রুপা আক্তার চট্টগ্রাম: হাতে সময় আছে মাত্র ৫ দিন। প্রায় দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল পোশাক কেনা ও বানানোর হিড়িক পড়েছে নগরে। দীর্ঘ এই সময়ে দৈহিক উচ্চতা ও বৃদ্ধির কারণে পরা যাচ্ছে না পুরোনো পোশাকগুলো।
নগরের হামজারবাগ এলাকার রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র রাকিব। স্কুল বন্ধ থাকায় পোশাকটি রেখে দেওয়া হয়েছিল আলমারিতে। সেটি এখন পরার উপায় নেই। স্কুল খোলার খবর পেয়ে নতুন পোশাক নিতে বাবার কাছে বায়না ধরেছে। তাই সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে চকবাজার এলাকায় ছেলের স্কুল পোশাক কিনতে এসেছেন বাবা বাবুল আহমেদ। কিনলেন রেডিমেড সাদা শার্ট।
সামিউল ইসলাম পড়ে এনায়েত বাজার এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তৃতীয় শ্রেণির এই ছাত্র বাবাকে নিয়ে নগরের জহুর হকার্স মার্কেটে এসেছিল স্কুল পোশাক কিনতে। সামিউলের বাবা বলেন, আগের শার্ট-প্যান্টে চলছে না। তাই নতুন পোশাক কিনে দিচ্ছি।
শুধু রাকিব কিংবা সামিউল নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার খবরে অভিভাবকরা সন্তানের জন্য স্কুল কর্তৃক নির্ধারিত পোশাক কিনতে এবং সেলাই করতে ভিড় করছেন নগরের বিভিন্ন মার্কেট ও টেইলার্স-এ। যাদের সামর্থ্য নেই তারা নতুন পোশাক কিনে দেওয়া নিয়ে আছেন দুশ্চিন্তায়।
নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাবুল আহমেদ সাপ্তাহিক অভিযোগ কে বলের খবর পেয়েই ছেলে আমাকে নতুন স্কুল পোশাক কিনে দিতে পাগল করে ফেলছে। তাই বাধ্য হয়ে সব কাজ বাদ দিয়ে আগে ছেলেকে পোশাক কিনে দিতে এসেছি। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় আমার ছেলে উচ্ছ্বসিত। আশা করছি, সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষকরা পাঠদান করবেন।
এদিকে এরই মধ্যে নগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শুরু হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, হাজী মুহাম্মদ মহসীন স্কুল, ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন স্কুলে চলছে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করার কাজ। এসব কাজ তদারকি করছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষকরা।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে ১৯টি নির্দেশনা দিয়েছে। চট্টগ্রামের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও এসব নির্দেশনা মানতে হবে।
নগরের কয়েকটি স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের দেওয়ালে জমেছে শ্যাওলা। মাঠে উঠেছে ঘাস। ধুলা জমেছে ব্যাঞ্চ-চেয়ারে। সবকিছু এখন পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। হাত ধোয়ার জন্য রাখা হয়েছে তরল সাবান (হ্যান্ডওয়াশ) ও পানি।
এনায়েত বাজার কলিমুল্লাহ মাস্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখর দাশ সাপ্তাহিক অভিযোগ কে বলেন , মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আমরা খুব কঠোর থাকবো। সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা শিক্ষকদের নির্দেশনা দিয়েছি। সবার জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই ছুটি শেষ হবে ১১ সেপ্টেম্বর।
শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরু হবে। প্রথম দিকে শুধু চলতি বছরের এবং আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। বাকি শ্রেণিগুলোর ক্লাস সপ্তাহে একদিন করে হবে।
অন্যদিকে প্রাক্-প্রাথমিক স্তরের (শিশু শ্রেণি, নার্সারি, কেজি) শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস আপাতত বন্ধ থাকছে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ। প্রকাশ কর্তৃক : এডভানসড প্রিন্টং - ক-১৯/৬, রসুল বাগ, ঢাকা। মহাখালী ঢাকা হতে মুদ্রিত এবং ১৭৮, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা-১২১৭ হতে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ অফিসঃ ৩৮৯ ডি আই.টি রোড (৫ম তলা) পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯ ,মোবাইল: - ০১৮৮৩২২২৩৩৩,০১৭১৮৬৫৫৩৯৯ ইমেইল: abhijug@gmail.com
Copyright © 2025 Weekly Abhijug. All rights reserved.