৮ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি

ইউটিউবে ভিডিও দেখে একটি স্পোর্টস কার বানিয়েছেন আব্দুল আজিজ

অভিযোগ
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
ইউটিউবে ভিডিও দেখে একটি স্পোর্টস কার বানিয়েছেন আব্দুল আজিজ

ইউটিউবে ভিডিও দেখে একটি স্পোর্টস কার বানিয়েছেন আব্দুল আজিজ
——————————————
স্টাফ রিপোর্টারঃ ইউটিউবে ভিডিও দেখে একটি স্পোর্টস কার বানিয়েছেন আব্দুল আজিজ নামের ময়মনসিংহের এক গ্যারেজ মিস্ত্রি। বাহ্যিকভাবে তার গাড়িটি দেখতে হুবহু ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০ মডেলের মতো।
এটি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। ১৫ লাখ টাকা খরচ করে শখের বশে গাড়িটি বানিয়েছেন আব্দুল আজিজ।
আব্দুল আজিজ ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার শাহাদত মোটর ওয়ার্কশপে মিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের জাকনীপুর গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ওয়ার্কশপে মিস্ত্রির কাজ করেন আজিজ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি আব্দুল আজিজের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তারপরও দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেই গাড়ি বানানোর পরিকল্পনা করেন। ইউটিউবে ভিডিও দেখে বিশ্বখ্যাত স্পোর্টস কার ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০ মডেলের গাড়ি তৈরির কাজে হাত দেন এই গ্যারেজ মিস্ত্রি। গাড়িটির বাহ্যিক দিকের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলেও ভেতরে এখনো কিছু কাজ বাকি। গাড়িটি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম।

আব্দুল আজিজের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২১ সালের শেষ দিকে টয়োটা স্টারলেট পুরোনো গাড়ি সংগ্রহ করেন। সেই গাড়ির বাইরের অংশ বাদ দিয়ে ল্যাম্বরগিনি মডেলের গাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন। এরপর দীর্ঘ ১৫ মাসের প্রচেষ্টায় গাড়টি বাস্তবে রূপ নেয়। গাড়িটি বাস্তবে রূপ দিতে ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে ব্যাংক থেকে ১১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন।
তবে চাইলেও গাড়িটি এ দেশের রাস্তায় চালাতে পারবেন না এ ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি। কারণ আমাদের দেশে এটি চালানোর অনুমতি নেই।

এ বিষয়ে আব্দুল আজিজ বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ মাস শ্রম দিয়ে একটা গাড়ি তৈরি করে যদি এটাকে রাস্তায় না চালাতে পারি তাহলে আমার পরিশ্রম বৃথা। গাড়িটি তৈরি করতে আমার ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সরকার যদি আমাকে সহায়তা না করে তাহলে আমি পথের ফকির হয়ে যাবো। সরকার সহায়তা করলে আমি কোনো ব্র্যান্ডের আদলে নয়, আমাদের নিজস্ব ডিজাইনের গাড়ি তৈরি করতে পারবো।’

নগরীর শেওরা মুন্সিবাড়ি থেকে ব্যবসায়ী নাছির সোহেল চৌধুরী টিংটু তার ছেলেকে নিয়ে গাড়িটি দেখতে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে মোবাইলে গেম খেলার কারণে এই গাড়িটির সঙ্গে পরিচিত। গাড়ি তৈরির ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হওয়ায় দেখতে এসেছি। গাড়িটি দেখে আমার মনে হয়েছে আব্দুল আজিজের মেধা আছে। তিনি সুযোগ পেলে আরও ভালো কিছু করে দেখাতে পারবেন।’

মাসকান্দা আমিরাবাদ থেকে গাড়িটি দেখতে এসেছেন খোকন মিয়া। তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকেই গাড়িটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টিভিতে দেখেছি। এমন গাড়ি তো দেশে তৈরি হয় না। তাই গাড়িটি দেখতে এসেছি।

ত্রিশাল উপজেলার সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘গাড়িটি বাস্তবে দেখা ও এতে ওঠার ইচ্ছা ছিল। তাই ত্রিশাল থেকে এসে গাড়িটি দেখে গেলাম। আমি মনে করি, আব্দুল আজিজ একজন মেধাবী মানুষ। সরকারের উচিত তাকে সুযোগ দেওয়া।’
শাহাদত মোটর ওয়ার্কশপের মালিক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আব্দুল আজিজ দীর্ঘদিন ধরে আমার গ্যারেজে কাজ করে আসছেন। তার এই গাড়ি তৈরিতে আমি আর্থিক সহায়তা করতে না পারলেও উৎসাহিত করেছি। এখন সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকার যেন গাড়িটির রোড পারমিট দেয় ও তাকে সহায়তা করে। তাহলে সে আরও উন্নতমানের গাড়ি তৈরি করতে পারবে।

Please Share This Post in Your Social Media
June 2023
T W T F S S M
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930