Sharing is caring!
ঈশ্বরদী শহরের মরণ নেশা ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমসে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা
মো: ইয়াছিন শেখ,ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় দিন দিন ইন্টারনেট ফাইটিং ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমসে ঝুঁকছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। করোনায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অলস সময়ে এ গেমসে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
জানা গেছে, উপজেলার উঠতি বয়সের শিক্ষার্থীরা ও পুরো যুব সমাজ দিন দিন ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নামক গেমের নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। যে সময় তাদের ব্যস্ত থাকার কথা নিয়মিত পড়ালেখাসহ শিক্ষা পাঠ গ্রহণ নিয়ে ও খেলার মাঠে ক্রীড়া চর্চার মধ্যে, সেখানে তারা ডিজিটাল তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে জড়িয়ে পড়ে নেশায় পরিণত করছেন।
৮ বছর থেকে ২১ বছরের উঠতি বয়সের যুবকরা প্রতিনিয়ত অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়ে এসব গেইমে আসক্ত হচ্ছেন। এসব বিদেশী গেম থেকে শিক্ষার্থী বা তরুণ প্রজন্মকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা দেখছেন সচেতন মহল।
শুধু খেলায় ক্ষান্ত হলে হইতোবা কিছুটা বাঁচতো বাংলাদেশ। কিন্তু ইউসি ক্রয় ও ডায়মন্ড টপ আপের নামে বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, পাবজি ও ফ্রি ফায়ার নামক মরন গেমস। একজন অসচ্ছল পরিবারের সন্তান ডায়মন্ড ও ইউসি কেনার টাকা যোগান দিতে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপকর্মে। মাদক বিক্রয় ও কিছু টাকার বিনিময়ে মাদক সেবিদের কাছে মাদক পৌছে দেওয়া তার মধ্যে অন্যতম মাধ্যম।
কোমল মতি শিশুদের ১০ টাকা-২০ টাকা জমিয়ে যেখানে ক্রিকেট বল ফুটবল কেনার কথা, সেখানে তারা টাকা জমিয়ে রাখছে ইউসি/ ডায়মন্ড কেনার জন্য।
ফায়ার গেমসে অনুরাগীরা জানান, ‘প্রথমে তাদের কাছে ফ্রি ফায়ার গেমস ভালো লাগত না। কিছুদিন বন্ধুদের দেখাদেখি খেলতে গিয়ে এখন তারা আসক্ত হয়ে গেছেন। এখন গেমস না খেলে তাদের অস্বস্তিকর মনে হয় বলে জানা যায় ।
আরেক জন ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আসিফ জানায়, ‘তিনি পূর্বে গেমস সম্পর্কে কিছু জানতেন না। এখন নিয়মিত ফ্রি ফায়ার গেমস খেলেন তিনি। মাঝে মধ্যে গেমস খেলতে না পারলে মুঠোফোন ভেঙে ফেলার ইচ্ছাও হয় তার। তিনি আরো বলেন, ফ্রি ফায়ার গেমস যে একবার খেলবে সে আর ছাড়তে পারবে না বলে দাবি করেন তিনি।
ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নামক গেমসকে মাদকদ্রব্যর নেশার চেয়ে ভয়ঙ্কর বলে উল্লেখ করেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে দাশুড়িয়া এম এম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাবু হোসেন বলেন, ‘আমাদের সময় আমরা অবসর সময়টি বিভিন্ন খেলা ধুলার মধ্য দিয়ে পার করতাম, কিন্তু এখনকার যুগে প্রজন্ম সন্তানদেরকে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। জেলার গ্রাম-গঞ্জে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রুপ গেম মহামারী আকার ধারণ করেছে।
শিক্ষার্থীরা অনেকে পড়ার টেবিল ছেড়ে খেলছে মোবাইল গেমস, কখনো ইন্টারনেটের খারাপ সাইটে বিভিন্ন ছবি দেখছে। এতে একদিকে তাদের ভবিষ্যৎ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। তাই কিশোর-কিশোরীদের মা-বাবাসহ সমাজের সবারই খেয়াল রাখতে হবে, যেন তারা মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার না করে এবং প্রতিটি সন্তানকে একটু যত্ন সহকারে খেয়াল রাখার দায়িত্ব বা কর্তব্য বলে মনে করেন তিনি।
গবেষনায় প্রমানিত এসব গেম শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করছে। গেমে জিততে না পেরে সারাদিন ডিপ্রেশনে থাকা, ডিপ্রেশন থেকে সুইসাইড ও পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করা তাদের দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিনত হয়েছে।
এই সমস্যা থেকে আমাদের সন্তান, ভাই-বোনদের বাঁচাতে হলে অভিভাবকদের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহল, শিক্ষক-শিক্ষিকা, জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।