১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনযোগী হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২, ২০২০
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনযোগী হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

Sharing is caring!

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনযোগী হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

 

 

অভিযোগ ডেস্কঃ জীববৈচিত্র্য রক্ষা না পেলে পুরো মানবজাতিই বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, পৃথিবী ও মানুষের অস্তিত্ব রক্ষায় চারটি পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ভার্চুয়াল জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে দেয়া বিবৃতিতে এ চার দফা প্রস্তাব পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

প্রথম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবী এবং আমাদেরকে রক্ষার জন্য বিনিয়োগের সময় আমদের টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনযোগী হতে হবে।

 

দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য শিক্ষাব্যবস্থা ও গবেষণার মাধ্যমে বৃহত্তর জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে এবং আইন ও নজরদারি ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে।

 

তৃতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, জেনেটিক গবেষণার তথ্য এবং এ সংক্রান্ত প্রথাগত জ্ঞান থেকে প্রাপ্ত সুফল যাতে প্রকৃত স্বত্ত্বাধিকারীরা পান, তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

 

চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেগুলোর বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করবে আমরা বিলুপ্ত হয়ে যাব, না টিকে থাকব। সুতরাং আমাদের অবশ্যই সেসব অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

ভার্চুয়াল বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে বিশ্বে বাস করি, সেখানে প্রতিটি প্রাণী পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল, এই বাস্তুতন্ত্রে প্রতিটি প্রজাতির আলাদা আলাদা ভূমিকা আছে। কিন্তু মানুষের কর্মকাণ্ডে সেই বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

 

ওয়ারর্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড এবং লন্ডন জুলজিক্যাল সোসাইটির তথ্য তুলে ধরেন তিনি বলেন, ১৯৭০ থেকে ২০১৬ সালে এসে বিশ্বে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ৬৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

 

বাংলাদেশ ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ’-এর ব্যপারে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করি যেখানে পৃথিবী গ্রহের প্রতিটি প্রজাতি আমাদের বাস্তুসংস্থানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

 

বাংলাদেশ মিঠা পানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল উল্লেখ করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, মিঠা পানির জীববৈচিত্র্য বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে, বৈশ্বিক জলাভূমির ৮৫ শতাংশ ইতোমধ্যে শিল্প বিপ্লবের পরে হারিয়ে গেছে।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭০ সাল থেকে মিঠা পানির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভচর, সরীসৃপ ও মাছের সংখ্যা প্রতি বছর গড়ে ৪ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে।

 

তিনি বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি আশংকাজনকভাবে বাড়িয়ে তুলছি এবং ফলস্বরূপ, কোভিড-১৯ এর মতো ‘জুনটিক’(প্রাণি থেকে মানুষে সংক্রমিত) রোগের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের বর্তমান ক্রিয়াকলাপ অব্যাহত রাখা হলে আমরা কেবল অন্যান্য প্রজাতির বিলুপ্তির কারণই হচ্ছি না, মূলত আমরা মানবজাতিরও চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

 

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে তাঁর সংবিধানে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের প্রথম দিকেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের আদেশ কার্যকর করেন।’

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জৈববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কনভেনশন বাস্তবায়নের জন্য আইন-প্রণয়নকারী অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ‘আমাদের সংসদ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বায়োলজিকাল ডাইভারসিটি অ্যাক্ট ২০১৭ পাস করেছে।’

 

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশের মোট স্থলভাগের ৫ শতাংশেরও বেশি এবং সামুদ্রিক জলভাগের প্রায় ৫ শতাংশ অঞ্চলকে ‘সংরক্ষিত ও পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল’ ঘোষণা করেছে।