Sharing is caring!
এবার বয়স্কদের চিকিৎসা সেবায় আসছে রোবট
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাদা রঙের ‘গার্মি’ নামের রোবটটি দেখতে অনেকটা মানুষের মতোই। বাইরে থেকে গতানুগতিক রোবটের চেয়ে খুব বেশি আলাদা বলে মনে হবে না। রোবটটির মুখের দিকটায় কালো একটি স্ক্রিন বসানো। এর ভেতরে থাকা দুটি নীল বৃত্ত চোখ হিসেবে কাজ করছে। সবমিলিয়ে গার্মি আর দশটা রোবটের মতোই। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত জার্মান চিকিৎসক গুন্টার স্টেইনবাখের (৭৮) কাছে এটি স্বপ্নের মতো। বার্তা সংস্থা এএফপির মতে, গার্মি কেবল গুন্টার স্টেইনবাখ নয় তার মতো আরও অনেকেরই কাছে স্বপ্নের মতো। কারণ একটি দেখতে সাধারণ রোবটের মতো দেখতে হলেও এটি মানুষের রোগ নির্ণয় করতে পারে এবং সেই অনুপাতে চিকিৎসা দিতে এমনকি যত্নও নিতে পারে।
জেরিয়াট্রনিকস নামে ইলেকট্রনিকসের নতুন শাখার পণ্য গার্মি। যেটিকে জেরিয়াট্রিকস (বয়স্কদের ওষুধ ও পরিচর্যাসংক্রান্ত চিকিৎসাবিজ্ঞান), জেরোন্টোলজি (বার্ধক্যসম্পর্কিত চিকিৎসাবিজ্ঞান) এবং নার্সিংয়ের কাজে লাগানো হচ্ছে। জেরিয়াট্রনিকসে রোবোটিকস, আইটি ও থ্রিডি প্রযুক্তির মতো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
মিউনিখ ইনস্টিটিউট অব রোবোটিকস অ্যান্ড মেশিন ইন্টেলিজেন্সে স্টেইনবাখের মতো চিকিৎসকদের সহযোগিতায় ‘গার্মি’ রোবটটি তৈরি করা হয়েছিল। মিউনিখের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির অংশ এই ইনস্টিটিউটটি তার জেরিয়াট্রনিকস বিশেষায়িত শাখাটি স্থাপন করেছে জার্মান স্কি রিসোর্ট গারমিশ-পারটিনকিয়েসেনে।
ডাক্তার গুন্টার স্টেইনবাখের ভাষ্যমতে, ‘আমার কাছে এই রোবট স্বপ্নের মতো। গার্মি কেবল রোগীদের রোগ নির্ণয় করতেই সক্ষম নয় এটি তাদের যত্ন নিতে ও চিকিৎসাও দিতে পারে।ইউরোপের সবচেয়ে জনবহুল দেশ জার্মানি। বিশ্বের যেসব দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বাড়ছে দেশটি তাদের একটি। সেবাগ্রহীতা মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় ২০৫০ সাল নাগাদ দেশটিকে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার পরিচর্যাকর্মী নিয়োগ দিতে হবে। বর্তমানে নার্স, পরিচর্যাকর্মী ও চিকিৎসকদের দেয়া কিছু সেবা যাতে রোবটের মাধ্যমে দেওয়া যায় সে লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির গবেষকেরা। তারই ফলাফল গার্মি।
এ গবেষণার শীর্ষ বিজ্ঞানী আবদেলজলিল নাসেরি (৪৩) বলেন, ‘আজকাল আমরা এটিএম মেশিন থেকে টাকা তুলতে পারি। একই মডেলের ওপর ভিত্তি করে আমরা স্বপ্ন দেখতে পারি, লোকজন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একধরনের প্রযুক্তি কেন্দ্রে যাবে। এরপর রোবটের করা রোগ নির্ণয়ের ফলাফল দূর থেকেই মূল্যায়ন করতে পারবেন চিকিৎসকেরা। এতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন অনেক বেশি উপকৃত হবে।