২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আমার তুমি

অভিযোগ
প্রকাশিত এপ্রিল ২৭, ২০২১
আমার তুমি

আমার তুমি…..

লেখক :- বিউটি দাশ,
উপদেষ্টা- বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ সংগঠন -বিএসকে এস – ( কেন্দ্রীয় কমিটি)

 

রাত এখন ২-৩০ মিঃ! আমি তোমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে! যুগ যুগ- জন্ম পরিচিত তোমার গায়ের সেই সৌরভ আমায় তোমার বুকের আরো গভীরে টানছে!কিন্তু এত লোকের ভিড়ে যাই কি করে? শুনেছি তুমি নাকি অন্য কারো হতে যাচ্ছে! তোমার বুক নাকি এখন থেকে রাজপ্রাসাদীদের! কত সহজেই পর হয়ে গেলে তুমি!”বাংলার রুপ আমি দেখেছি তাই বিশ্বের মুখ দেখিতে চাই না”বাণীটি মনে পড়ে তোমার?বলতে পার কার লেখা?সুদূর প্রবাস থেকে তোমার মুখ দেখব বলে সাত সমুদ্রে পাড়ি দিয়ে আমি এসেছি তোমার কাছে আর তুমি অন্যের হয়ে গেছ! আজকে মত

অসহায় – ভিক্ষারী কখনও লাগেনি নিজেকে,শুধুই তুমি,তুমি আজ অন্যের শুনে।হাত- পা যেন বরফে জমে যাচ্ছে! শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে আমার!তুমি অন্যের মানা যেন অসম্ভব! বুঝতে পারছ কি তুমি?
শুনতে পাচ্ছ কি তুমি আমার হৃদয়ের আর্তচিৎকার? আমার হৃদয়ের রক্ত ক্ষরণ ধারা কি তোমার বক্ষে শ্রাবণ ধারার মত মজছে? এতটা মৌন তুমি! কেন?মর্মাহত তুমি আমার জন্য?

জানতেই যদি আমার তুমি একদিন অন্যের হবে,কেন তবে ফোঁটালে গোলাপ- পদ্মে তোমার বক্ষে গাঁদার বাগানে জ্যোৎস্না রাতে-পূর্ণিমার চাঁদের সাথে নদীর জলে!তোমার বুকেশুয়ে দেখিয়েছিলে সূর্য্যঅস্তরাগ -পূর্ণিমারই চাঁদ!শ্রাবণ ধারায় তোমার বুকে একটানা ৬-৭ ঘন্টা শুয়ে থাকা, উপর -স্বর্গীয় বৃষ্টির ছন্দে বাতাসে কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি- ঢেউয়ে শাপলা -পদ্ম অজানা কত ফুল এসে ঢেকে নিত! বাবা মা জিজ্ঞেস করত আমার গায়ে বারো সূর্য্যের তাপ আছে নাকি! সে তো জানতে তুমি আমি যে তোমারই সৃষ্টি।গরম অসহ্য বলে তোমার বুকের যে অংশটায় অবিরাম নদী প্রবাহিত হতো আমায় সেখানেই ঘুমিয়ে রাখতে তোমার হৃদয়ের সবুজ বাগিচা সাজিয়ে!তুমি থাকতে আমার প্রেম হৃদয় সিংহাসনে।

তোমার প্রেমের সুনিপূন সূতায় গেঁথে শরতের শিউলি তলা- সূর্যউদয়ের পূর্বে পূজার ফুল তোলার ছলে যেদিন নিয়ে গেছিলে দু’পাহাড়ে মধ্যবর্তী নদীর পাশে কেয়াবনের ধারে বালুচরে তোমার প্রথম ফোঁটা কাশ আমার দেখাবে বলে,তোমার বুকে শুয়ে

দেখিয়েছিলে তোমার প্রথম ফোটা কাশ,দোলাচ্ছিলে মুখ -চুলে কাশফুলে! হঠাৎ কে বা কারা যেন তুলতে এসেছিল তোমার প্রথম ফোটা কাশ খোঁপায় বাঁধবে বলে। বলেছিলাম,এতো তোমারই সৃষ্টি ,তুমি ছাড়া অন্য কারো কাছে ম্লান।কিছু সময় খোঁপায় নাহয় ফুলদানিতে। নিজের ম্লানতা দেখে নিজেই পাবে লাজ তোমার ধবধপে এই কাশ। তোমার হাতেই থাক,মনে পড়ে?দিঘির পূর্ব পাশে পলাশ বাগিচায় সবুজ ঘন ঘাসে তোমার বুকে শুয়ে একহাত নদীর জলে অন্য হাতে ভরা ছিল টুকটুকে লাল পলাশ ফুলে সেদিন কিন্তু দক্ষিণা সমীরণ ছিল না।

দিঘীর উত্তর পাশের বটবৃক্ষ থেকে হঠাৎ ধমকা হাওয়া এসে পলাশের সমস্ত পাপড়ি ডেকে নিয়েছিল তোমার বুকে আমাকে! সূর্য ও লুকিয়েছিল! চোখ খুলে দেখি জোনাকিপোকা গুলো যেন তারার মেলা সাজিয়েছে চারিদিকে কি অদ্ভুত -অপূর্ব রুপে! মনে রেখেছি কি তারে? যেদিন প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টি বাতাসে পুকুরেই ঢেউ উঠেছিল জলের গভীরে নিঃসঙ্গতায় ছিলে তুমি।

তখন শাহিদরজায় সোফায় বসে দেখি তোমার নিঃসঙ্গতা। প্রচন্ড বাতাসে যখন পুকুরে টুপ টুপ করে কাঁচাপাকা আম ঝরছিল,তার ছলে তোমার বুকে শুয়ে আম খাওয়- বৃষ্টির ধারায় হাত- মুখ ধোয়া ভুলে গেলে কি করে আমায় এত প্রেমে বেঁধে।সেকি আমার ভুলে নাকি তোমার স্বভাব- ধর্ম বলে।

আমি তোমার পরিবর্তন চাইনি বলে?তোমাকে তোমার মত করে সাজিয়ে ভালবেসেছি বলে। আমি তোমার কাছে একখণ্ড ভূমি চেয়েছিলাম মাত্র আর তুমি দিলে মরুভূমি। তুমিই বল মরুর বুকে কি করে করি গোলাপ-রজনীগন্ধা চাষ। আমার জন্যই বা কি থাকল সাজ,না জবার ডালা না শরৎ শিউলির ঘ্রাণ।

সবি তো ম্লাণ! স্বপনে দেখে বিশ্বাস করিনি দুঃস্বপ্ন ভেবে, সত্য হল সন্ধ্যার আবছা আলোতে তোমার রুপ দেখে।যে বুকে একসময় ছিল পদ্মের সৌন্দর্য -সৌরভ, আজ দেখি সেই বুক থেকে বিষাক্ত বাতাসে আকাশ ছুঁয়ে যাচ্ছে!ধোঁয়া তোমার বুকে কিন্তু অগ্নি কেন আমার বুকে! পুড়ছ তুমি আর জ্বলছি আমি!অগ্নি-জলন্ত অগ্নি দগ্ধে আমার বক্ষের আগ্নেয়গিরির লাভা তোমার কালো ধোঁয়াতে মিশেছে ,চিনতে অসুবিধা হবার কথাই নয় আমার হৃদয় পোঁড়া ঘ্রাণ।

দেখ তবে কার বুক ঝলসে যাচ্ছে। তুমিই ছিলে আমার, প্রেম -স্বর্গ-সুধা। আচ্ছা তোমার বুকের কতটা গভীরতা দিয়েছ?যে দিন তৃষ্ণায় চৌচির হয়ে আমার বক্ষ মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে যাচ্ছিল পাহাড়ে চূড়া থেকে নদীতে বালু চরে হেঁটে হেঁটে তৃষ্ণার্থবক্ষে একবিন্দুতে জলের আশে,তোমায় খুঁজছিলাম, চারিদিক মরুভূমি আর মরুভূমি হঠাৎ দেখি তোমার সারা শরীর ঘামছে! আর তোমার বুকের ঠিক মাঝখানটাই দেখি বিন্দু বিন্দু করে জমছে জল! আমি হাত দিয়ে তোমার বুকের গভীরে প্রবেশের চেষ্টা করতেই তুমি বুঝিয়েছিলে তোমার একহাত পাতালে অন্য হাত আকাশে! বুকটা আমার প্রেমের তৃষ্ণা নিবারণে!তুমি পাতাল থেকে শীতল জলে আকাশ থেকে মেঘের ছলে ছায়া হয়েছো আমার প্রেমের তরে! সেদিনই বুঝেছি তুমি স্বর্গীয়।

তবে আজ তুমি কতটা দিয়েছ তোমার বক্ষের গভীরতা তাদের? আমার প্রেমের গভীরতা পাবে কি তারা? তুমি আমার সোনালী দিনগুলোও দিয়েছ তাদের ! দিয়েছ শর্শ্য মাঠে তোমার আমার হলুদ প্রেমের নকশিকাঁথার আঁকা বনলীর স্মৃতি।দিয়েছ শরতের শিউলী-সূর্য্যের প্রথম কিরণে দূর্বায় ঝলমল থাকা একফোঁটা শিশির!

পৌষের মিষ্টি রোদে তোমার বক্ষে জড়িয়ে থাকা চাঁদর! দিয়েছে আমার প্রেম বসন্তের চৈতী রাতে উদাসী হাওয়ায় ঘুম ভাঙানো বাঁশির সুর!
আজ যা আছে তোমার, সব তাদের!
যা হারিয়েছি, সব আমার!কি জন্য

এলি “তাই কি” ছিল অবশিষ্ট বলার মাতার?
তোমায় হারানোর ভয়ে সহপাঠীদের বলতাম বিশ্বের কোথাও সুখী হতে পারব না তোমাকে ছেড়ে এমনকি স্বর্গেও না। তোমার মধ্যেই আমার প্রাণ। জান আজ তারা আমার কথা আমায় স্মরণ করিয়ে আহত করে তাও তোমার আমার প্রেম বিচ্ছেদের তীরে!আর আসব না ফিরে।তুমি আজ পরিবর্ত-ভিন্ন ভিন্ন রুপ- বহুরূপী-বহুজনের অধিকারে! আমি আসব কার কাছে পার বলতে।

 

প্রচারে – শেখ তিতুমীর আকাশ।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30