Sharing is caring!
নবীজি (সা) এর শুভাগমন
মুফতি মুহাম্মদ এহছানুল হক মুজাদ্দেদী
‘ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ এলোরে দুনিয়ায়,
আয়রে সাগর আকাশ কবাতাস দেখবি যদি আয়।’
(কাজী নজরুল ইসলাম)।
যখন সারা পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল তখনই এ পৃথিবীতে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় এই ধরার বুকে তাশরিফ এনেছেন আমাদের প্রিয় নবী, দোজাহানের বাদশাহ হজরত মুহাম্মদ (সা)। রসুলের আগমন দিনের খুশিই ঈদে মিলাদুন্নবী(সা)। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীর কাছে একটি নূর (মহানবী (সাঃ) ও সুস্পষ্ট গ্রন্থ আল কোরআন এসেছে।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত ১৫)।
রসুল (সা) বলেন, ‘আমি আল্লাহ তায়ালার কাছে নবীদের শেষ নবী হিসেবে লিখিত হয়েছিলাম, যখন আদম (আ.) মাটি-পানিতে ছিলেন। আমি তোমাদের আমার প্রথম অবস্থানের সংবাদ দিচ্ছি, আমি ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া, ঈসা (আ.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীর ফসল এবং আমার মায়ের স্বপ্ন, যা তিনি আমাকে প্রসবকালীন দেখেছিলেন। নিশ্চয়ই (আমার আগমনের সময়) তখন তাঁর জন্য একটি নূর প্রকাশিত হয়েছিল, যা দ্বারা তিনি তাঁর চোখে শামদেশের প্রাসাদগুলোও দেখেছিলেন। (মিশকাত, পৃ. ৫১৩)।
রসুল (সা) এর শুভাগমন সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে নবী! আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহর করুণা ও দয়াপ্রাপ্ত হয়ে আনন্দ প্রকাশ কর।’ হজরত ইবনে আব্বাসের (রা.) মতে, এখানে ফজল ও রহমত অর্থ রসুল (সা) এর আগমন। (তাফসিরে রুহুল মাআনি)।
নবীজির আগমনে ইবলিশ ছাড়া সবাই খুশি। বিশ্ববাসী আমরাও খুশি। রসুল (সা) প্রতি সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে মিলাদুন্নবী উদযাপন করতেন (মুসলিম)। রসুল (সঃ)এর সময় মিলাদুন্নবী উদযাপিত হয়েছে, সাহাবায়ে কিরামরা ও মিলাদুন্নবী (সা) উদযাপন করেছেন।
সৃষ্টি জগতের রহমত প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা)সহ সব নবী-রসুল মাসুম (নিষ্পাপ)। রসুল (সা)এর সৌজন্যে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আমি আপনার উসিলায় আপনার (উম্মতের) আগের পরের সব গুনাহ মাফ করে দিয়েছি।’ (সূরা ফাতাহ, ২)। রসুল (সাঃ) মূল উৎস। সূরা দোহায় আল্লাহ বলেন, ‘তিনি আপনাকে স্বীয় প্রেমে আত্মহারা পেয়েছেন তখন নিজের দিকে পথ দেখিয়েছেন।’ (সূরা দোহা, ৭)। রসুল (সা) কে ভালোবাসা, আনুগত্য করা আল্লাহর নির্দেশ।
করোনা ভাইরাসের এ মহামারীতে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস, রসুল (সা)
এর আগমনের মাসে আল্লাহর কাছে আমরা দোয়া করি ‘হে আল্লাহ! কোরআন ও সুন্নাহর পথে তুমি আমাদের চালিত কর। রসুলের দেখানো পথ, সাহাবায়ে কিরামের পথে আমাদের চালাও।’
তাই আসুন, আল কোরআন তিলাওয়াত, নফল রোজা, দরুদ-সালাম, গরিব-দুঃখীকে দান-সদকা, রসুল (সা.)-এর জীবনী, আদর্শ আলোচনার মাধ্যমে আমরা মিলাদুন্নবী (সা)
উদযাপন করি। পৃথিবীর সব মুমিন মুসলমান রসুল (সা) এর দেখানো শান্তির পথে পরিচালিত হোক, রসুল (সা)
এর আগমনের এই মাসে মহান আল্লাহর কাছে এই দোয়া করি। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।