২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মহামারীতেও থেমে নেই জাফলং সীমান্ত যেন চোরাকারবারির আস্তানা

admin
প্রকাশিত এপ্রিল ১৭, ২০২১
মহামারীতেও থেমে নেই জাফলং সীমান্ত যেন চোরাকারবারির আস্তানা

Sharing is caring!

মহামারীতেও থেমে নেই জাফলং সীমান্ত যেন চোরাকারবারির আস্তানা

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ-
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবাধে চলছে সীমান্ত চোরাচালান জাফলংয়ের সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে দেশে আসছে মাদক,গাঁজা,ইয়াবা,পাতা বিড়ি,সিগারেট, কসমেটিকস, প্রসাধনী সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্য। যা বর্ডার ক্রস করে দেশে আসছে, কিন্তু আসার পথে দেখার কেউ নেই যেন বর্ডার গার্ড ছাড়া সীমান্ত।

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীতেও থেমে নেই চোরাচালানী। প্রতিদিন রাতের আঁধারে ভারতের ডাউকি বাজার থেকে বল্লাঘাট জিরো পয়েন্ট, সোনাটিলা ও গুচ্ছগ্রাম সীমান্ত বিজিবি ক্যাম্প ও আশপাশের ৭৪-পিলারের দিক দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারত থেকে মালামাল বাংলাদেশে আসছে সীমান্তবর্তী এলাকার স্থানীয় এক শ্রেনীর অবৈধ অসাধু লোভী ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজরা।

ভারত থেকে আসার পথে বিজিবি নামক লাইন খরচ প্রতি কার্টুনে দিতে হয় মাশুহারা। বিজিবির নামে চাঁদা আাদায় করছে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে৷ যেমন সোনাটিলা সীমান্ত থেকে চাঁদা তুলেন সিদ্দিক এর নেতৃত্বে, জিরো পয়েন্টে চাঁদা তুলেন শাহজাহানের নেতৃত্বে৷ গুচ্ছগ্রামে চাঁদা তুলে লাইনম্যান শামসুল মিয়ার ও নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে।

এভাবে দলে দলে বিজিবির লাইনম্যান পরিচয় দিতে প্রতি মালের পাই টু পাই হিসেব করে চাঁদা তুলে আসছে এই চক্রটি বিগত বেশ কিছুদিন আগে ওদের নামে দৈনিক একাধিক নিউজ হয়েছিল।

শুধু সেখানেই শেষ নয়, দেশে পণ্যগুলো প্রবেশ করায় পুলিশ/ডিবির নাম ভাঙিয়েও দিতে হয় চাঁদা। এই চাঁদা পাথরটিলা নিবাসী আসু মিয়ার ছেলে রুবেল এর নেতৃত্বে। গুচ্ছগ্রাম নিবাসী নাজিম উদ্দিন, নাছির উদ্দিন, শান্তিনগর নিবাসী এর নেতৃত্বে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা তুলা হয়।

এদিকে আসু মিয়ার ছেলে রুবেল দীর্ঘদিন ডিবির টাকা তুলছে অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। অবৈধ ব্যবসায়ী তাদের কে দিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক করেন। রুবেল গংদের নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিলে পুলিশ/ডিবি নাকি তাদের পণ্যগুলো নাকি জব্দ করবে না৷ পুলিশের নামেও বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে চাঁদা তুলেন পুলিশের লাইনম্যান নামক একটি দল।

এদিকে অবৈধ সিগারেট দেশে প্রবেশ করায় সরকারী কর ফাঁকি দেওয়ার একটি সুর্বণ সুযোগ পেয়েছে অসাধু ব্যবসায়ী। কিছু সংখ্যক অবৈধ ব্যবসায়ী মুনাফার লোভে এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।বর্তমানে দেশে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারত থেকে চাল পাঁচার করে দেশে নিয়ে আসছে ব্যবসায়ী৷ ভারতের স্থানীয় খাসিয়াদের সূত্রে জানা যায়, ভারতের খাদ্য চাহিদা থাকা সময়েও যারা ভারত থেকে চাল বাংলাদেশে নেওয়ার সুযোগ করে দিতে,

যে মুহূর্তে বিএসএফ কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যা পরবর্তীতে সীমান্ত নিরাপত্তার ঘাটতি দেখা যেতে পারে। বাংলাদেশ থেকে মটরশুঁটি ভারতে পাঁচার বন্ধ থাকার পরেও সোনাটিলা দিয়ে যাচ্ছে মটরশুঁটি। আর ভারত থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে অবৈধ জিনিস।

অথচ ভারত থেকে পণ্য আসলে চোরাচালানের শাস্তি হিসেবে পাচারকৃত পণ্য রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। পণ্য বা মালামাল বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর চোরাচালানকারীকে শাস্তি পেতে হবে।

শেষোক্ত শাস্তি দ্বিবিধ। যথাঃ অর্থদণ্ড বা জরিমানা এবং, দ্বিতীয়তঃ কারাবাস। শুল্ক আইন ১৯৬৯ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ উভয় আইনেই চোরাচালানের শাস্তি বিধৃত আছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ অনুযায়ী চোরাচালান একটি জামিন অযোগ্য অপরাধ।

স্থানীয়সূত্রে জানা যায়,এলাকায় যেকোন ধরণের বড় ঘটনা ঘটার আগেই এসব অবৈধ মালামাল আনা বন্ধ করতে হবে। নয়তো বর্ডারে যেকোন সময়ে মানুষের জীবন নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ জানায়, ভারত থেকে যদি পণ্য প্রবেশ বিষয়ে আমরা অবগত নয়, তারপরেও যদি মাদক সহ যেকোন পণ্য আসে তাহলে থানায় অবগত করার জন্য অনুরোধ করেন, তিনি আরও বলেন- পণ্যগুলো জব্দ করে দেশের আইনে চোরাচালানীদের শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বল জানান তিনি।