Sharing is caring!
সৌমেন সরকার, ক্রাইম নিউজ এডিটর, চট্টগ্রাম জেলা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি। তবে এমন কর্মসূচিকে ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ উল্লেখ করে পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হক এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনের ডাক দেন। পরে সাধারণ সম্পাদক নিজের সাক্ষরিত আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। সভাপতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে গড়িমসি এবং শিক্ষক নিয়োগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতির অভিযোগ ও চারুকলা ইন্সটিটিউটে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে চরম ব্যর্থতার অভিযোগ উঠে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগামী (১৬ জানুয়ারি) সোমবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে শিক্ষক সমিতি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কার্যনিবাহী পরিষদের অনুষ্ঠিত সভার তিন নম্বর আলোচ্যসূচির অধীনে গৃহীত সিদ্ধান্ত সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী শিক্ষক সমিতির অব্যাহত দাবি সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটে বিভিন্ন ক্যাটাগরির শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন না করে চরম ভারসাম্যহীন একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া, এক বছরের অধিক সময় ধরে পদোন্নতির জন্য আবেদনকৃত বেশ কিছু শিক্ষকের পদোন্নতি বোর্ড সভা সম্পন্ন না করে বারংবার সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের ব্যাপক হয়রানি ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের মতো ক্ষতিসাধন করা, শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক অনিয়ম ও অসংগতির ব্যাপারে প্রকাশিত সংবাদ বা অভিযোগকে আমলে নিয়ে তথাকথিত নিয়োগ বাণিজ্য চক্র বা নিয়োগ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়া এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম একটি সৃষ্টিশীল কার্যক্রম চর্চা কেন্দ্র চারুকলা ইন্সটিটিউটে প্রায় আড়াই মাস ধরে চলমান অচলাবস্থা নিরসনের ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে চরম প্রশাসনিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় মাননীয় উপাচার্যের প্রতিশ্রুতি এবং শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এবং ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ও ৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে কার্যকরী সভায় সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধকে গুরুত্ব না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কর্তৃক এই মানববন্ধন কর্মসূচি অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছি। দাবি আদায়ের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যই হঠাৎ করে এই কর্মসূচি ডাকা হয়েছে।
আরো বলা হয়, শিক্ষক সমিতি গঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করর জন্য। কোন অবস্থায় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করা নয়। সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক এবং সদস্যদের পাশ কাটিয়ে একক সাক্ষরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি যেসব সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠের নামে যে হীন প্রক্রিয়ায় প্রচার করে চলেছেন তা শিক্ষক সমিতির ইতিহাসে বিরল। এহেন বিতর্কিত কার্যকলাপের মাধ্যমে শিক্ষক সমিতির মর্যাদাকে হেয় করেছেন যার দায়ভার তিনি এড়াতে পারেন না।উল্লেখ্য, চবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।