২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

একমাত্র তিনিই পারেন ক্ষমা করতে চলুন ইসলামের দৃষ্টিতে কি বলে দেখি

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১
একমাত্র তিনিই পারেন ক্ষমা করতে চলুন  ইসলামের দৃষ্টিতে কি বলে দেখি

একমাত্র তিনিই পারেন ক্ষমা করতে চলুন ইসলামের দৃষ্টিতে কি বলে দেখি

প্রতিবেদক শেখ তিতুমীর : আল্লাহপাক মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করেছেন তাই মানুষমাত্রই ভুল বা পাপ হতে পারে, কিন্তু একজন প্রকৃত আল্লাহর বান্দা সে একই ভুল বারবার করে না। আমরা প্রতিনিয়ত নানা পাপকর্মে লিপ্ত। আমরা যতই পাপ করি না কেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের পাপ ক্ষমার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষমাণ থাকেন। তিনি চান, তার বান্দারা যেন নিজের ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে তাওবা করে এবং ক্ষমা চায়। আর এমনটি করলে আল্লাহপাক অনেক খুশি হন, কিন্তু একজন প্রকৃত মুমিন কখনো বারবার ভুল করে না। আমরা যেসব ভুলত্রুটি করে ফেলি তার জন্য যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তাহলে তিনি ক্ষমা করবেন আর এ বিষয়ে আল্লাহপাক আমাদের শিক্ষাও দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘আর যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে বসলে অথবা নিজেদের ওপর জুলুম করে ফেললে তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ছাড়া পাপ ক্ষমা করার আর কে আছে এবং তারা যা করে ফেলেছে তারা জেনে-শুনে তাতে লিপ্ত থাকে। এদেরই পুরস্কার হলো এদের প্রভু-প্রতিপালকের পক্ষ থেকে ক্ষমা এবং এমন সব জান্নাত, যার পাদদেশ দিয়ে নদ-নদী বয়ে যায়। সেখানে এরা চিরকাল থাকবে। আর সৎ কর্মশীলদের পুরস্কার কত উত্তম’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৫-১৩৬)। আল্লাহতাআলার এটাই ইচ্ছা যে, কীভাবে তার বান্দাকে ক্ষমা করবেন; কিন্তু বান্দাকেও ক্ষমা চাইতে হবে, তাওবা করতে হবে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কোনো বিপদাপদ, কোনো দুঃখ-বেদনা, কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, এমনকি কাঁটার সামান্য এক খোঁচা লাগার কষ্টও ভোগ করে না বরং আল্লাহতাআলা তার এই কষ্টকে তার পাপের প্রায়শ্চিত্তে পরিণত করে দেন’ (সহি মুসলিম, কিতাবুল বিররে ওয়াস সিলাহ)। অপর এক হাদিসে হজরত সুহাইব বিন সিনান (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের রয়েছে বিস্ময়কর এক সম্পর্ক, তার প্রতিটি কাজই কল্যাণম-িত হয়ে থাকে। এই অনুগ্রহ কেবল মুমিনের জন্যই নির্ধারিত। যদি সে কোনো আরাম-আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য লাভ করে তা হলে সে আল্লাহতাআলার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আর তার কৃতজ্ঞতার এই প্রকাশ তার জন্য আরও অধিক কল্যাণ লাভের কারণ হয়। আবার যদি তার কোনো দুঃখ-কষ্ট, অভাব বা ক্ষতি হয়ে যায় তবু সে ধৈর্য ধারণ করে, তার এই কর্মপদ্ধতিও তার জন্য মঙ্গল ও কল্যাণের নিমিত্তে পরিণত হয়। কেননা, ধৈর্য ধারণে তার এই দৃঢ়তায় পুণ্যই অর্জিত হয়’ (সহি মুসলিম, কিতাবুল জিহাদ)।
অনেকে এমনো আছে, যারা একের পর এক পাপকর্ম করতেই থাকে আর আল্লাহর কাছে ক্ষমাও চায় না এবং সে পাপকর্ম নিয়েই ভালোই দিন কাটাচ্ছে। অন্যরা ভাবে যে, এই লোক এত পাপ করছে তার পরও আল্লাহ কেন তাকে শাস্তি দেন না। আসলে আল্লাহতাআলা তার কর্ম সবই দেখছেন, একটা সময় পর্যন্ত তাকে ছাড় দিয়ে রেখেছেন যেন সে তার ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, যদি সে এটি না করে তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তাকে তার কৃতকর্মের শাস্তি দেবেন। যেভাবে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘আল্লাহ সম্বন্ধে কি তোমাদের কোনো সন্দেহ আছে, যিনি আকাশসমূহের ও পৃথিবীর স্রষ্টা? তিনি তোমাদের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন, যেন তিনি তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দেন এবং এক নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত তোমাদের অবকাশ দেন’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ১০)। তাই এটা ভাবা ঠিক নয়, আল্লাহ আমাকে কিছুই করবে না। অবশ্যই পাপের শাস্তি আল্লাহ দেবেন, এ থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। তবে আমরা যদি আল্লাহর কাছে আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি যে, আমাদের মাধ্যমে আর পাপকর্ম সংঘটিত হবে না তাহলে আল্লাহতাআলা আমাদের ক্ষমা করতে পারেন। আল্লাহ চান, বান্দারা যেন তার কাছে ক্ষমা চায়। যেভাবে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘তুমি বলো, হে আমার বান্দারা যারা নিজেদের প্রাণের ওপর অবিচার করেছো! তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করতে পারেন। নিশ্চয় তিনিই অতি ক্ষমাশীল ও বারবার কৃপাকারী।
এই আয়াতে পাপীদের জন্য আশা ও আনন্দের বাণী রয়েছে। হতাশা ও নৈরাশ্যবাদকে দূরে সরিয়ে আল্লাহপাক আশার বাণী শুনিয়েছেন। তাই আমরা যারা বিভিন্ন ধরনের পাপে লিপ্ত, আমরা যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই তাহলে তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন। আসুন, আমরা আমাদের কৃত পাপের জন্য ক্ষমা চাই এবং তাওবা করি। আমরা এই অঙ্গীকার করি, আমাদের দ্বারা আর কখনো কোনো পাপকাজ হবে না। আমরা যদি প্রকৃত অর্থে তওবা করি তাহলে আল্লাহতাআলা আমাদের ক্ষমা করবেন। আল্লাহতাআলা আমাদের সবাইকে পাপমুক্ত থাকার তৌফিক দান করুন, আমিন।
অনেক কষ্ঠো করে অনেক কিছু ঘেটে লিখে ছি আপনাদের জন্য কেউ আমিন না বলে যাবেন না।
আমিন, আমিন, আমিন ,

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30