
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যেসব কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে পরিবার
শেখ তিতুমীর রিপোর্ট পিআইডি : যার উদাত্ত আহ্বান, লক্ষ-কোটি মানুষের চোখে এনে দিয়েছে স্বাধীন মাতৃভূমির স্বপ্ন। পরাধীনতার শিকল ভেঙে, নিশ্চিত মৃত্যুকে তুচ্ছ করে যিনি এ জনপদে রচনা করেন বিস্ময়কর ইতিহাস। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন এক স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম হলেও, স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্র আর এ দেশীয় এক শ্রেণির ক্ষমতালিপ্সু কিছুতেই তা মেনে নিতে পারছিল না। তাই মাত্র চার বছরের মাথায় বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে স্বাধীনতা, দেশ প্রেম, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে মুছে ফেলতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে। খুনিদের সাজার আওতায় আনা তো দূরে থাক, তাদের রক্ষা করে বিচার বন্ধ করতে ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। বিদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয় খুনিদের। তাদের পরিচয় গোপন করার অপচেষ্টাও চলতে থাকে বছরের পর বছর। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানও ক্ষমতা দখল করে বৈধতা দেয় কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে। সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই থেমে থাকেনি খুনি ও তাদের দোসররা। একদিকে বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি চালু রাখেন মোশতাক ও জিয়াউর রহমান, বিদেশি মিশনগুলোতে দায়িত্ব পায় ঘাতকরা; অন্যদিকে দেশে থাকা খুনিদের পরিবার নিপীড়নের জন্য বেছে নেয় বঙ্গবন্ধু পরিবারের তিন কনিষ্ঠ সদস্য সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে। একপর্যায়ে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হন বঙ্গবন্ধু পরিবারের তিন সদস্যই। মাতৃভূমি ছেড়ে পাড়ি জমাতে হয় বিদেশ-বিভুঁইয়ে। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, তখন খুব কঠিন সময় গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের ছেলে -মেয়েরা, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ছেলে-মেয়েরা আমাদের ওপর নির্যাতন চালাত। রাদওয়ান মুজিব জানান, তাকে বেশ কয়েকবার স্কুল বদলাতে হয়েছে শুধু শত্রুদের হাত থেকে বাঁচতে। এরপর বিচারের জন্য দীর্ঘ ৩৫ বছর অপেক্ষা। জাতির কলঙ্কমোচনের পর্ব শুরু হয় ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মধ্যদিয়ে। আর তার আগে জনগণ তাদের অভিভাবক হিসেবে নির্বাচিত করেছে জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরি তার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, মানুষের হাসিমুখ, আর কন্যার নেতৃত্বেই যেন বেঁচে আছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা। তাই ৫৬ হাজার ৯৭৭ বর্গমাইলজুড়ে মাথা উচুঁ করে লাল-সবুজের যে নিশান উড়ছে, তা প্রতিক্ষণে জানান দিচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমান মানেই বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানেই শেখ মুজিবর রহমান।