Sharing is caring!
নাসরিন আক্তার রুপা ঢাকা: শারদীয় দুর্গাপূজায় আজ বিজয়া দশমী। পাঁচ দিনব্যাপী শারদ উৎসবের শেষ দিন। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় এ উৎসব। এ দিনেই দেবী মর্ত্য ছেড়ে ফিরে যাবেন স্বামীগৃহ কৈলাসে। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে আজ শুধুই বিষাদের ছায়া। উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় থাকবে দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর।
পুরাণ মতে, বিজয়া দশমীর অন্যতম আয়োজন ‘দেবীবরণ’। রীতি অনুযায়ী, সধবা নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গাকে সিঁদুর ছোঁয়ান। দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর সেই সিঁদুর প্রথমে সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখেন। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানান, যা সিঁদুর খেলা নামে পরিচিত।
বিসর্জনের দিনে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমীর বিহিত পূজা এবং পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জন। দুপুর ১২টায় রয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদান। বিকাল ৪টায় রয়েছে বিজয়া শোভাযাত্রা। শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটির দিন।
বিজয়া দশমীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে অন্যরকম আবেগ ও মন খারাপ করা এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। কারণ, দশমী মানেই দুর্গা মায়ের ফিরে যাওয়া। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও একটি বছর।
বুধবার (৫ অক্টোবর) মণ্ডপে মণ্ডপে মহানবমীতে দেবীর বন্দনায় ভক্তকুলে ছিল ভিন্ন এক আবহ। ঢাকঢোল, কাঁসর-ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্য, ধূপ আরতি ও দেবীর পূজা-অর্চনায় ছিল প্রাণখোলা উচ্ছ্বাস। সেই সঙ্গে ছিল এক মানবিক ও সুন্দর পৃথিবীর প্রার্থনা। এদিন সকাল থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা।
বিজয় দশমীর দিনে দেবী দুর্গাকে প্রাণভরে দেখে নেওয়ার সময়। দুর্গাপূজার অন্তিম দিন এটি। এরপর আবার এক বছর অপেক্ষার পর্ব। মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে গত শনিবার শুরু হয় পাঁচ দিনব্যাপী সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব। সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী, এবার দেবীদুর্গা জগতের মঙ্গল কামনায় গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে এসেছেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড়বৃষ্টি হবে এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে, স্বর্গে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র থেকে জানা যায়, এবার সারা দেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন হচ্ছে। এসব মণ্ডপে নির্বিঘ্নে উৎসব উদযাপনের জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানান, এ বছরের শারদীয় দুর্গোৎসব যেন শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয় সেজন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশের মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।