Sharing is caring!
পাগলীর কোলে ফুটফুটে শিশু মোহাম্মদ জিহাদ,কিন্তু কে তার বাবা?
ইব্রাহীম আলী, গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ-
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্ত জনপদ পূর্ব জাফলং, মোহাম্মদপুর (বাজার)এলাকায় প্রায় চার বছর ধরে থাকা পাগলিনী ছেলে শিশু নব-জাতকের জন্ম দিয়েছেন।
তার পিতৃ পরিচয়ের কোন হদিস নেই।
পাগলিনী মহিলা গর্ভ অবস্থার কথা জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। এই বিষয় নিয়ে এলাকার মানুষের মুখে মুখে বিভিন্ন কথাবার্তা শোনা যায়।
এলাকায় এই পাগলি মহিলার গর্ভ অবস্থার কথা জানতে পেলে মোহাম্মদপুর মিতালী সবুজ সংঘের সভাপতি, রুবেল আহমেদ তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমলে নেন এবং তিনি এই মহিলার দেখভাল ও সঠিক পরিচর্যার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
তখন এই পাগলিনীর সেবা যত্ন ও পরিচর্যার জন্য স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসেন মোহাম্মদপুর মিতালী সবুজ সংঘের সদস্য আসাদ মিয়ার আম্মা। তিনি তার বাসগৃহে পাগলিনীর জন্য থাকার ব্যবস্থা করেন।
এই পাগলিনী কে নিয়ন্ত্রণ করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিলো, কিন্তু তা সম্ভব করে দেখিয়েছেন আসাদ মিয়ার আম্মা। প্রায় সময় রাস্তায় চলে যেত বাজারে এখানে-ওখানে ছোটাছুটি করতো আর সেখান থেকে বারবার ধরে নিয়ে আবারও ঘরে সেবা-যত্ন সহ সার্বিক পরিচর্যা করতেন আসাদ মিয়ার আম্মা। এভাবেই চলতে থাকে মাসের-পর-মাস।
দীর্ঘ আড়াই মাস মোহাম্মদপুর মিতালী সবুজ সংঘের সভাপতি, রুবেল আহমেদ এর সার্বিক সহযোগিতায় ও সংঘের সদস্য আসাদ মিয়ার আম্মার তত্বাবধানে পাগলিনীর সেবা যত্ন ও পরিচর্যার এক পর্যায় পাগলিনী প্রসব ব্যাথায় ছটফট ও চিৎকার করতে দেখে আসাদ মিয়ার আম্মা দ্রুত দায়ী মহিলাকে ডেকে আনেন।
গত ১৬/০৫/২০২১ইং রোজ রবিবার সকাল ৮ ঘটিকার সময় ফুটফুটে এক ছেলে শিশুর জন্ম দেন এই পাগলিনী মা ।
আসাদ মিয়ার আম্মা বয়স্ক একজন মহিলা হওয়ার সুবাদে উনার একার পক্ষে নবজাতক ও পাগলিনী কে সেবা-যত্ন করা সম্ভব নয় বলে মনে করে মিতালী সবুজ সংঘের সভাপতি রুবেল আহমেদ। বাড়তি পরিচর্যা ও সহযোগিতার জন্য দায়ী মহিলাকে তার যথাযথ পারিশ্রমিক প্রদান করবে বলে উনাকেও এই পাগলিনী ও তার শিশুকে পরিচর্যার জন্য রেখে দেন।
বৃহস্পতিবার উপজেলার সামাজিক সংগঠন মোহাম্মদপুর মিতালী সবুজ সংঘের সভাপতি রুবেল আহমেদ বলেন, আমরা খুব লজ্জাকর পরিস্থিতিতে পড়েছি, একটি ভবঘুরে পাগলির সাথে কে এমন অনৈতিক সম্পর্ক তৈরী করলো?
তিনি এ ব্যাপারে আরো বলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে তিনি আলাপ করেছেন এবং বিষয়টি অবহিত করেছেন। তিনিও সার্বিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং ইউএনও মহোদয় উনাকে আশ্বস্ত করেছেন যেকোনো পরিস্থিতিতে যে কোনো সহযোগিতা উনার সাধ্যমত করবেন।
নবজাতক শিশুর সাতদিন পূর্ণ হলে ইসলামী নিয়ম অনুসারে দোয়া ও মিলাদ এর আয়োজন করা হয়। এবং নবজাতক শিশুটির নাম রাখা হয় “মোহাম্মদ জিহাদ” নাম রাখার সুবাদে মোহাম্মদপুর মিতালী সবুজ সংঘ ও মোহাম্মদপুর সমাজ যৌথ উদ্যোগে ১৫০ জন অসহায় নারী শিশু কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন।
আসাদ মিয়ার পরিবারের কাছে পাগলিনি ও নবজাতক শিশুর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে তারা আমাকে জানান এলাকার এক মহিলা পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়েছেন। পল্লী চিকিৎসক বলেছেন আপাতত মা ও নবজাতক শিশু ভাল আছেন।
পাগলিনীর শিশু পুত্রের পিতৃ পরিচয় খুঁজে বের করতে মোহাম্মদপুর সমাজের ময়মুরুব্বি গন ও মিতালি সবুজ সংঘ সামাজিক ভাবে চেষ্টা চলাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর মিতালী সবুজ সংঘের সভাপতি রুবেল আহমেদ আমাকে জানান পিতৃ পরিচয়হীন নবজাতক শিশু সহ মায়ের সকল প্রকার খরচ আমাদের সামাজিক সংগঠন মিতালী সবুজ সংঘের ফাউন্ড থেকে বহন করা হচ্ছে।