২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দিনাজপুরে ছেলে ও ছেলের বউয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বৃদ্ধা শাশুড়ি,ভয়ে আতংকে আছে নাতনী

admin
প্রকাশিত জুলাই ১৩, ২০২১
দিনাজপুরে ছেলে ও ছেলের বউয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বৃদ্ধা শাশুড়ি,ভয়ে আতংকে আছে নাতনী

Sharing is caring!

দিনাজপুরে ছেলে ও ছেলের বউয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বৃদ্ধা শাশুড়ি,ভয়ে আতংকে আছে নাতনী

মোঃ জসিম উদ্দিন; স্টাফ রিপোর্টার-

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ছাতিয়ান গড় গ্রামের বাসিন্দা জাহেদা বেগম (৩৫) নামে একজন মহিলা তার বৃদ্ধা শাশুড়ীর উপর দিনের পর দিন চালিয়ে চাচ্ছে নির্মম অত্যাচার ও শারিরিক নির্যাতন। তার বৃদ্ধা শাশুড়ির নাম বাচ্ছা মাই বেওয়া (৭২)। বৃদ্ধা শাশুড়ি যেন তার কাছে বোঝা,তাই মাঝে মধ্যেই চলে তাদের উপর লাঞ্ছনা বঞ্চনা। কিন্তু বৃদ্ধা বাচ্ছা মাই এর শেষ বয়সে একমাত্র ছেলেই ছিল তার ভরসা। অন্তিম বয়সে এসে সব আশা শেষ।এখন লাঠিই হলো তার একমাত্র অবলম্বন।ছেলে ২য় বিয়ে করে বউকে নিয়ে সংসার পেতেছে। স্বামী মারা গেছে প্রায় ৩৫ বছর আগে। বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়েছে বৃদ্ধা। ঠিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারে না। ছেলে ও ছেলের বউয়ের অত্যাচারে এখন অতিষ্ট ঐ বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি। ভিক্ষা করে কোনোরকমে কাঁটাচ্ছে দিন।

শুধু এখানেই শেষ নয়, বৃদ্ধা বাচ্ছা মাই বেওয়া তার ছেলে ও ছেলের বউয়ের ব্যাপারে অভিযোগ করে বলেন,আমি ভিক্ষা করে খাই। আজকে সকালে কোন কারণ ছাড়াই আমার বৌ আমাকে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ ও অত্যাচার শুরু করে। এর সাথে আমার ছেলেও আমকে মারধর করে; আমার ছেলের আগের বউয়ের ১২ বছর বয়সের একটা মেয়ে আছে, তার নাম নুরি, তাকেও খুব মার ডাং করা হয়। আজকে আমাকে ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়ে আমার সেই সহজ সরল নাতনী নুরী কেও গলা চিপে ধরা হয়েছে এবং প্রান নাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখানো হয়েছে। স্থানীয় সেচ্ছাসেবকলীগের নেতা মোখলেছুর রহমান বলেন,এর আগে বেশ কয়েকবার এই রকম সমস্যা হয়েছিল,সেটা আমরা এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ মিলে সমাধানও করেছিলাম কিন্তু কিছুদিন পরে আবার পুনরায় এই সমস্যা হয়। আজকের ঘটনায় আমি জেনেছি যে,ঐ মহিলা নাকি তার বৃদ্ধা শাশুড়ির ঘরে তালা লাগিয়েছে এবং সকাল হতে বিকাল পর্যন্ত কোন প্রকার খাবার খেতে দেয় নি, এমন কি বলেছে যে,আমি কোন বিচার মানি না,কাউকে ভয়ও করি না আমার কি হয় হবে।

প্রত্যেক্ষসুত্রে জানা যায়,এভাবে প্রায় প্রতিদিনই নুর মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী তার বৃদ্ধা শাশুড়িকে বিনা কারণে গালি গালাজ সহ মারধর করতেন। প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানা সত্ত্বেও কিছু বলতেন না। কারণ প্রতিবাদ করলেই আরও অশান্তি বাড়বে এই ভয়ে চুপ থাকতেন সকলেই। স্থানীয় গ্রাম পুলিশমজনু(চৌকিদার),ইব্রাহিম,সোহেল ও আরিফুল সহ এলাকার কয়েকজন যুবক জানান,নুর মোহাম্মদ মাঝেমধ্যেই তার মাকে মারধর করে। আমরা বলতে গেলে আমাদের উপরে রেগে যায়। তার মায়ের সাথে এ রকম আচরণ করার জন্য তাকে কঠোর শাস্তি দেয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষিত এই যুবকরা।

ঘটনার খবর পেয়ে ইউএনও আহমেদ মাহবুব-উল ইসলাম এর নির্দেশ ক্রমে, ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শ্রী মানিক চন্দ্র বলেন, আজকে আমার ওয়ার্ডে এই ঘটনাটি ঘটেছে;সেটা আমাকে ইউএনও স্যার জানায়, আমি তাতক্ষনিক ভাবে ঘটনার স্থান পরিদর্শনে গিয়ে তদন্ত করি, এবং আমি ঘটনাটি মিমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর সাথে আলোচনা করেছি,আশা করি এইবার পুরোপুরি সমাধান হয়ে যাবে।