মামলার কারণে রবি উল্লাহ আবদুল ও পরিবারের লোকজনকে ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজে আসছেন। একপর্যায়ে গত ১৪ মার্চ রবির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এএসআই আল আমিন সাদা পোশাকে চার পুলিশ সদস্য নিয়ে আবদুল আহাম্মদকে গ্রেফতার করেন। ঘটনাস্থলে তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথিসহ লাঠি দিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে জখম করেন তারা। একপর্যায়ে আবদুল আহম্মদকে বাড়ি থেকে তুলে থানায় নিয়ে যান। রবি উল্লাহর কথামতো পুলিশ পরিদর্শক তরুণ কান্তি দে ও এএসআই আল থানায় দফায় দফায় কাঠের রুল ও লাঠি দিয়ে আবদুল আহাম্মদকে মারধর করেন। সেখানে তার ওপর পুলিশি নির্যাতন করা হয়। মারধরের কারণে আবদুল আহাম্মদের পুরো শরীরে মারাত্মক জখম হয়। গত ১৪ মার্চ বিকেলে গ্রেফতার করলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবদুলকে আদালতে পাঠাননি পুলিশ। থানায় শারীরিকভাবে নির্যাতন অব্যাহত রাখলে আবদুল আহাম্মদের মা সাংবাদিক সম্মেলনের প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি জেনে দুই পুলিশ সদস্য তড়িঘড়ি করে ১৬ মার্চ দুপুর ২টার দিকে আবদুলকে একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালতের পুলিশ সদস্যরা শরীরে জখম দেখে আবদুলকে গ্রহণ না করে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। সে সময় আদালতে যাওয়া কয়েকজন পুলিশ কনস্টবল পুলিশ পরিদর্শক ও এএসআইয়ের পরামর্শে আবদুলকে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে বিকেল ৩টার দিকে তাকে পুনরায় আদালতে নেয়া হয়। আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আবদুল আহাম্মদের মা ও মামলার বাদী আমেনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলেকে ১৪ মার্চ গ্রেফতার ও ১৬ মার্চ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার অধিক সময় নিজের হেফাজতে রেখে আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছে পুলিশ। আমি এই মামলায় জুডিসিয়াল তদন্তের দাবি জানাই। বাদী পক্ষের আইনজীবী মাসুদুর রহমান জানান, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ধারায় দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আদেশ দেয়ার জন্য রেখেছেন। আগামীকাল সোমবার (২০ মার্চ) আদেশ দিতে পারেন আদালত। এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আদালতে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এর বেশি এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30