৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কাতারে চেক প্রতারণা মামলায় বন্দী অনেক বাংলাদেশি।

admin
প্রকাশিত আগস্ট ৯, ২০১৯
কাতারে চেক প্রতারণা মামলায় বন্দী অনেক বাংলাদেশি।

Sharing is caring!

মারুফ রানা দোহা কাতার থেকেঃ

কাতারে দিনদিন চেক জালিয়াতির প্রবণতা বাড়ছে। ব্যাংক হিসাবে টাকা না থাকার পরও চেক ইস্যু করে প্রতারণা করছেন এক শ্রেণির ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এই প্রবণতা রোধে কঠোর হয়েছে কাতারের আদালত। ফলে চেক জালিয়াতের মামলায় আরও কঠিন সাজা দিতে ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতারের আর্থিক প্রতারণা সম্পর্কিত আদালত ও কাতার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চেক প্রতারণা কমাতে কাতার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। বর্তমানে চেক জালিয়াতি মামলায় আটককৃতদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশিও রয়েছেন। এঁদের বেশিরভাগই বিভিন্ন বাড়ি ভাড়া ব্যবসায় চেক প্রতারণার অভিযোগে অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন।
নতুন করে যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চেক জালিয়াতির মামলায় অভিযুক্ত হবেন, তাদের ব্যাপারে আদালত এখন থেকে ব্যাংকগুলোর প্রতি নতুন নির্দেশনা জারি করবে। এই নির্দেশনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য ইস্যু হওয়া সব চেক প্রত্যাহার করতে বলা হবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে। পাশাপাশি সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে নতুন চেক ইস্যু করার উপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
খুব শিগগিরই কাতারের সংশ্লিষ্ট আদালতের নির্দেশে কাতার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এই নতুন নির্দেশনা কার্যকরের ব্যাপারটি জানিয়ে দেবে। কাতার আদালত ২০০৬ সালে প্রণীত ২৭ নং আইনের ৬০৪ ধারা অনুসারে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাশাপাশি যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজেদের ব্যাংক হিসাবে অর্থ জমা থাকা ছাড়া চেক ইস্যু করবে, তাদের নাম ও বিবরণ কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। আর আদালত যখন কোনো চেক জালিয়াতের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যাপারে দন্ডের রায় দেবে, তখন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই চেকে উল্লেখিত অর্থ আদায় করতে বাধ্য থাকার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির এ সম্পর্কিত ব্যয়ভারও বহন করবে। এটি আদায় করার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে নতুন করে আর মামলা করার প্রয়োজনীয়তা হবে না ।
আদালত কর্তৃক প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২০১৮ সালে চেক জালিয়াতি সম্পর্কিত মামলার সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ১৩০। এর মধ্যে মোট ৩৪ হাজার ৮৮২ মামলায় আদালত রায় দিয়েছে। ফলে মোট মামলার শতকরা ৯৪ ভাগ মামলা ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
কাতারের অপরাধ সম্পর্কিত আদালতে বর্তমানে আটটি বেঞ্চ সপ্তাহজুড়ে চেক জালিয়াতি ও আর্থিক প্রতারণা সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর বিচারকাজ পরিচালনা করছে। কাতারের সর্বোচ্চ বিচার পরিষদ মামলার ক্রমবর্ধমান সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে এই আটটি বেঞ্চ নির্দিষ্ট করেছে।
সাধারণত কাতারের আদালত থেকে চেক জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত রায় দেওয়ার পর অপরাধীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে আটক রাখা হয়। আর অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতে মামলার রায় দেওয়া হয়।