চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য খ্যাত জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কেটে বসবাস করছে ২০ হাজারেরও অধিক মানুষ। সেখানে প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে প্লট বিক্রির মহোৎসব চলছিল। পরে সেখানকার পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন।
অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদে নানান উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। কিছু পরিবার অন্যত্র সরে গেলেও সিংহভাগ থেকে যায় সলিমপুরে। সর্বশেষ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বৈঠকে পাঁচ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। তবে এখনো বাস্তবায়ন হয়নি একটি সিদ্ধান্তও।
জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখেই সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের বস্তিতে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে একাধিক টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে সলিমপুরে সরকারি খাসজমি বন্দোবস্ত পেতে আবেদন করেছে অনেক সরকারি-বেসরকারি সংস্থা।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম সেনানিবাস ১ হাজার একর, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি-চট্টগ্রাম ২৩৮ দশমিক ১৩ একর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ কর্তৃক প্রেরিত (জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী চট্টগ্রামের আধুনিক প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য ৩৬ দশমিক ৫ একর, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ১ একর, কারা উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয় চট্টগ্রামের জন্য ৭৫ একর, জেলা ক্রীড়া সংস্থা চট্টগ্রামের জন্য ৪০ একর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ১২০ একর, বাংলাদেশ বেতার ২৫ একর, বিজিএমইএ ২০০ একর, প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপ-চট্টগ্রাম ২৫ একর, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ (জায়গার পরিমাণ উল্লেখ নেই), র্যাব-৭ এর জন্য ১০ একর, সিডিএ ৩৫০ একর, আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশ (হাসপাতাল নির্মাণের জন্য) ৫০ একর, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (মেলার ভেন্যু ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) ১২ একর, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ১৪৫ একর, রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের জন্য ২৫ একর, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন ৩০ একর, ইউনিভার্সিটি অফ পরতু গ্র্যান্ড ৫ একর, বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ১০ একর, খাদ্য বিভাগের সাইলোর জন্য ৫০ একর, এনএসআই এর বিভাগ/জেলা/মেট্রো অফিস ও প্রশিক্ষণ অফিসের জন্য ১০ একর, বাংলাদেশ পুলিশ (আরআরএফ) ২৫ একর, চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য ১০০ একর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ১৫ একর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ১০ একর, অটিস্টিক বিদ্যালয় এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ৬ একর, বাংলাদেশ স্কাউটস্ চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য ৫ একর, বুড্ডিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন সেন্টার-বাংলাদেশের জন্য ১০ একর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বিসিএস প্রশাসন একাডেমি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) এর জন্য ৫০ একর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (সরকারি যানবাহন মেরামত কারখানা) এর জন্য ২০ একর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জন্য শূন্য দশমিক ৫০ একর, বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রের জন্য শূন্য দশমিক ৬৬ একর, জে এম শীপ ব্রেকিং রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি (পরিবেশবান্ধব গ্রীণ কারখানা) তৈরির জন্য ২৫ একর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের জন্য) ২৫ একর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) ১০ একর, মেট্রোপলিটন শুটিং ক্লাবের জন্য ২০ একর, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের জন্য ৫০০ একরসহ মোট ৩৮টি প্রতিষ্ঠান জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। আবেদনকৃত মোট জমির পরিমাণ ৩ হাজার ২৭৯ দশমিক ৩৪ একর।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান বলেন, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য অনেকেই আবেদন করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে। এরপর মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে সেখানে কারা কতটুকু জায়গা পাবেন।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা জঙ্গল সলিমপুর পাহাড়ের পাঁচটি মৌজায় প্রায় ৩ হাজার ১০০ একর সরকারি খাসজমি আছে। ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন সেই খাসজমি দখল করে প্রায় তিন দশক ধরে সেখানে পাহাড় কেটে ও জঙ্গল সাফ করে প্লট বিক্রি করে আসছে। নিম্ন আয়ের লোকজন সেই প্লট কিনে সেখানে বসতি ও দোকানপাট গড়ে তুলেছে, যার মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারাও রয়েছে। জেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও সেখান থেকে তাদের সরাতে পারেনি।
বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সলিমপুর থেকে অবৈধ বসতি ও স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে সরকারি খাসজমিগুলো উদ্ধার করে সেখানে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। জুলাই মাস থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, এখানে যারা প্রকৃত ভূমিহীন রয়েছে তাদের নিজ নিজ উপজেলায় পুনর্বাসন করা হবে। তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। আমরা জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান করছি। সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য অক্ষুন্ন রেখে কি কি স্থাপনার জন্য সেখানে জমি বরাদ্দ দেওয়া যাবে সেই আলাপ-আলোচনা চলছে। আশা করি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত হবে।
<p>ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ।<br>সহকারী সম্পাদক-নাসরিন আক্তার রুপা।<br>বার্তা সম্পাদক-মোঃ জান্নাত মোল্লা।<br>প্রধান উপদেষ্ঠা: আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মওলা নকশে বন্দী ।<br><br>প্রকাশ কর্তৃক : এডভানসড প্রিন্টং - ক-১৯/৬, রসুল বাগ, ঢাকা। মহাখালী ঢাকা হতে মুদ্রিত এবং ১৭৮, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা-১২১৭ হতে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ অফিসঃ ৩৮৯ ডি আই.টি রোড (৫ম তলা) পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯ ,<br>মোবাইল: - ০১৮৮৩২২২৩৩৩,০১৭১৮৬৫৫৩৯৯</p><p>ইমেইল : abhijug@gmail.com ,</p>
Copyright © 2024 Weekly Abhijug. All rights reserved.