২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

কাছ থেকে চাঁদ দেখে রোববার ফিরছে ওরিয়ন

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৯, ২০২২
কাছ থেকে চাঁদ দেখে রোববার ফিরছে ওরিয়ন

Sharing is caring!

প্রায় এক মাসের মহাকাশযাত্রা শেষে রোববারে পৃথিবীতে ফিরছে আর্টেমিস ওয়ান মিশনের স্পেসক্র্যাফট ওরিয়ন। রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার পর ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলের সমুদ্রপৃষ্ঠে নেমে আসবে মহাকাশযানটি।

১৬ নভেম্বর আর্টেমিস ওয়ান উৎক্ষেপণের পর থেকে ২৬ দিনে পারফর্মেন্সের বিচারে নাসার প্রকৌশলীদের প্রত্যাশা পূরণ করেছে ওরিয়ন। রোববার পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে বলেই আশা করছেন আর্টেমিস ওয়ান দলের সদস্যরা।

আর্টেমিস মিশনের ব্যবস্থাপক মাইক সারাফিন বৃহস্পতিবারের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমরা অসতর্ক হচ্ছি না। আমাদের সামনে বেশ কিছু কঠিন কাজ আছে।”

মহাকাশবিষয়ক সাইট স্পেসডটকম লিখেছে, আর্টেমিস ওয়ান মিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হচ্ছে ফিরতি যাত্রায় ওরিয়নের গতি। রোববারে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় মহাকাশযানটির গতি থাকবে কম-বেশি ঘণ্টায় ২৫ হাজার মাইল, যা শব্দের গতির চেয়ে ৩২ গুণ বেশি।

বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় ওরিয়নের বাইরের স্তরের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছাবে যা সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রার প্রায় অর্ধেক। ফিরতি পথে ওরিয়নের ‘হিট শিল্ড’-এর মহাকাশযান এবং এর অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ নিরাপদ রাখার সক্ষমতা যাচাই করা আর্টেমস ওয়ান মিশনের অন্যতম লক্ষ্য।

স্পেসডটকম লিখেছে, মহাকাশযাকে যে ধরনের ‘হিট শিল্ড’ ব্যবহার করা হয়, তার মধ্যে ওরিয়নেরটি সর্ববৃহৎ এবং এর আগে এত বেশি তাপমাত্রায় এর টিকে থাকার সক্ষমতা যাচাই করার সুযোগ হয়নি নাসার।

সারাফিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “এত বড় আকারের হিট শিল্ড নিয়ে হাইপারসনিক গতিতে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরিস্থিতি নকল করার মত কোনো আর্কজেট বা অ্যারোথার্মাল পরীক্ষাগার পৃথিবীতে নেই।”

মহাকাশযানটির ফিরতি যাত্রা নাসার পরিকল্পনা মত এগোলে রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরে নেমে আসবে ওরিয়ন। মহাকাশযানটি প্রথমে স্যান ডিয়েগোর কাছাকাছি সমুদ্রে অবতরণের কথা থাকলেও আবহাওয়ার কারণে অবতরণের লক্ষ্যস্থল পাল্টে ৩০০ মাইল দূরে নির্ধারণ করেছে নাসা।

সাগর থেকে ওরিয়নকে উদ্ধার করে স্যান ডিয়েগো পর্যন্ত পৌঁছে দেবে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ ইউএসএস পোর্টল্যান্ড। সেখান থেকে ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারে ফেরত যাবে ওরিয়ন।

১৬ নভেম্বর উৎক্ষেপণের পর ওরিয়ন চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল ২৫ নভেম্বর; আর চাঁদের কক্ষপথ থেকে বেরিয়ে এসেছে ১ ডিসেম্বর। তার চার দিন পর পৃথিবীর পথ ধরতে সাড়ে তিন মিনিটের জন্য ইঞ্জিন চালু করে যাত্রাপথ সংশোধন করে নিয়েছিল মহাকাশযানটি।

রোববার ওরিয়ন কোনো বিপত্তি ছাড়াই সমুদ্রপৃষ্ঠে নেমে এলে পরবর্তী আর্টেমস ২ মিশনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করবে নাসা। ওই মিশনের নভোচারীদের চাঁদের চারপাশে ঘুরিয়ে দিয়ে ফেরত আনার পরিকল্পনা করে রেখেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।

২০২৪ সালে আর্টেমিস ২ উৎক্ষেপণ করতে চায় নাসা। আর ২০২৫ বা ২০২৬ সালে আর্টেমিস ৩ মিশনের মাধ্যমে নভোচারীদের নামাতে চায় চাঁদে।

এর পরের মিশনগুলোর কথাও ভেবে রেখেছে নাসা। অদূর ভবিষ্যতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ‘আর্টেমিস বেইজ ক্যাম্প’ নির্মাণ করতে চায় সংস্থাটি। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ত্রিশের দশকের শেষ ভাগে বা চল্লিশের দশকের প্রথমার্ধে মঙ্গলে প্রথমবারের মত নভোচারীদের পাঠাতে চায় নাসা।