Sharing is caring!
কোনো চ্যানেল বন্ধ করিনি: তথ্যমন্ত্রী
নাসরিন আক্তার রুপা ঢাকাঃ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা কোনো চ্যানেল বন্ধ করিনি, বন্ধ করার জন্যও বলিনি। বাংলাদেশের আকাশ উন্মুক্ত।
রোববার (০৩ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা কোনো চ্যানেল বন্ধ করিনি, বন্ধ করার জন্যও বলিনি। বাংলাদেশের আকাশ উন্মুক্ত। আমরা আইন বাস্তবায়নের কথা দুই বছর আগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলেছিলাম। বেশ কয়েকআর তাগাদা দেওয়া হয়েছে, নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গত মাসের শুরুতে তাদের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো বসে সিদ্ধান্ত হয়, ১ অক্টোবর থেকে আইন কার্যকর করব।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বলছে ডিজিটালাইজড না হওয়া পর্যন্ত আইন শিথিল রাখার জন্য। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার পুরোটা ডিজিটালাইজড হয়নি। সেখানে আইন কার্যকর আছে। আমাদের দেশে এ ধরনের অজুহাত তোলার কোনো যুক্তি নেই।
তিনি আরও বলেন, আগেই সময় দেওয়া হয়েছিল, যাতে তারা সংশ্লিষ্ট চ্যানেলগুলোকে বলে ক্লিনফিড পাঠানোর জন্য এবং তারাও প্রস্তুতি নেয়। যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে, দুই বছর সময় দেওয়া হয়েছে। আমি দুই বছর আগে থেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। এর আগেও এই আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিসিবি, সিএনএন, আল জাজিরা, ফ্রান্স টিভি, রাশান টিভি, ইউরো টিভি, অ্যানিমেল প্ল্যানেটসহ ১৭টি টিভি বাংলাদেশে ক্লিনফিডে আসে। সেগুলোও তারা চালাচ্ছেন না। যেটি ক্যাবল অপারেটর লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ। সুতরাং কেউ শর্ত ভঙ্গ করলে শর্ত ভঙ্গের অপরাধে অভিযুক্ত হবেন। যেসব চ্যানেল ক্লিনফিড পাঠায় না তাদের এজেন্ট আছে। এই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট চ্যানেল ও এজেন্টের। এটি ক্যাবল অপারেটরদের দায়িত্ব নয়। কিন্তু কোনো কোনো ক্যাবল অপারেটর এজেন্টেদের পাশ কাটিয়ে সরাসরি স্যাটেলাইট থেকে পাইরেসি করে ডাউনলিঙ্ক করেন। সেটি কিন্তু তারা করতে পারেন না। এটি আইন বহির্ভূত।
৪ অক্টোবরের পর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে ক্যাবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব), এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এই ধরনের আন্দোলনের কথা বলা অযৌক্তিক। যেসব চ্যানেল দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে, সংস্কৃতিকে চোখ রাঙাচ্ছে, সেগুলোর পক্ষে ওকালতি করা দেশের স্বার্থ ও আইনবিরোধী। আমি আশা করব, দেশের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত হবেন না। সরকার কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। সরকার দেশের স্বার্থ ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য, আইন বাস্তবায়ন করার জন্য বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, তারা যদি আলোচনা করতে চায় আলোচনা হতেই পারে। তারা আমাদের সহযোগী, আলোচনা হতেই পারে। তবে আলোচনার ভিত্তি হবে আইন মানা, দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ।
ক্যাবল অপারেটররা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যাবল অপারেটররা বললেও এটি জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার মতো একটি বক্তব্য। তারা কি চ্যানেলগুলো দেখা না যাওয়ার পর চার্জ কমিয়ে দিয়েছে? এক টাকাও তো কমেনি। বিদেশি চ্যানেল দেখানোর জন্য এজেন্টদের যে ফি দিত সেটা এখন দিতে হবে না, টাকা সাশ্রয় হবে। সবাই বন্ধ করেনি। আকাশ ডিটিএইচসহ কেউ কেউ ওইসব চ্যানেল চালু রেখেছে। প্রথম দিকে তারা কিছু অসুবিধার কথা বলেছিল। আমি আশা করব, সেটি দু’একদিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা যখন এই পদক্ষেপ নিয়েছি দেশের সমস্ত মিডিয়া এটিকে অভিনন্দন জানিয়েছে, মিডিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যারা তারা অভিনন্দন জানিয়েছেন, শিল্পীরা অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণের স্বার্থে, দেশের মিডিয়া ইন্ড্রাস্ট্রি, সাংবাদিক ও মিডিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিল্পী ও কলাকুশলীদের স্বার্থে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার কয়েকশ’ কোটি টাকার রাজস্ব হারায়। এই বিনিয়োগ বঞ্চিত হওয়ার কারণে মিডিয়া থেকে অনেকে ছাঁটাই হচ্ছেন। যখন এই বিনিয়োগটা দেশি মিডিয়ায় হবে তখন মিডিয়া থেকে ছাঁটাই হওয়াটা বন্ধ হয়ে যাবে বা সেই অজুহাতে ছাঁটাই করা যাবে না। এভাবে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।