অভিযোগ সাস্থ ডেস্ক ঃ বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। তবে এ জ্বরে আতঙ্কিত না হয়ে প্রতিরোধের বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। কিছু কিছু বিষয় জানা থাকলে এ জ্বর প্রতিরোধ করা সম্ভব। আসুন জানি, ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।
১. আজ যদি এই শহরের সবগুলি মশাকে মেরে ফেলতে পারেন তাহলে সাতদিন পর আর এই শহরে ডেংগি রোগী থাকবেনা৷ কারণ মশা ছাড়া ডেংগির আর কোন বাহক নেই। তাই মশা মারাই এর একমাত্র প্রতিরোধক। হয়ত পুরোটা সম্ভব না৷ কিন্তু অনেকখানিই তো সম্ভব।
২. সিটি করপোরেশন এর আশায় বসে থাকবেন না৷ নিজের ঘর নিজেই পরিষ্কার করুন। ঘরের কোথাও আবদ্ধ জল আছে কিনা দেখে নিন। থাকলে ধ্বংস করুন। বাড়ির সামনের রাস্তায়, কোনায় কানায় কোথাও খানাখন্দ আছে কিনা দেখুন৷ থাকলে ধ্বংস করুন। টায়ার, জেরিক্যান, খোলা পাত্র থাকলে নষ্ট করুন। ওসব জায়গায় পানি জমেই সেখানে এডিস মশা হয়।
এডিসের প্রজনন ক্ষমতা যত উচ্চই হোক প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হলে তো নির্বংশ হতে সময় লাগবেনা। রিপেলেন্ট ব্যাবহার করুন। গায়ে মাখাও কিছু ওষুধও পাওয়া যায় সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। দিনে রাতে মশারি খাটান। যতভাবে নিজেকে রক্ষা করা যায় করুন।
৩. পাড়ায় মহল্লায় তরুন-তরুনীরা গ্রুপ করে মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা কাজে নেমে পড়ুন। অনেক বড় একটা কাজ হবে। একটা ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিলে এক সপ্তাহের ভেতর ফল পাবেন। যারা করবেন তারাই এই সময়ের শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক।
৪. সতর্ক হোন, আতংকিত হবেননা৷ আতংকিত হলে করনীয় কাজটি ভুল হয়ে যাবে। ডেংগির শারীরিক লক্ষণ নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। লক্ষণ মিলিয়ে আসলে জ্বর আসেনা সব সময়। এই আউটব্রেকের মৌসুমে জ্বর এলেই, মানে জ্বরের প্রথম দিনেই ডাক্তারের কাছে যাবেন। সিবিসি ও ডেংগি এনএসওয়ান পরীক্ষা করবেন। Dengue NS1 ১-৩ দিনের ভেতর পজিটিভ থাকে। এর সেনসিটিভিটি ৬৬-৭০ ভাগ। তিরিশ ভাগ ডেংগি হবার পরও নেগেটিভ দেখাতে পারে৷ তাই চিকিৎসকের অব্জারভেশনকে গুরুত্ব দিন।
৫. ডেংগি হলেই শিরায় স্যালাইন দিতেই হবে এমন নয়। মুখে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি বা খাবার স্যালাইন খেতে পারলে শিরায় না দিলেও চলবে৷ শকের হিসাব আলাদা। বমি, পাতলা পায়খানা হলেও বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে তখন শিরায় স্যালাইন নিতে হতে পারে।
৬. ডেংগি হলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে তাও না। প্রাইমারি কেয়ার সেন্টার বা আপনার নিয়মিত চিকিৎসকের চেম্বারে গেলেই চলবে। তিনি রক্তের রিপোর্ট, শারীরিক পরীক্ষা, ব্লাড প্রেসার, পালস ইত্যাদি পরীক্ষা করে তবেই সিদ্ধান্ত দেবেন ভর্তি হবেন কি হবেন না৷ নিজে নিজে হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হবার জন্য চেষ্টা করবেন না। হাসপাতালগুলি এমনিতেই ভারাক্রান্ত। সবার হয়ত দরকারও নেই তবু গিয়ে ভর্তি হয়েছে৷
৭. “প্লেইটলেট কমে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী শকে চলে যায়” এরকম প্রচারণায় বিশ্বাস করবেন না। ফেসবুকে যা দেখবেন তাই বিশ্বাস করবেন না৷ অমুক প্রফেসর বলেছেন বলে যেগুলো প্রচার হচ্ছে সেগুলোও না। দেবী শেঠির নামেও ফেসবুকে অনেক বাকোয়াজ কথা প্রচার করা হয়।
৮. প্লেইটলেট নিয়ে অযথা ভীত হবেন না। প্লেইটলেট কাউন্ট ডেংগির আরলি প্রেডিকশনে সহায়তা করে। এর বেশি কিছু নয়। প্লেইটলেট ভাল থাকা বা খারাপ থাকা দিয়ে রোগীর ভাল মন্দ বা রোগের তীব্রতা নির্ধারন করা যায়না। ডেংগি শক সিন্ড্রোম একদম ভিন্ন জিনিস। প্লেইটলেট কম বেশির সাথে এর তেমন সম্পর্ক নেই।
৯. ডেংগিতে প্লেইটলেট শরীরে দেওয়া খুব কমন ট্রেন্ড হলেও আসলে খুব কম ক্ষেত্রেই প্লেইটলেট লাগে। দিলেও কাজে লাগে কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে৷ এ ব্যাপারে ডাক্তারকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। প্রভাবিত করবেন না। প্লেইটলেট কমে গেলেই আতংকিত হয়ে প্লেইটলেট দিচ্ছেন না কেন বলে পীড়াপীড়ি করবেন না। প্রেসার,পালস, হিমাটোক্রিট বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
১০. ডেংগি শক সিন্ড্রোম খুব জটিল একটি পর্যায়। আইসিইউতে ম্যানেজ করা উচিত। লিভার, কিডনি,হার্ট, লাংস সব দিকেই সমস্যা হতে পারে। সব কিছু পরীক্ষা করে মনিটর করতে হয়। হিসেব করে শিরায় ফ্লুইড দিতে হয়৷ তারপরও কেউ কেউ মারা যেতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে৷
১১. জ্বর কমে যাওয়ার পরই মূলত ক্রিটিক্যাল ফেইজ শুরু হয়। তাই জ্বর কমলেই ভাল হয়ে গেল সব কিছু এটা মনে করবেন না।
১২. ডাক্তার ভাইদের বলব ন্যাশনাল গাইডলাইন হাতের কাছে না থাকলে আজই সংগ্রহ করুন। স্ট্রিক্টলি ফলো করুন। প্রতিটি লাইন পড়ুন। আরেকজনের পোস্ট দেখেই কিছু একটা লিখে ফেলবেন না৷ মনগড়া কথা প্রচার করবেন না৷
<p>ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ।<br>সহকারী সম্পাদক-নাসরিন আক্তার রুপা।<br>বার্তা সম্পাদক-মোঃ জান্নাত মোল্লা।<br>প্রধান উপদেষ্ঠা: আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মওলা নকশে বন্দী ।<br><br>প্রকাশ কর্তৃক : এডভানসড প্রিন্টং - ক-১৯/৬, রসুল বাগ, ঢাকা। মহাখালী ঢাকা হতে মুদ্রিত এবং ১৭৮, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা-১২১৭ হতে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ অফিসঃ ৩৮৯ ডি আই.টি রোড (৫ম তলা) পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯ ,<br>মোবাইল: - ০১৮৮৩২২২৩৩৩,০১৭১৮৬৫৫৩৯৯</p><p>ইমেইল : abhijug@gmail.com ,</p>
Copyright © 2024 Weekly Abhijug. All rights reserved.