২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

গোয়াইনঘাটে পাথর কোয়ারি বন্ধ: ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি লাখো শ্রমিক পরিবার

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ২৯, ২০২০
গোয়াইনঘাটে পাথর কোয়ারি বন্ধ: ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি লাখো শ্রমিক পরিবার

Sharing is caring!

গোয়াইনঘাটে পাথর কোয়ারি বন্ধ: ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি লাখো শ্রমিক পরিবার

 

 

মোঃ ইব্রাহীম আলী,গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ-
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ (জাফলং ও বিছনাকান্দি) পাথর কোয়ারি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। গোয়াইনঘাটের কর্মক্ষম শ্রমিকদের একমাত্র কর্মক্ষেত্র এ কোয়ারি বন্ধ থাকায় তারা দীর্ঘদিন ধরে বেকার হয়ে পড়েছেন। শ্রমজীবি মানুষেরা পেটের তাড়নায় কাজের সন্ধানে বেরিয়ে কোথাও কাজ না পেয়ে পরিবার পরিজনদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রান্তিক জনগোষ্টি কর্মহীন হয়ে বর্তমানে ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি।

কর্মহীন পাথরশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পাথরের সাথে সংশ্লিষ্ট উপজেলার মানুষেরা কর্মক্ষেত্র চায়। পরিবার পরিজন নিয়ে তিনবেলা দুমুঠো ভাত খেতে চায়। সরকারি অগ্রযাত্রাকে আরো বেগমান করতে হলে গোয়াইনঘাট উপজেলার দুই লক্ষাধিক কর্মক্ষম মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি সময়ের দাবি।

এদিকে, পরিবেশবান্ধব করে কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট উপজেলায় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যনারে প্রায়ই পাথরশ্রমিকরা প্রতিটি উপজেলায় মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করছেন।

জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, লোভা, উৎমা, শ্রীপুর সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় যুগ যুগ ধরে পাথর আহরণের মাধ্যমে লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছিল। সিলেটের পাথর কোয়ারিতে পাথর আহরণ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বংশ পরম্পরায় জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। আহরিত এ পাথরের রয়্যালটি বাবত সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে আসছিল। সিলেটের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি পাথর আহরণ এবং বিপণন হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়ায় এক বছর ধরে সিলেটের উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠী অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হয়েছে।

আহরিত এ পাথর বিপনের সাথে সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, স্টোন ক্রাশার, মিল মালিক, পাথর ব্যবসায়ী, ট্রাক-ট্রাক্টর শ্রমিক, বার্জ, কার্গো, নৌকা মালিক শ্রমিক, পরিজন নিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে আসছিলেন। সিলেটের এ পাথরের গুণগত মান উন্নত হওয়ায় দেশের নির্মাণ শিল্পের অন্যতম কাচামাল হিসেবে এ পাথর ব্যবহার হয়ে আসছিল।

বুয়েট, শাহজালাল ইউনির্ভাসিটিসহ দেশের সকল প্রকৌশল সংস্থার মান বিবেচনায় এ পাথরের গুণগত মান এশিয়া মাহাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মনোনীত হওয়ায় নির্মিত অবকাঠামোর মজবুত ও স্থায়ীত্ব সর্বজন বিবিধ। খরস্রোতা নদীর ভাটির দিকে অবস্থিত এ অঞ্চলে প্রতিবছর উজান থেকে লক্ষ লক্ষ টন পাথর নেমে এসে কোয়ারী অঞ্চল পরিপূর্ণ হয় এবং এ পাথরই শ্রমিকেরা উত্তোলন করে দেশের নির্মাণ শিল্পে যোগান দিয়ে আসছিলেন।

কিন্তু কোয়ারি বন্ধ থাকায় পঙ্গু হয়ে গেছে অত্র এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা। কষ্টে পড়েছেন পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। সর্বোপরি বড় অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।