Sharing is caring!
সিলেটে বেপরোয়া বটল বাহিনীঃ বহুবছর পরে এই বাহিনীর কবল থেকে জমি উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সিলেট সদর উপজেলার ৩নং খাদিম নগর ইউনিয়নের সাহেবের বাজার এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বটল বাহিনীর কবল থেকে প্রায় বারো কেয়ার বা ৭২০ শতক জমি উদ্ধার করেছেন সিলেট শহরের চৌকিদেখীর বাসিন্দা নাজিম উদ্দীন।
জানা যায়,নাজিম উদ্দিন সিলেট শহরের চৌকিদেখির একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান ।
গ্রামে নিরিবিলি একটি বাগান বাড়ি বানানোর জন্য তার বাবা ও চাচা বিপুল মিয়া মিলে প্রায় ৯-১০ বছর আগে উপরোক্ত জায়গা ক্রয় করেন।এসময় জমিগুলো বিক্রেতার দখলে ছিলো।কিন্তু পরবর্তীতে ক্রয় বিক্রয়ের সংবাদ পেয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে বসে স্হানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বটল বাহিনী।
নিজ টাকায় খরিদ করে চাঁদা কেন দিবো এমন কথা নাজিমুদ্দিনের পরিবার জানালে,পরের দিনই দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নাজিম উদ্দীনের পরিবারের জাগা দখলে করে নেয় বটল বাহিনী।বহু বছরপর উদ্ধার করা হয়েছে সেই জমিগুলো।
একাধিক মামলার আসামি মোহাম্মদ আলী বটল ওরফে বটই,যার মামলা নং ৯৩/১৯,১২০/১৪,১১-১২০/১৬,১২-৫৮/১৯,৩২-১৯৮/২১,৭৪/২১,৩১১০/২১ এইসব মামলা ছাড়াও তার নামে সিলেট এয়ারপোর্ট থানায় রয়েছে একাধিক সাধারণ ডায়রি।
মোহাম্মদ আলী বটলের নেতৃত্বে এই বাহিনী
দীর্ঘদিন ধরে চুরি,ডাকাতিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অবলীলায় চালিয়ে আসছে, গ্রামের নিরিহ মানুষ কেউই তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়না।
ভয়ে অনেক নির্যাতিত মানুষ মুখ খুলতে রাজি হয়না। সাংবাদিককে তথ্য দিয়েছে এমন কথা বটল শুনতে পারলে প্রাণে হত্যা করে ফেলবে বলে জানান এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাসিন্দা।তাই অনেক সময় বটলের অপরাধকে তারা অপারগ স্বতেও নিরব থাকেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে,পূর্বে এই বাহিনীর নাম ছিলো মোস্তফা বাহিনী।
বয়সের বার্ধক্যের কারণে মোস্তফা সরে দাড়ালেও এই স্হান দখল করে নেয় তারই ছেলে মোহাম্মদ আলী ওরফে বটল ওরফে বটই। আর এই বটল বাহিনীর মূল শেল্টার দাতা খুরশিদ আলম।
জানা যায়,খুরশিদ প্রথম দিকে একটু পড়ালেখা করে কোর্টে একজন আইনজীবীর সহকারী হিসেবে পায়চারি
করত।
কোর্টে আসার পাশাপাশি দুই বছরের এলএলবি ডিপ্লোমা কোর্সটি সম্পন্ন করে আইনজীবী হিসেবে সিলেট বারে নিজে সম্পৃক্ত করে ফেলে সে ।
এরপরেই খাদিম নগরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে বটল বাহিনী।
নাজিম উদ্দীনের বাবা ও চাচাদের খরিদা ভূমি চাঁদা না দেয়ায় দীর্ঘদিন ধরে দখল করে সেই জাগা ভোগ করে আসছিল বটল বাহিনী।
এলাকার বিশেষ ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আজ জায়গা গুলো বহুবছর পরে বটল বাহিনীর কবল থেকে উদ্ধার করে ভুক্তভোগী নাজিমের পরিবার।
এদিকে বটল বাহিনীর উপরে নির্যাতিত মানুষের সকল মামলাই তামাম করে দেন বটল বাহিনীর গডফাদার শেল্টার দাতা খুরশিদ আলম।
তাই অনেক নিরিহ ও গরিব মানুষ মার খেয়ে বিচার না চেয়েই ঘরে ফিরেন নিরুপায় হয়ে।এমন শত শতজন মজলুম মানুষ পাওয়া গেছে সরজমিনে সাহেবের বাজারে গিয়ে।শুকেন নামে একজন সংখ্যালগু হিন্দু লোক বিশ টাকা চাঁদা না দেয়ায় চড় মেরে কান ফাটিয়ে দেয় বটল।এসময় মার খেয়ে বিচার না চেয়েই কাঁদতে কাঁদতে নিজ ঘরে ফিরেন শুকেন।
একই ভাবে মুকুল চন্দ্র নামে আরেক সংখ্যালঘুকে বটল বাহিনী বেধড়ক মারধর করলে মুকুল বিচার থেকে বঞ্চিত হন।পরে আইনের আশ্রয় নেয়ার সাহস করলে মামলা করে মহা বিপদে পড়েন মুকুল।তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিলে ভয়ে তিনি আপোষ করে নেন।একই ভাবে আরো অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে।
ইয়াবা,মদ,ইভটিজিং,ছিনতাই থেকে এমন কোন অপরাধ কর্মকান্ড নেই যা বটল করে না।এই প্রতিবেদকের কাছে ভুরি ভুরি ডকুমেন্টস রয়েছে,যা পরবর্তী পর্বে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হবে,ইনশাআল্লাহ।
খুরশিদ আলমের হুকুমেই একাধিক চাঁদা কানেকশন করতে গিয়ে বটল বাহিনী একাধিক বার মামমলায় পড়লেও মামলা যেন তাদের কাছে একটি সাধারণ বিষয় মাত্র।একাধিক মামলায় খুরশিদ আলম জামিন নিয়ে বর্তমানে আরো বেপরোয়া এই বাহিনী।সম্প্রতি,২৩মে একজন ব্যবসায়ীর কাছে ৩লক্ষ টাকা চাঁদাদাবী করে বটল বাহিনী।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ ব্যবসায়ীকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো চাকু ও দা দিয়ে রক্তাক্ত করে।এঘটনায় সিলেট এয়ারপোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।মামলা নং ৩১১০/২১
ভুক্তভোগীরা জানান,”মামলা খায় না মাথায় দেয়”এমন উক্তি এখন বটল বাহিনীর সদস্যের মুখে মুখে।
সাহেবের বাজার এলাকায় এখন এই বটল বাহিনীর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে।টিলা ও চা বাগান বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় এই বাহিনীর সদস্যরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গা ঢাকা দেয়।
ফলশ্রুতিতে দিন দিন অশান্ত হয়ে উঠছে গোটা এলাকা।নিরিহ মানুষ এই বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
(পরবর্তী পর্ব আসিতেছে)