Sharing is caring!
সাতকানিয়া প্রতিনিধি
মোহাম্মদ হোছাইন
সাতকানিয়ার পূর্ব বিরোধীদের জেরে রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী হামলায় মো. মহিউদ্দিন (৩৫) নামে এক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গুরুতর আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে এগারোটার দিকে উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড হাঙ্গর মুখ বাজারের পূর্ব পাশে গুইন্যার বাপের বাড়ীর ঘাটাই এ ঘটনা ঘটে। হামলায় মহিউদ্দিনের মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছে। রড ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙে দেওয়া হয় বলে জানা যায়। মহিউদ্দিন নলুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এবং ৫ নং ওয়ার্ড মালির বাপের বাড়ি এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ মোরশেদ ও রিয়াজ নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন।
এ ব্যাপারে গুরুতর আহত মহিউদ্দিন মুঠো ফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, আমার বাড়ির পার্শ্ববর্তী সাঁচির পাড়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পথে মেম্বার মোর্শেদ, জামশেদ, ফাহিম, জোবায়ের, টাইগার ফারুক, শহীদ ও সুজনসহ ৯/১০ জনের একটি দল আমার গতি রোধ করে আমাকে বাগানে নিয়ে যেতে চাই। এদের মধ্যে কয়েকজন মুখোশ পরিহিত ছিল। তখন জামশেদ ও মোরশেদের হাতে থাকা লম্বা বন্দুক আমার বুকে ঠেকিয়ে তারা বলে, কেন আমি মামলা করেছি। তখন তাদের পাশে থাকা একজন প্রথমে আমাকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সেটি আমি হাত দিয়ে ঠেকাই।দ্বিতীয় বার মাথায় লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। সেখানেও তারা লোহার রড ও হকি স্টিক দিয়ে আমাকে বেধরক পিটিয়ে আমার হাত-পা ভেঙে দেয়। আমার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। তখন তারা (সন্ত্রাসী) এ ঘটনায় কেউ সাক্ষী দিলে তাদের ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তারা বীর দর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয় ও আমার স্বজনরা ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে কেরানীহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে আমার অবস্থা খারাপ দেখে চিকিৎসকরা আমাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
মহিউদ্দিন আরও জানান, বিগত ইউপি নির্বাচনে মেম্বার পদে আমি ও মোরশেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ভোটে আমি হেরে যায়। নির্বাচনের সময় তাদের নাকি ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এ টাকা মোরশেদকে ফেরত দিতে হবে। এতে আমি অসম্মতি জানালে মোরশেদের লোকজন আমাকে এর আগে অনেকবার হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়েছিল। কিছুদিন আগেও এ ঘটনার প্রধান অর্থের যোগানদাতা ও মোরশেদের মামা সৌদি প্রবাসী মিন্টুও ফোন করে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিয়েছে টাকা দেওয়ার জন্য। একাধিক হামলাও চালানো হয় আমার উপর। নির্বাচনের পরদিন মিন্টুর নেতৃত্বে বাড়িতে অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি করা হয়। তখন হামলা করে আহত করা হয় আমিসহ আমরা তিন ভাইকে। গত ১৩ আগস্ট রাতেও বাড়িতে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয় আমাকে। এসব ঘটনায় থানায় ৩টি মামলাও হয়েছে। এ মামলাগুলোতে সম্প্রতি মিন্টু বাহিনীর ক্যাডার টাইগার ফারুক জামিনে মুক্ত হয়েছে। অন্যরা এখনও পলাতক।সাতকানিয়া থানার ওসি তারেক মো. আবদুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন বলেন, এ ঘটনায় আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে থানায় মামলা হয়েছে। মোরশেদ ও রিয়াজ নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে