২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বীর মুক্তিযোদ্ধা কে বি এম মফিজুর রহমান খানের ৭৮তম জন্মদিনে বিভিন্ন সংগঠনের শুভেচ্ছা

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২
বীর মুক্তিযোদ্ধা কে বি এম মফিজুর রহমান খানের ৭৮তম জন্মদিনে বিভিন্ন সংগঠনের শুভেচ্ছা

Sharing is caring!

 

ষ্টাফ রিপোর্টারঃগাজীপুরের কালীগঞ্জে ষাট দশকের ছাত্রনেতা, স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও অন্যতম সংগঠক কে বি এম মফিজুর রহমান খানের ৭৮তম জন্মদিন উপলক্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ষাট দশকের ছাত্রনেতা, স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও অন্যতম সংগঠক কে বি এম মফিজুর রহমান খানের নিজ বাসা দক্ষিণ সোম খান বাড়ীতে তার ৭৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় সিক্ত করেছেন। এ সময় সবার মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামাত, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন শাখা কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা বন্ধন, মুক্তিযুদ্ধ তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, কালীগঞ্জ শাখা, কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব, কালীগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি, কালীগঞ্জ টেলিভিশন সাংবাদিক ক্লাব, এনজিও ক্রীড ও দক্ষিণ সোম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ষাট দশকের ছাত্রনেতা, স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও অন্যতম সংগঠক কে বি এম মফিজুর রহমান খান ১৯৪৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোম গ্রামের এক মধ্যবিত্ত সমভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম ফরহাদ উদ্দিন খান ও মাতা মরহুমা-বদরুন্নেছা খানম। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
তিনি স্থাণীয় দক্ষিণ সোম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। পরে প্রথম কালীগঞ্জ পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, পরে ১৯৬৪ সালে ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুল থেকে এস এস সি পাশ করে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। কিছু দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে জগন্নাথ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৬৬ সালে বাংলাদেশ লিভারেশন ফ্রন্ট তথা স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের সদস্য পদ লাভ করেন এবং নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কালীগঞ্জ এবং ঢাকা মহানগর নিউক্লিয়াসের কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৬৮ সালে তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ২৯ জানুয়ারী গ্রেপ্তার ও প্রায় ১৩ মাস পাকিস্তান দেশরক্ষা আইনে (ডিপিআর) কারাবরণ করেন। ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনে মুক্তিলাভের পরে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৭০ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক স্মরণে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশক্রমে গঠিত শহীদ জহুর বাহিনীর অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। যে বাহিনীর সদস্য ছিলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৭০ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাভ করেন। ৭১ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থাকার কারণে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য লাভ করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বিএলএফ তথা মুজিব বাহিনীর ঢাকা জেলার অন্যতম সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের দেরাদুনের তান্ডুয়ায় ট্রেনিং প্রাপ্তির পর তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান জেলা) বিএলএফ এর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন । (নারায়ণগঞ্জ শহর বাদে)। ১৯৭২ সালে অবিভক্ত জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাভ করেন।
১৯৬৯ সালে কে বি এম মফিজুর রহমান খান যখন ঢাকা মহানগর ছাত্র লীগের সভাপতি তখন বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই কমিটির সদস্য ছিলেন। নগর কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার গড়ে উঠে ঘনিষ্ট সম্পর্ক। বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ীতেও ছিল নিয়মিত যাতায়াত।
তিনি ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ছিলেন। কালের পরিক্রমায় বয়সের ভারে জীর্ণ, ন্যুব্জ হলেও দেশ মাতৃকার ভালোবাসায়, বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কল্যানমূলক কর্মকান্ডে জরিত আছেন।
আমি মনে করি একজন মুক্তিযোদ্ধার সবচেয়ে বড় পরিচয়, সে একজন স্বাধীনতা যোদ্ধা। কারণ এ দেশে অনেক স্বাধীনতা বিরোধী এমপি-মন্ত্রী হয়েছে এবং আগামী দিনও হবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অতএব স্বাধীনতার জন্য যারা যুদ্ধ করেছেন, জীবন দিয়েছেন, তারাই বাংলাদেশের গর্বিত শ্রেষ্ট সন্তান ও অহংকার। তাঁদেরকে নিয়ে হাজার বছর পরও গবেষণা হবে, পিএসডি করবে মানুষ।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ গাজীপুর এর সাধারণ সম্পাদক ও কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ষাট দশকের ছাত্রনেতা, যুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, প্রিয়নেতা কে বি এম মফিজুর রহমান খানের ৭৮তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দোয়া করি মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তিনিকে কর্মবহুল সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু দান করেন।