Sharing is caring!
চট্টগ্রাম মহানগর: ‘কবিতার মাধ্যমে মানুষ তার অন্তরের সবচেয়ে গভীরতম কথা গুলো লিখে রাখে। সে কবিতাই নতুন প্রাণ পায় আবৃত্তিশিল্পীদের কণ্ঠে। কবিতাকে জীবন্ত করে তারা তোলেন। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম, তখন বৃহস্পতিবারে একটা পিরিয়ড ছিলো গান, নাচ ও আবৃত্তির জন্য। এগুলো শিশুদের বিকাশকে সমৃদ্ধ করত। তিনি এসব সুকুমারবৃত্তি চর্চার ব্যাপক প্রসারের জন্য তাগিদের কথা বলেন।’
গত ২ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত কণ্ঠনীড়ের আট বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আবৃত্তি উৎসবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মাননীয় মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম রেজাউল করিম চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, রাজনীতিবিদ ও সংগঠক দেলোয়ার হোসেন খোকা এবং বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান। তাজুল ইসলাম ও তানিয়া নাসরিনের সঞ্চালনায় আবৃত্তি উৎসবে ছিল স্মৃতিচারণ, একক ও দ্বৈত আবৃত্তি, দলীয় আবৃত্তি, শিশুদের পরিবেশনা। আরও ছিল ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পীদের একক পরিবেশনা। কণ্ঠনীড়ের পক্ষ থেকে অতিথিবৃন্দকে শুভেচ্ছা স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হয়।
কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার বলেন,‘বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে রাশেদ হাসান, সেলিম রেজারা। কবিতা আমাদের কালো সময়কে ইঙ্গিত করেন, দেখিয়ে দেয় কোন সময়টা অন্ধকার কোন সময়টা আলোর। কবিতার দায়িত্ব তাই অনেক বড়ো। সেই দায়িত্বকে কন্ঠে ধারণ করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অবদান আবৃত্তিশিল্পীদের। সেই আবৃত্তিশিল্পীদের মিলনমেলার অংশ হতে পারে আমি আনন্দিত।’ রাজনীতিবিদ ও সংগঠক দেলোয়ার হোসেন বলেন,‘ আমাদের ঐতিহাসিক আন্দোলন গুলোতে কবিরা কবিতা লিখেছেন, গীতিকার গান লিখেছেন।
রাশেদ হাসান বলেন ,‘একটি উৎসব আমাদের অনেকটুকু কাছাকাছি নিয়ে আসে। বাঙালি এমনিতেই উৎসবমূখর জাতি। একটি উৎসবে এতগুলো মানুষএকত্রিত হচ্ছে এই উষ্ণতাটুকুর মূল্য কম না। আট বছরে কণ্ঠনীড় একটু একটু করে অনেকটা এগিয়ে গেছে। ইতিহাসের ক্রান্তিলগ্নে রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে, ঠিক সেইভাবে সাংস্কৃতিক দলগুলোও নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বর্পূণ অবদান রেখেছে।
সংগঠনটির সভাপতি সেলিম রেজা সাগর বলেন, ‘আমাদের সংগঠন থেকে প্রথম উৎসব হয়েছিলো ২০১৬ সালে, এবার আমরা দ্বিতীয় আবৃত্তি উৎসব ও ৮ম বর্ষপূর্তি উদযাপন করছি।
এর আগে বর্ণিল শোভাযাত্রার মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। শোভাযাত্রাটি এম.এম আলী রোড ও দামপাড়া প্রদক্ষিণ কওরে শিল্পকলায় এসে শেষ হয়। কণ্ঠনীড়ের সদস্যদের একক ও দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেন কানিজ ফাতেমা হীরা, তাজুল ইসলাম, দেলোয়ার শিঞ্জন, সুজন মাজহার, আল-আমীন, শামীমা আকতার, জাফাং ত্রিপুরা। জনকের নাম মুজিবুর শিরোনামে শিশু বিভাগের ১. দীপান্বিতা চৌধুরী। আহনাফ আজমাইন। শারিয়া চৌধুরী। নির্ঝর তালুকদার। জয় বড়ুয়া। শ্রীযু দে নিলয়।অরণ্য বড়ুয়া। সামিহা ইসলাম চৌধুরী। সমৃদ্ধ বড়ুয়া দিপ্র।রাইফাহ্ ওয়াজিনাহ্। আদিত্য বসাক কাহন। দিগন্ত বড়ুয়া। আতিফাহ্ আরুব।রক্তিমা ঘোষ, জয়নাব নূর আয়মান ও আয়ান বিন খালেদ। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী মিশফাক রাসেল, বিশ্বজিৎ পাল, সুবর্ণা চৌধুরী, দিলরুবা খানম,এহতেশামুল হক একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন। দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, নির্মাণ আবৃত্তি অঙ্গন ও প্রথম আলো চট্টগ্রাম বন্ধুসভা।
আমন্ত্রিতশিল্পী হিসেবে আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য সোহরাব হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক আজহারুল হক আজাদ, মাসুদুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহ তমাল, মনির হোসেন, দেবাশীষ রুদ্র, সৈয়দ শহিদুল ইসলাম, শিরিন ইসলাম, নির্বাহী সদস্য শামস মিঠু, সামসুজ্জামান বাবু, মাহবুবুর রহমান মাহফুজ, মাশরুক টিটু, ইফতেখার আরিফ কাদরী।