Sharing is caring!
পাথর শ্রমিকের কান্না আর,না আর,না অচল পাথর কোয়ারি সচল করার দাবিতে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
আগামী ৩ দিনের আল্টিমেটাম পাথর কোয়ারি সচল করে না দিলে কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারি
ইব্রাহীম আলী, গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ-
আগামী ৩ দিনের আল্টিমেটাম পাথর কোয়ারি সচল করে না দিলে কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারি
শ্রমিকের কান্না আর, না আর,না।
কাজ চাই, ভাত চাই, পাথর কোয়ারি সচল চাই/ পাথর কোয়ারি বন্ধ কেন, প্রশাসন জবাব চাই/ আমাদের দাবী একটাই পাথর কোয়ারি খুলে দাও, দিতে হবে। এমন নানা শ্লোগানকে সামনে রেখে বৃহত্তর সিলেটের সকল পাথর কোয়ারি পরিবেশ সম্মত ও সনাতন পদ্ধতিতে সচল করার দাবীতে সিলেটে এক বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের আয়োজনে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনকে সামনে রেখে ও পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবীতে সকাল থেকেই বিভিন্ন দাবী দাওয়া সংবলিত ফেস্টুন, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে সিলেট জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী-শ্রমিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে খন্ড খন্ড মিছিল সহকারে মানববন্ধন ও সমাবেশস্থলে লোকজন জড়ো হতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এ দেশটা হবে কৃষক ও শ্রমিকের। কিন্তু দূর্ভাগ্যবঃশত স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও আমাদের ভাত কাপড়ের জন্য আন্দোলন করতে হয়। যে পাথর কোয়ারি বঙ্গবন্ধু আবিস্কার করেছেন, সেই কোয়ারি কখনো বন্ধ করতে দেয়া যাবে না উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, লোভা, উৎমা ও শ্রীপুর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন, সংগ্রহ ও সরবরাহ করে অত্রাঞ্চলসহ দেশের প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এই পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন।
কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ আজ পরিজন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
কর্মহীন এ প্রান্তিক জনপদে আজ দূর্ভিক্ষের পদধ্বনি। পাথর সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজ সর্বশ্বান্ত। হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করে আজ দেউলিয়া। পাথর কোয়ারী বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকার উপর যে মারাত্মক দুর্বিসহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা অবর্ণনীয়।
একটি বৃহৎ অঞ্চলের ১০ লক্ষাধিক মানুষের প্রাচীন এ জীবিকা বন্ধ হওয়ায় এর অর্থনৈতিক ক্ষতি হাজার হাজার কোটি টাকা। পাথর পরিবহনে সম্পৃক্ত হাজার হাজার ট্রাক ও ট্রাক্টর মালিক, শ্রমিক রোজগার বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পাথরকে উপজীব্য করে গড়ে ওঠা স্থানীয় বিভিন্ন হাট বাজার ও বিপনী কেন্দ্রগুলোতে পন্য কেনা বেচা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজারো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যেক্তা কঠিন ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন।
যুগ যুগ ধরে পাথর আহরণের মাধ্যমে কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের একমাত্র পথ পাথর কোয়ারিগুলো আগামী ৩ দিনের মধ্যে সনাতন পদ্ধতিতে সচল করে দেয়ার জোড় দাবি জানান তাঁরা।
অন্যথায় ন্যায্য এ দাবি আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে সিলেটে অবরোধ-ধর্মঘটের মত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে মানববন্ধন থেকে হুশিয়ারিও উচ্চারণ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট বিভাগীয় ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমেদ’র পরিচালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা-বিভাগীয় মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম হাদি ছয়ফুল।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন
সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আবু সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিনসহ ব্যবসায়ী-শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধন শেষে সিলেট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সংগঠনের পক্ষ থেক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।