২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা সেতুর আরো ৫টি স্প্যান বসানোর অপেক্ষায়

admin
প্রকাশিত আগস্ট ১৭, ২০১৯
পদ্মা সেতুর আরো ৫টি স্প্যান বসানোর অপেক্ষায়

Sharing is caring!

আফিয়া আশ্রাব বাধঁন,মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

মাওয়ায় পদ্মা সেতুর ৫টি স্প্যান বসানোর অপেক্ষায় রয়েছে। বর্ষা চলে গেলে ধুমসে স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হবে। মাওয়ায় একেবারে তৈরি রয়েছে আরও পাঁচটি স্প্যান। আগস্টের শেষ দিকে মাওয়া ও জাজিরার মাঝামাঝি ২৪, ২৫ খুঁটিতে ১৫তম স্প্যানটি বসানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে তৈরি ৫টি স্প্যানই বসার সম্ভাবনা রয়েছে। এখনও স্প্যান বসানোর তারিখ নির্দিষ্ট না হলেও সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে। সেপ্টেম্বরে একাধিক স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে। সেতুটির ৪১টি স্প্যানের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪টি স্প্যান বসে গেছে। চীন থেকে মোট ২৭টি স্প্যান মাওয়ার কুমারভোগের বিশেষায়িত কারখানায় এসে পৌঁছেছে। কয়েক দিন আগে দুটি স্প্যান মাওয়ার কুমারভোগের বিশেষায়িত কারখানায় এসে পৌঁছে। আরও একটি স্প্যান চীন থেকে বাংলাদেশের পথে সমুদ্রে রয়েছে বলে দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী জানিয়েছেন। বাকি স্প্যান চীনে তৈরি করে রাখা হয়েছে। শীঘ্রই বাকি স্প্যানও মাওয়ায় এসে পৌঁছাবে।
দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে রোডওয়ে ও রেলওয়ে স্লাব তৈরির কাজ। পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। জাজিরা প্রান্তে সেতুর ভায়াডাক্টে (সেতুর গোড়া) রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ চলছে। ইতোমধ্যে জাজিরা প্রান্তে এ পর্যন্ত ৩৯টি রোডওয়ে স্ল্যাব ও ৩২২টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে। জাজিরা প্রান্তে এ পর্যন্ত ১০টি ‘সুপার টি’ উঠানো হয়েছে। বাকিগুলো উঠানোর কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তে ৪২টা ‘আই গার্ডারের’ সব উঠে গেছে। তবে মাওয়া প্রান্তে এখনও ‘সুপার টি’ বা ‘আই গার্ডার’ বসানো শুরু হয়নি। জাজিরা প্রান্তে ২৩৪টি ‘টি-গার্ডার’ বসানো হবে। মাওয়া প্রান্তে ২০৪টি ‘টি-গার্ডার’ বসানো হবে।
পদ্মা সেতুতে নদীতে বিদ্যুত বিভাগের ৭টা খুঁটি বসানোর কাজ এগিয়ে চলেছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের সঙ্গে এই বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের চুক্তি হয়। জাজিরা প্রান্তে বিদ্যুতের ৭নং খুঁটিতে পাইলিং শুরু হয়েছে। এখানে বিদ্যুতের জন্য পদ্মায় ৭টা খুঁটি বসবে। ৭নং খুঁটিতে ৬টি পাইল বসবে। ৭ খুঁটিতে মোট পাইল বসবে ৩৬টি। ইতোমধ্যে ২টা পাইলের বটম সেকশনের টাওয়ার ৭ ও টাওয়ার ৮ এর কাজ হয়েছে। পদ্মা সেতুর ২৪০০ এবং ৩৫০০ কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামার দুটি এ পাইলিংয়ের কাজ করছে।
পদ্মা সেতুর দুপ্রান্তেই চলছে প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সেতুর (ভায়াডাক্ট) কাজ। ভায়াডাক্ট জাজিরা প্রান্তের ৪২টা পিয়ারের মধ্যে ৩৯টা পিয়ারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৩টা পিয়ারের কাজ শেষের পথে। আর মাওয়া প্রান্তে ৩৯টা পিয়ারের মধ্যে ১৩টা পিয়ারের কাজ চলছে। বাকি ২৬টা পিয়ারের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে এসব পিয়ারের কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী।
৪২টি পিয়ারের ওপর ৪১টি স্প্যানে গড়ে উঠবে পুরো পদ্মা সেতু। দায়িত্বশীল প্রকৌশলী আরও জানিয়েছেন তীব্র স্রোত থাকা সত্ত্বেও ১১টি খুঁটিতে ঢালাইয়ের কাজ চলছে। বাকি ৩১ খুঁটি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ১৪টি স্প্যান বসানোর পর পদ্মা সেতুর ২ হাজার ১০০ মিটার এখন দৃশ্যমান।
ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর ২৯৪টি পাইল বসে গেছে। পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৩১টি পিলারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন বাকি ১১টি খুঁটির ঢালাইয়ের কাজ চলছে। খুঁটিগুলো আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠছে। চলতি ২০১৯ সালের মধ্যে সব খুঁটির কাজ স¤পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানান।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কো¤পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। তাই আশা করা হচ্ছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।