Sharing is caring!
মোঃ আদম আলী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ-
সাতক্ষীরায় এক ট্রলি চালকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ‘বেস্ট টিম সাতক্ষীরা’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন মোস্তাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহানাজ পারভিন মিলিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩১ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মোস্তাফিজুর রহমান দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান বিশ্বাসের ছেলে ও ‘বেস্ট টিম সাতক্ষীরা’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন। তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহানাজ পারভিন মিলি জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, গত শুক্রবার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া গ্রামে মাছুরা নামে তালাকপ্রাপ্তা এক নারীর পক্ষ নিয়ে তার (মাছুরা) সাবেক স্বামী সদর উপজেলার পরানদহা গ্রামের ট্রলি চালক আলমগীর হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায় ‘বেস্ট টিম সাতক্ষীরা’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন মোস্তাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহানাজ পারভিন মিলি। এসময় তারা আলমগীরের বাড়ির দরজা, শো-কেস ও আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, সোনার গহনা ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লুটপাট করে। এ ঘটনায় রোববার রাতে সদর থানায় মামলা হয়। এ মামলায় অ্যাডভোকেট মিলি ও তার স্বামী মোস্তাফিজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের নুর আলী সরদারের মেয়ে মাছুরা খাতুনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় পরানদহা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেনের। তবে স্ত্রী মাছুরা খাতুনের ব্যবহার ভালো না হওয়ায় গত ২৫ আগস্ট তাকে আদালতের মাধ্যমে তালাক দেন আলমগীর।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার সকালে মোস্তাফিজুর রহমানকে ডোপ টেস্ট পরীক্ষার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপতাালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে সোমবার সকালে ট্রলিচালক আলমগীরের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শিবপুর ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে পরানদহ মোড়ে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়। মোস্তাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহানাজ পারভীন মিলি ও তাদের সংঘবদ্ধ দলের সদস্য সদর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের আল আমিন, লাবসার মিলন মাস্টার, পুরাতন সাতক্ষীরার পূজা দাস, ফিংড়ির আশরাফুল, শহরের আমতলা এলাকার আবদুস সোবহান, পৌর সদরের রিটু, আমতলার মোসলেমা খাতুন মুন্নি, কলারোয়ার ইমরানসহ এই দলের শতাধিক সদস্য সাতক্ষীরা জেলাসহ খুলনা ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসযোগে সরজমিনে তদন্তের নামে মানুষকে হয়রানি ও চাঁদাবাজি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
জানা যায়, কিছুদিন আগে মোস্তাফিজের ইয়াবা সেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সম্প্রতি ফেসবুকে ‘বেস্ট টিম সাতক্ষীরা’ নামে একটি পেজ খুলে মানবাধিকার রক্ষার নামে তারা সমগ্র সাতক্ষীরায় দাপিয়ে বেড়াতো। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ নড়েচড়ে বসে। গত ২৯ আগস্ট আলমগীর থানায় একটি অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে সদর থানায় মামলা রেকর্ড হয়।