Sharing is caring!
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
শ্বাসরোধে স্ত্রীকে মেরে ফেলে ড্রামে ভরে নিজ কর্মস্থলে নিয়ে যান স্বামী। সেখানে গুদামে ড্রামটি রেখে দুই দিন অফিস করেন। পরে ড্রামটি রাস্তার ধারে ফেলে দেন। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকা থেকে ড্রামভর্তি অজ্ঞাত পরিচয়ের এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এসব তথ্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নিহত নারীর নাম আতিয়া আক্তার (১৮)। তাকে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী সোহানুর রহমানকে (২২) বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আতিয়াকে হত্যার পর অন্যের সহযোগিতায় লাশ ড্রামে ভরে ফেলে দেন। স্বামী সোহানুরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ আশিক ও লিটন।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর রাতে নগরীর পতেঙ্গা থানার কাঠগড় শ্যামা সংঘ মন্দিরের পাশে রাস্তার পাশে নীল রঙের একটি ড্রাম পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ড্রামের ভেতর এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ বলছে, লাশে পচন ধরায় ওই তরুণীকে চেনার উপায় ছিল না। সে কারণে পুলিশ পতেঙ্গা এলাকার বিভিন্ন ধরনের ২২টি কারখানায় অনুপস্থিত শ্রমিকদের তথ্যে সংগ্রহ শুরু করে। সেখান থেকে পাঁচ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়, যাদের কাজে অনুপস্থিতির বিষয়টি ‘অস্বাভাবিক’ ছিল। পাঁচজনের মধ্যে সোহানকে শনাক্ত করার পর পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নেয়। বাড়িতে তালা থাকায় তার সম্পর্কে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের তাজমহল রেস্টুরেন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।পতেঙ্গা থানার ওসি আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূর বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সোহান জানায়, আতিয়া তার চতুর্থ স্ত্রী ও মামাত বোন। প্রায় দুই মাস আগে আতিয়াকে বিয়ে করেন। তার আগে এই বছরের জানুয়ারিতেও বিয়ে হয়েছিল। বিরোধের জের ধরে গত ১১ অক্টোবর রাতে সোহান গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রী আতিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ড্রামভর্তি লাশটি সড়কের পাশে ফেলে দেন তিনি। তাকে এ কাজে সহযোগিতা করেন অটোরিকশাচালক লিটন। এ জন্য তাকে ভাড়াসহ মোট তিন হাজার টাকা দেন। স্ত্রীর লাশ ফেলে সোহানুর কুমিল্লা চলে যান।পতেঙ্গা থানার ওসি আরও জানান, সোহানুর অত্যন্ত ঠান্ডা মাথার অপরাধী। ২২ বছর বয়সে সে বিয়ে করেছে চারটা। স্ত্রীকে খুন করে লাশ ড্রামে ভরে রেখে শাশুড়িকে খবর দেয়- আতিয়া অন্য ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। আতিয়ার ব্যবহূত মোবাইলটি সে সাগরে ফেলে দেয়।